কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদের বাড়িতে বোমা হামলা মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার নির্দেশে রাজধানী ঢাকার শ্যামলীতে একটি হোটেলে বসে এই বোমা হামলার পরিকল্পনা করা হয়। বোমা হামলার মূল টার্গেট ছিলেন এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ বিশ্বাস। আর এ পরিকল্পনায় যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় ওই প্রভাবশালী নেতার প্রিয়ভাজন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামারুল আরেফিন ওরফে কামারুল ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বোমা হামলা মামলার প্রধান আসামি দৌলতপুরের যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ নভেম্বর বেছে নেয়া হয় বোমা হামলার দিন।
ওইদিন বিকালে দুটি মোটরসাইকেলে যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বোমা হামলায় নিহত যুবলীগ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, জামিরুল ইসলাম ওরফে মরু ও মিন্টুকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুরের আমলা সদরপুরে কামারুলের বাড়ি থেকে ২টি শক্তিশালী বোমা নিয়ে আসা হয় এবং জাহিদের নেতৃত্বে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিন রাতেই বোমা হামলা চালানো হয়। কিন্তু
অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে আরিফ আহমেদ। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের পরিকল্পনা ছিল সুদূরপ্রসারী। এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে আরিফ আহমেদ ওইদিনের বোমা হামলায় নিহত হলে মামলার আসামি হতেন দৌলতপুর বিএনপির প্রথম সারির নেতারা। আর শূন্য এ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হতেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ওই প্রভাবশালী নেতাই।
যুবলীগ নেতা জাহিদ হতেন দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান। এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিরপুরের আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিন বোমা হামলার সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছে। বোমা হামলার পর এই আওয়ামী লীগ নেতাকে এরই মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে চারদিনের রিমান্ডে নেয়ার পরদিন (মঙ্গলবার) তার প্রধান দুই সহযোগী জামিরুল ইসলাম মরু ও মিন্টুকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এর মধ্যে গতকাল জাহিদের তিনদিনের রিমান্ড অতিবাহিত হয়।
অন্য দু’জনের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। তারা সবাই এ বোমা হামলার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। বোমা হামলা মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা জাহিদ ও তার দুই সহযোগী মরু এবং মিন্টুকে একসঙ্গে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরও অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান দৌলতপুর থানান ওসি হাসান হাফিজুর রহমান। তবে মামলাটি তদন্তের স্বার্থে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য গোপন করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধান আসামি জাহিদ এবং তার দুই সহযোগী মরু ও মিন্টুর রিমান্ড আগামীকাল শেষ হলে আরও তথ্য জানানো হবে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের ওসি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদের তারাগুনিয়ার বাসভবনে মামলার প্রধান আসামি জাহিদের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন বোমা বহনকারী আহাদুল ইসলাম, যুবলীগ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক ও এমপির কাছে কাজে আসা তারাগুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসমত আলী। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও বোমার স্পিল্গন্টারে সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদ ও স্কুল শিক্ষক হামিদুল ইসলামসহ ৫ জন আহত হন।
লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।