হত্যাকারীর শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, 'কেউ যদি কোনো মানুষকে প্রাণের বিনিময়ে অথবা দেশের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টির কারণ ব্যতীত অন্য কোনো কারণে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করল...' (সূরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)। আরও ইরশাদ হচ্ছে, 'যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম। তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিশম্পাত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন' (সূরা নিসা, আয়াত : ৯৩)। অপর আয়াতে উল্লেখ হয়েছে, 'হে ইমানদারগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি দয়ালু। আর যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য' (সূরা নিসা, আয়াত : ২৯-৩০)। হত্যার জঘন্যতা ও হত্যাকারীর জন্য কঠোর শাস্তির কথা পবিত্র কোরআনের পাশাপাশি হাদিসের কিতাবগুলোতেও বহু হাদিস উল্লেখ হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'কেয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকদ্দমার ফায়সালা হবে, তা হলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত' (বুখারি, মুসলিম)। অর্থাৎ কেয়ামতের দিন হত্যার বিচার করা হবে সবার আগে। তারপর অন্যান্য অপরাধের বিচার করা হবে। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, 'একজন প্রকৃত মুমিন তার দীনের ব্যাপারে পূর্ণ প্রশান্ত থাকে, যে পর্যন্ত সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়' (বুখারি)। অর্থাৎ অবৈধ হত্যার পূর্ব পর্যন্ত প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহর রহমতের মধ্যে বিচরণ করতে থাকে। যখনই কেউ অবৈধ হত্যায় লিপ্ত হয় তার উপর হতে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে অপর একটি হাদিস ইরশাদ হচ্ছে। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, 'কোন মুসলমানকে হত্যা করার চাইতে এই দুনিয়াটি ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে অতি নগণ্য' (তিরমিজি, নাসায়ি)। একজন মুসলমানকে হত্যা করা কত ভয়ঙ্কর অপরাধ তা এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সবার গুনাহ ক্ষমা করলেও হত্যাকারীকে এবং শিরককারীকে ক্ষমা করবেন না। মহান আল্লাহ আমাদের হত্যার জঘন্যতা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।