সিরিয়ার বিরুদ্ধে একপেশে সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেই হুমকি দিয়ে বসল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে এই রুশ প্রেসিডেন্ট মার্কিন মিত্রদেরও সতর্ক করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়া সামরিক অভিযান চালালে তা এক কথায় 'আগ্রাসন'। আর এটা মেনে নিবে না রাশিয়া। বরং সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে সে সম্পর্কে পুতিন বলেন, সিরিয়া সরকার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে এমনটি 'নিশ্চিতভাবে' প্রমাণিত হলে নিরাপত্তা পরিষদ যদি শক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেয় রাশিয়া তা মানবে। তবে জাতিসংঘের পরামর্শ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলা চালায় তবে রাশিয়া সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যুদ্ধে নামবে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাননি।
রাশিয়া পূর্ব ভূমধ্যসাগরে আরও দুটি রণতরী পাঠিয়েছে :
রাশিয়া পূর্ব ভূমধ্যসাগরে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রবাহী জাহাজসহ দুটি রণতরী পাঠিয়েছে। আগামী কয়েক দিনে এই দুই রণতরী সেখানে পৌঁছাবে বলে রুশ নৌবাহিনী সূত্র থেকে জানানো হয়েছে। এই দুই যুদ্ধ জাহাজের একটি কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌ-বহরের এসকর্ট শিপ-স্মেতিভি এবং অন্যটি হলো রুশ বাল্টিক সাগরের ডেস্ট্রয়ার নাতসতোইচিভি। সেমেতলিভ রণতরী ৪৪৬০ টন পানি অপসারণ করতে পারে এবং এ যুদ্ধ জাহাজে কেএইচ-৩৫ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং একে-৭২৬ গোলন্দাজ ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া এ জাহাজে রয়েছে ১৬টি বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫টি ৫৩৩-এমএম টর্পেডো।
গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন পেলেন ওবামা : প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের পরিকল্পনার পক্ষে মার্কিন দুজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদের সমর্থন পেয়েছেন। এরা হলেন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের রিপাবলিকান দলীয় স্পিকার জন বোয়েনার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের নেতা এরিক ক্যান্টর। তবে সংখ্যালঘু ডেমোক্রেট সদস্যদের নেতা ন্যান্সি পেলোসি প্রেসিডেন্টের পরামর্শকে সমর্থন দেওয়ার কথা বললেও সিরিয়া প্রশ্নে আমেরিকার জনগণের সমর্থন আদায়ের প্রয়োজন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে ওয়াশিংটন থেকে বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, মিস্টার ওবামার জন্য এখন সবচাইতে কঠিন কাজটাই বাকি রয়ে গেছে আর সেটা হলো তাকে সিরিয়ায় হামলা চালানো প্রশ্নে আমেরিকার জনগণের সমর্থন আদায় করতে হবে। জাতীয় জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলার বিপক্ষে জনমত ক্রমেই বাড়ছে। প্রতি দশজন আমেরিকানের মধ্যে ছয়জন সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিপক্ষে, এমনকি আইন-প্রণেতারাও এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।
অনুমোদন ছাড়া সিরিয়ায় হামলা নয় : বান কি-মুন : জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বলেছেন, একমাত্র নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ায় হামলার অনুমোদন দিতে পারে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় মুন বলেন, আমি বারবার বলেছি, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুধু আত্দরক্ষার জন্য কিংবা নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন নিয়েই কেবল শক্তি প্রয়োগ আইনসঙ্গত হতে পারে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।