অজয় দাশগুপ্ত:
আগামী নভেম্বরে ভারত সফরের সময় মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ‘সেলামী’ দিতে চলেছেন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই বিশাল অঙ্কের বরাত পেতে চলেছে কয়েকটি মার্কিন বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা। গোটা বিষয়টি চূড়ান্ত করতে রেলমন্ত্রীর তরফে এই মূহুর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মহলের সঙ্গে জরুরী আলোচনায় ব্যস্ত রয়েছেন মমতা-নিযুক্ত রেলের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যানন অমিত মিত্র।
আগামী দেওয়ালীর রাতে এদেশে পা ফেলছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। আগামী ৫ই নভেম্বর রাতে পাঁচদিনের ভারত সফরে তিনি সরাসরি মুম্বাই আসছেন।
মুম্বাইয়ে পরদিন ইউ এস-ইন্ডিয়া বিজনেস অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ সামিট—এ তিনি বক্তব্য রাখবেন। ৮ই নভেম্বর সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ ছাড়াও অমৃতসর স্বর্ণমন্দির ও মুম্বাইয়ে ২৬/১১-র অকুস্থল তাজ হোটেল পরিদর্শন করার কথা তাঁর।
মার্কিন প্রচারমাধ্যমে ওবামার এই ভারত সফরকে রাজনৈতিক ও স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বিশেষ করে আমেরিকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ভারত থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরাট অঙ্কের বরাত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই সফরে, বলে মনে করছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে এখন তীব্র বেকারীর জ্বালায় জর্জরিত আমেরিকা।
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমেরিকায় বেকারীর হার সাড়ে ৯ শতাংশর নিচে নামছেই না। খোদ মার্কিন শ্রম দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৩০কোটি মানুষের দেশ আমেরিকায় ১ কোটি ৪৮ লক্ষ নথিভূক্ত বেকার। শুধু গত সেপ্টেম্বর মাসেই কাজ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৫৯ হাজার জন মার্কিন নাগরিক। কাজ হারানোর ক্ষেত্রে আমেরিকার সংস্থাগুলির বিভিন্ন ধরণের কাজ ভারতে চলে আসা বা আউটসোর্সিং একটা অন্যতম কারণ বলে ওদেশে মনে করা হয়।
গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ওবামার প্রচারের একটা এজেন্ডাই ছিল যে আমেরিকা থেকে ভারতে কাজের আউটসোর্সিং বন্ধ করতে তিনি উদ্যোগ নেবেন।
কিন্তু কিছুদিন আগে মার্কিন সেনেটে অ্যা ন্টি-আউটসোর্সিং বিল তিনি পেশ করলেও তা অনুমোদন করাতে পারেননি। এদিকে নভেম্বর মাসেই মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন প্রচার মাধ্যমের সমীক্ষা অনুযায়ী ১৯৯৪ সালের পর এই প্রথম ওবামার নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ সংখ্যালঘুতে পরিণত হতে চলেছে।
‘পরিবর্তন’-এর স্লোগান দিয়ে ভোটে জেতা বারাক ওবামা এই নাকানি-চোবানি খাওয়া অবস্থায় ভারত সফরে এসে মরিয়াভাবে চাইছেন তাঁর দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মোটা অঙ্কের বরাত এখান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে, যাতে তাঁর মান-মর্যাদা কিছুটা অন্তত বাঁচে। ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রশাসনের বেশ কিছু হোমরা-চোমরা সেদেশের বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থাগুলির হয়ে তদ্বির করতে এখন নয়াদিল্লিতে ঘাঁটি গেঁড়ে বসে আছে।
বিশেষ করে ওবামার নিজের স্টেট ইলিনয়-ভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থাগুলি এই দৌড়ে এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে।
ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির ফলে এদেশে ১০হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রাংশ রপ্তানির জন্য যে দেড় লক্ষ কোটি ডলারের বিশাল বরাত দেওয়া হবে তার মোটা অংশটাই হাতাতে চাইছে আমেরিকার বহুজাতিক সংস্থাগুলি। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ গত সপ্তাহে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চবন জানিয়েছেন, মার্কিন রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের সময় দুটি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের অর্ডার বরাত দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হতে পারে। এমনকি তার বেশিও হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। জানা গেছে, দুই মার্কিন বহুজাতিক জেনারেল ইলেকট্রিক(জি ই) এবং ওয়েষ্টিংহাউস ইলেকট্রিক এই ৪৫হাজার কোটি টাকার বরাত পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে।
এছাড়া প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একগুচ্ছ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এই সফরে। ‘ফাইনান্সিয়াল টাইমস্’ জানাচ্ছে, এর মধ্যে মার্কিন সমরাস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রায় ৫২হাজার কোটি টাকার সামরিক যন্ত্রাংশ ও ১০০টি মালটি-কমব্যাট এয়ারক্রাফট্ কেনার চুক্তি হতে পারে এবং তাহলে সেটা হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক যন্ত্রাংশ কেনার বরাত। শুধু এটাই নয়, আরো বেশ কয়েকটি মোটা অঙ্কের বরাত পেতে চলেছে মার্কিন যুদ্ধাস্ত্রশিল্প।
কিন্তু মার্কিন শিল্পমহল এবং প্রচারমাধ্যমকে অবাক করেছে রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আসা ‘অপ্রত্যাশিত উপহার’। রেলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বরাতের মোটা অংশটাই পেতে চলেছে মার্কিন বহুজাতিকগুলি।
আগামী ১০বছরে ধাপে ধাপে এই বরাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ওবামার ভারত সফরের সময়েই এই বরাত যাতে দেওয়া হয় তার জন্য স্বয়ং রেলমন্ত্রীর নির্দেশে জোর প্রস্তুতি চলছে। রেলমন্ত্রকসূত্রে খবর, বিহারে মার্হোরাতে প্রায় ১৫০০কোটি টাকার ডিজেল রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানার বরাত দেওয়ার বিষয়টি একদম চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ওবামার নিজের স্টেট ইলিনয়-ভিত্তিক বহুজাতিক ইলেকট্রো মোটিভ ডিজেল(ই এম ডি) অথবা জেনারেল ইলেকট্রিক এই বরাত পেতে চলেছে। অন্যদিকে, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের কেন্দ্র মাধেপুরায় ১৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানার বরাত পাওয়ার কথাও আশা করছে মার্কিন শিল্পমহল।
অন্যয তিনটি অ-মার্কিন বহজাতিক সংস্থার সঙ্গে মার্কিন বহুজাতিক জেনারেল ইলেকট্রিক-ও এই কারখানার বরাত পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে। এরাজ্যের ডানকুনিতে ৮৬০কোটি টাকা ব্যয়ে রেলের যন্ত্রাংশ নির্মাণের কারখানা তৈরির বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রেও জেনারেল ইলেকট্রিকই সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে। কাঁচরাপাড়াতে ৫০০কোটি টাকা ব্যয়ে কোচ ফ্যাক্টরি নির্মাণের জন্য যে ছয়টি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে রেলমন্ত্রক, তার মধ্যেও একটি আমেরিকান বহজাতিক সংস্থা রয়েছে বলে জানা গেছে।
রেলের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যাসন অমিত মিত্র মার্কিন শিল্প-বাণিজ্য মহলে জানিয়েছেন, রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাতের সিংহভাগই মার্কিন সংস্থাগুলি পেতে চলেছে। ভারতে বিশাল বেকারীর বোঝা থাকা সত্ত্বেও সবচেয়ে মজার কথা অমিত মিত্র সেখানে বলেছেন যে রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে আসা এই বিরাট অঙ্কের বরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েক হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা নাকি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিতে সাহায্য করবে।
মমতা ব্যানার্জির পক্ষ থেকে আসা এই ‘সারপ্রাইজ গিফ্ট’-এ রীতিমত উল্লসিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম ও শিল্প-বাণিজ্য মহল। তারা খোলাখুলিই বলছে, বছর দুয়েক আগেও ভারতীয় রেলে এই রকম প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের কথা ভাবাও যেত না। বর্তমান রেলমন্ত্রীর তথাকথিত ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’-এর দৌলতেই বিদেশী বহুজাতিক সংস্থাগুলি রেলে রমরমিয়ে ব্যবসা করতে নেমেছেন। শুধু ভুরু কুঁচকেছেন এদেশের ধুঁকতে থাকা ওয়াগন ও রেল ইঞ্জিন নির্মাণ সংস্থার কর্তাব্যাকক্তি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। কিন্তু তাতে কি এসে যায় রেলমন্ত্রীর!
আগামী নভেম্বরে ভারত সফরের সময় মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ‘সেলামী’ দিতে চলেছেন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই বিশাল অঙ্কের বরাত পেতে চলেছে কয়েকটি মার্কিন বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা। গোটা বিষয়টি চূড়ান্ত করতে রেলমন্ত্রীর তরফে এই মূহুর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মহলের সঙ্গে জরুরী আলোচনায় ব্যস্ত রয়েছেন মমতা-নিযুক্ত রেলের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যানন অমিত মিত্র।
আগামী দেওয়ালীর রাতে এদেশে পা ফেলছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। আগামী ৫ই নভেম্বর রাতে পাঁচদিনের ভারত সফরে তিনি সরাসরি মুম্বাই আসছেন। মুম্বাইয়ে পরদিন ইউ এস-ইন্ডিয়া বিজনেস অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ সামিট—এ তিনি বক্তব্য রাখবেন।
৮ই নভেম্বর সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ ছাড়াও অমৃতসর স্বর্ণমন্দির ও মুম্বাইয়ে ২৬/১১-র অকুস্থল তাজ হোটেল পরিদর্শন করার কথা তাঁর।
মার্কিন প্রচারমাধ্যমে ওবামার এই ভারত সফরকে রাজনৈতিক ও স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বিশেষ করে আমেরিকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ভারত থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরাট অঙ্কের বরাত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই সফরে, বলে মনে করছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে এখন তীব্র বেকারীর জ্বালায় জর্জরিত আমেরিকা। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমেরিকায় বেকারীর হার সাড়ে ৯ শতাংশর নিচে নামছেই না।
খোদ মার্কিন শ্রম দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৩০কোটি মানুষের দেশ আমেরিকায় ১ কোটি ৪৮ লক্ষ নথিভূক্ত বেকার। শুধু গত সেপ্টেম্বর মাসেই কাজ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৫৯ হাজার জন মার্কিন নাগরিক। কাজ হারানোর ক্ষেত্রে আমেরিকার সংস্থাগুলির বিভিন্ন ধরণের কাজ ভারতে চলে আসা বা আউটসোর্সিং একটা অন্যতম কারণ বলে ওদেশে মনে করা হয়।
গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ওবামার প্রচারের একটা এজেন্ডাই ছিল যে আমেরিকা থেকে ভারতে কাজের আউটসোর্সিং বন্ধ করতে তিনি উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু কিছুদিন আগে মার্কিন সেনেটে অ্যা ন্টি-আউটসোর্সিং বিল তিনি পেশ করলেও তা অনুমোদন করাতে পারেননি।
এদিকে নভেম্বর মাসেই মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন প্রচার মাধ্যমের সমীক্ষা অনুযায়ী ১৯৯৪ সালের পর এই প্রথম ওবামার নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ সংখ্যালঘুতে পরিণত হতে চলেছে।
‘পরিবর্তন’-এর স্লোগান দিয়ে ভোটে জেতা বারাক ওবামা এই নাকানি-চোবানি খাওয়া অবস্থায় ভারত সফরে এসে মরিয়াভাবে চাইছেন তাঁর দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মোটা অঙ্কের বরাত এখান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে, যাতে তাঁর মান-মর্যাদা কিছুটা অন্তত বাঁচে। ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রশাসনের বেশ কিছু হোমরা-চোমরা সেদেশের বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থাগুলির হয়ে তদ্বির করতে এখন নয়াদিল্লিতে ঘাঁটি গেঁড়ে বসে আছে। বিশেষ করে ওবামার নিজের স্টেট ইলিনয়-ভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থাগুলি এই দৌড়ে এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে।
ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির ফলে এদেশে ১০হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রাংশ রপ্তানির জন্য যে দেড় লক্ষ কোটি ডলারের বিশাল বরাত দেওয়া হবে তার মোটা অংশটাই হাতাতে চাইছে আমেরিকার বহুজাতিক সংস্থাগুলি। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ গত সপ্তাহে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চবন জানিয়েছেন, মার্কিন রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের সময় দুটি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের অর্ডার বরাত দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হতে পারে। এমনকি তার বেশিও হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। জানা গেছে, দুই মার্কিন বহুজাতিক জেনারেল ইলেকট্রিক(জি ই) এবং ওয়েষ্টিংহাউস ইলেকট্রিক এই ৪৫হাজার কোটি টাকার বরাত পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। এছাড়া প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একগুচ্ছ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এই সফরে।
‘ফাইনান্সিয়াল টাইমস্’ জানাচ্ছে, এর মধ্যে মার্কিন সমরাস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রায় ৫২হাজার কোটি টাকার সামরিক যন্ত্রাংশ ও ১০০টি মালটি-কমব্যাট এয়ারক্রাফট্ কেনার চুক্তি হতে পারে এবং তাহলে সেটা হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক যন্ত্রাংশ কেনার বরাত। শুধু এটাই নয়, আরো বেশ কয়েকটি মোটা অঙ্কের বরাত পেতে চলেছে মার্কিন যুদ্ধাস্ত্রশিল্প।
কিন্তু মার্কিন শিল্পমহল এবং প্রচারমাধ্যমকে অবাক করেছে রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আসা ‘অপ্রত্যাশিত উপহার’। রেলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বরাতের মোটা অংশটাই পেতে চলেছে মার্কিন বহুজাতিকগুলি। আগামী ১০বছরে ধাপে ধাপে এই বরাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ওবামার ভারত সফরের সময়েই এই বরাত যাতে দেওয়া হয় তার জন্য স্বয়ং রেলমন্ত্রীর নির্দেশে জোর প্রস্তুতি চলছে। রেলমন্ত্রকসূত্রে খবর, বিহারে মার্হোরাতে প্রায় ১৫০০কোটি টাকার ডিজেল রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানার বরাত দেওয়ার বিষয়টি একদম চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ওবামার নিজের স্টেট ইলিনয়-ভিত্তিক বহুজাতিক ইলেকট্রো মোটিভ ডিজেল(ই এম ডি) অথবা জেনারেল ইলেকট্রিক এই বরাত পেতে চলেছে। অন্যদিকে, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের কেন্দ্র মাধেপুরায় ১৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানার বরাত পাওয়ার কথাও আশা করছে মার্কিন শিল্পমহল। অন্যয তিনটি অ-মার্কিন বহজাতিক সংস্থার সঙ্গে মার্কিন বহুজাতিক জেনারেল ইলেকট্রিক-ও এই কারখানার বরাত পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে।
এরাজ্যের ডানকুনিতে ৮৬০কোটি টাকা ব্যয়ে রেলের যন্ত্রাংশ নির্মাণের কারখানা তৈরির বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রেও জেনারেল ইলেকট্রিকই সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে। কাঁচরাপাড়াতে ৫০০কোটি টাকা ব্যয়ে কোচ ফ্যাক্টরি নির্মাণের জন্য যে ছয়টি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে রেলমন্ত্রক, তার মধ্যেও একটি আমেরিকান বহজাতিক সংস্থা রয়েছে বলে জানা গেছে।
রেলের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যাসন অমিত মিত্র মার্কিন শিল্প-বাণিজ্য মহলে জানিয়েছেন, রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাতের সিংহভাগই মার্কিন সংস্থাগুলি পেতে চলেছে। ভারতে বিশাল বেকারীর বোঝা থাকা সত্ত্বেও সবচেয়ে মজার কথা অমিত মিত্র সেখানে বলেছেন যে রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে আসা এই বিরাট অঙ্কের বরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েক হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা নাকি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিতে সাহায্য করবে।
মমতা ব্যানার্জির পক্ষ থেকে আসা এই ‘সারপ্রাইজ গিফ্ট’-এ রীতিমত উল্লসিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম ও শিল্প-বাণিজ্য মহল।
তারা খোলাখুলিই বলছে, বছর দুয়েক আগেও ভারতীয় রেলে এই রকম প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের কথা ভাবাও যেত না। বর্তমান রেলমন্ত্রীর তথাকথিত ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’-এর দৌলতেই বিদেশী বহুজাতিক সংস্থাগুলি রেলে রমরমিয়ে ব্যবসা করতে নেমেছেন। শুধু ভুরু কুঁচকেছেন এদেশের ধুঁকতে থাকা ওয়াগন ও রেল ইঞ্জিন নির্মাণ সংস্থার কর্তাব্যাকক্তি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। কিন্তু তাতে কি এসে যায় রেলমন্ত্রীর!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।