আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"যে মামলা হয়েছে এটা মিথ্যা মামলা, ভয়ের কিছু নেই", নাটোরের বাবু হত্যায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে মন্ত্রী

ফেসবুক আইডি:নাই

হত্যা ঘটনার পাঁচ দিন পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে আসলে হত্যা করেছে কে? কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাবু হত্যা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল। বাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে বাবুর মেয়ের প্রশ্ন, হত্যা ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, হত্যাকারী যে বা যারাই হোক না কেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু কেন তার এ প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হচ্ছে না।

থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারে বাবুর স্ত্রী মহুয়া নূর কচি বলেছেন, বনপাড়ার স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল আলিমের হত্যা মামলার প্রধান আসামি কে এম জাকির হোসেন হকিস্টিক হাতে অন্য আসামিদের সঙ্গে নিয়ে বাবুর ওপর হামলা চালান। এ সময় বাবুর মাথায় জামিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। পরে আসামি আশরাফুল, বাবলু, জিল্লুর ওরফে জিন্না, সেলিম, হাসেম ও খোকন মোল্লা উপর্যুপরি কুপিয়ে, পিটিয়ে ও দুই পায়ের রগ কেটে বাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। বুধবার বেলা ১১টায় মিছিল শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এমপি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস বলেন, এখানে প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। তিনি ডিবি পুলিশের উদ্দেশে বলেন, "যে মামলা হয়েছে এটা মিথ্যা মামলা।

আর কোনো আসামিকে ধরতে যাবেন না। প্রয়োজনে অভিযুক্তরা আদালতে আত্মসমর্পণ করবে"। অভিযুক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা শান্ত থাকুন। আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ' অভিযুক্ত জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বাবুকে রক্ষার জন্য।

ঘটনার সময় লাঠি হাতে ছিলেন কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাঠি দিয়ে তিনি তার বিক্ষুব্ধ কর্মীদের সরিয়ে দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ওই হত্যার ঘটনার জন্য তিনি দুঃখিত। বাবু যে মারা যাবেন, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেছেন, সরকার ফাঁসির আসামিদের ক্ষমা করে দিচ্ছে বলে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হয়ে চেয়ারম্যান বাবুর মতো উদীয়মান নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান খান বলেন, প্রশাসনকে না জানিয়ে বড়াইগ্রামে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও মিছিল করা ঠিক হয়নি।

এ ছাড়া সেখানে থানা বিএনপির অনুষ্ঠান হলেও থানা সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম উপস্থিত থাকলেন না আর পৌর সভাপতি সানাউল্লাহ বাবু মিছিল বের করে হত্যার শিকার হলেন, এটা খুবই রহস্যজনক। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ শেখ বলেন, ফুটেজ দেখে প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করা হলে তার কোনো আপত্তি নেই। এদিকে বড়াইগ্রাম থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম বলেন, যুবদল নেতা আলিমের খুনি জাকির, খোকন মোল্লা, রাজ্জাকরাই পরিকল্পিতভাবে বাবুকে খুন করেছে। এ হত্যা ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় এক সভায় বলেন, নাটোরের ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ঘটেছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জে এক সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার বিএনপির নেতা-নেত্রীদের জনপ্রিয়তা দেখলেই হয় তাকে জেলে পোরে, নয়তো তাকে হত্যা করে।

বাবু হত্যার বিচার এ দেশের মাটিতে হবেই। উল্লেখ্য, বনপাড়া পৌর বিএনপি শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। দুলু বনপাড়ার কাছাকাছি পেঁৗছে গেছেন এমন খবরে সানাউল্লাহ বাবুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বনপাড়া বাজারে এলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জাকির হোসেন, ছাত্রলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা রাকিব, জামিল, বাবলু দলবল নিয়ে লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ মিছিলে আক্রমণ করে।

এ সময় তারা সানাউল্লাহ বাবুকে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে ফেলে দেয়। এ সময় চারজন সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালানো হয়। নিহত বাবুর বড় মেয়ে পুনম বলেন, 'ভিডিও ফুটেজে কারা আমার বাবাকে আঘাত করেছে তা পরিষ্কার। তারা কোন দলের? প্রধানমন্ত্রী ফুটেজ দেখে দোষীদের গ্রেফতারের যে প্রতিশ্রুতি দেশবাসীকে দিয়েছিলেন, তা পূরণ করছেন না কেন?'

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.