জীবন ,সে তো পদ্ম পাতায় শিশির বিন্দু"
একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে চমৎকার সব ছবি তৈরী হত। ছন্দ হারিয়ে গেল, অরুনোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, সীমানা পেরিয়ে, আয়না ও অবশিষ্ট...কত সুন্দর সুন্দর নাম এবং কত সুন্দর সুন্দর ছবি । কেউ ছবিগুলো দেখুক আর না দেখুক ছবির পোষ্টার দেখে আর নামগুলোর মধ্যে একটা শৈল্পিক ছোঁয়া খুজে পেত। আর তখনকার এমন কোন ছবি ছিলনা যেটাতে দু'একটা রুচিশীল গান থাকতনা। অথচ আমাদের আজকের সিনেমাগুলোর অবস্হা দেখুন।
এখন সিনেমার নাম হয়, "মায়ের আদেশে বউকে চটকনা মারলাম" "উঠাও লুঙ্গি লাগাই চুত্রা পাতা", "কইলজার মধ্যে ধড়ফড় ধড়ফড় করে" এ ধরনের আজব কিসিমের বাহারী নাম। আর সবগুলার নায়ক ঢাকাইয়া সিনেমার হার্টথ্রব শাকিব খান। যিনি নায়কের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত লিপস্টিক "REVLON" এর বাংলাদেশী ব্র্যাণ্ড এম্বাসেডার। ভাবলে আশ্চর্য্য হই, যে রাজ্জাক একসময়, "অনন্ত প্রেম, চাঁপা ডাঙ্গার বউ,অভিযানের মত ছবি বানিয়েছেন, তিনি এখন তৈরী করেন "বাবা কেন চাকর"...যে সোহেল রানা একসময় "ওরা এগারো জন' ছবি প্রযোজনার পাশাপাশি তৈরী করেছেন 'জীবন নৌকা, এপার ওপার এর মত জীবন ঘনিষ্ট ছবি, তার ছবির নাম হয় এখন "খাইছে তোরে"। তো, এগুলাকে সিনেমা বলব ! না, ছিঃনেমা বলব বুঝে উঠতে পারিনা।
আর এসব সিনেমার গানগুলোর কথা কি আর বলব। "ফাইট্যা যায় ফাইট্যা যায়," আমার গাছে জাম্বুরাটা রসে টসটস করে"...এ ধরনের অশ্লীল কথার গানের ছড়াছড়ি। বলা বাহুল্য এসব গানের একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী মমতাজ । যিনি শাকিব খানের মত অডিও ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টার। ইদানিং আবার একশ্রেনীর তরুন নির্মাতা কিছু কিছু অন্যধরনের ছবি তৈরী করেন।
বিজ্ঞজনদের ভাষায় যেগুলা বিকল্প ধারার ছবি। যেমন, থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার, জাগো,কিত্তনখোলা ইত্যাদি। তাদের ছবিগুলো ভাল, তবে সেগুলোকে ঠিক সিনেমা ক্যাটাগরীতে ফেলা যায়না আবার টেলিফিল্মও বলা যায়না। তবে ভাল কিছু সৃষ্টির প্রতি তারা যে আন্তরিক, এটার জন্য সাধুবাদ জানাতে হয়। যাইহোক,মেঘে মেঘে অনেক বেলা গড়িয়ে গেল।
সেই "মুখ ও মুখোশ" থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ঢাকাইয়া সিনেমার বয়স কিন্তু কম হয় নাই। এই লম্বা সময়ে আমাদের সিনেমার অবস্হান যেখানে থাকার কথা ছিল সেখানে তো পৌছাতে পারেই নাই বরং পুরো শিল্পটার মধ্যেই যেন পচন ধরে গেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।