ক্লাস এইট নাইন সেভেন এ মতিঝিল কলোনী মাঠে ক্রিকেট খেলতাম আমরা ছুটিতে এসে। প্রতিদিন আমরা যেখানে ওয়ালে স্ট্যাম্প এর দাগ কেটে রাখতাম তার পাশেই সিলি পয়েণ্ট এ ফিল্ডিং করতো এক ময়লা বাবা। জগতের যত উদাসীনতা তার চোখে মুখে, তার কোনো ভাবান্তর নেই আশেপাশে কি হল না হল। ময়লা বাবার চেয়ে বড় উদাসীন ছিলাম মনে হয় আমরা । বেচারা এত কাছাকাছি বসে বসে ঝিমাতো,অথচ তাকে বিন্দুমাত্র বেল না দিয়ে আমরা খেলেই যাচ্ছি ,খেলেই যাচ্ছি।
মাঝে মাঝে দুই একটা বল ও গিয়ে লাগতো ময়লা বাবার গায়ে । তাতে বলের শাইন নষ্ট হত কিনা জানি না কিন্তু ময়লা বাবার কোনো ভ্রুক্ষেপ হতোনা কখনও । ময়লা বাবার জগতে কি খেলা করে জানতে ইচ্ছা করে নাই কখনো।
ফ্লিকারে আরেকবার আরেকটা ময়লা বাবার ছবি দেখলাম। কত ছবিই তো দেখি প্রতিদিন।
ঐ ছবিটাও সাদামাটা একটা প্রোট্রেট। ছবিটা মনে দাগ কেটেছিল ক্যাপশন এর জন্যে। ফটোগ্রাফার ভাই ময়লা বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন , “আপনি ময়লা বাবা কেন আপনার ঘর নাই ? ফ্যামিলি নাই ?” ময়লা বাবারা ভাল কথা বলতে পারে। কারন তারা কথা কম বলে। “ফ্যামিলি? I am my family !” বিশুদ্ধ ইংরেজিতে ! ময়লা বাবা যে কারনে ময়লা বাবা তা উদঘাটিত করার সাহস ফটোগ্রাফার এর ছিলনা।
বাকি গল্পটা জানা ছিল আমার, গল্পের বাকিটা ছিল ঐ ছবিটাতেই ময়লা বাবার চোখে।
বিজ্ঞানী সফদর আলী ঢাকায় বসে বসে চিঠিতে যোগাযোগ করেন তার বন্ধুর সাথে আর আমি কোনো এক ঈদের দিনে উত্তরা থেকে বাসের দুরত্ব হেঁটে হেঁটে পাড়ি দিয়ে আমার বন্ধুর বাসায় যাই। পথে এক ময়লা বাবার সাথে আবার ভাব বিনিময়। ময়লা বাবাদের সংখ্যা কেবল বেড়েই চলছে আজকাল। ময়লা বাবা হে হে করতে করতে জানতে চায়, ‘রোযা শেষ ?’
‘হ্যাঁ, রোযা শেষ।
কিন্তু ঈদ কিনা জানিনা’। ময়লা বাবাদের ময়লা আর দূর হয়না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।