আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামের দৃষ্টিতে শিশু অধিকার

শিশু অধিকারের ব্যাপারে আধুনিক যুগের মানুষ বেশ সচেতন। এ জন্য জাতিসংঘের শিশু সনদ রয়েছে। বিভিন্ন দেশ সাংবিধানিকভাবে শিশুদের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের কথা ঘোষণা করেছে। শিশু অধিকারের প্রতি এ সচেতনতা সাম্প্রতিককালের। মূলত বিংশ শতাব্দীতে এসে আধুনিক দুনিয়া শিশু অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা দেখাচ্ছে। কিন্তু আজ থেকে ১৪শ' বছর আগে আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুর অধিকার সংরক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বলেছেন, 'যে ব্যক্তি বড়দের সম্মান করে না, শিশুদের স্নেহ করে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।' (ইবনি হিব্বান)

শিশু অধিকার সংরক্ষণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস তাৎপর্যের দাবিদার। তিনি বলেছেন, 'পিতার ওপর সন্তানের অধিকার হলো তাকে লেখাপড়া শিক্ষা দেওয়া, সাঁতার শিক্ষা দেওয়া, তীর নিক্ষেপ শিক্ষা দেওয়া এবং ভালো ও পবিত্র খাদ্য খাওয়ানো।' (বায়হাকি)

উপরোক্ত হাদিসে শিশুর পড়াশোনা করানোকে তার অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার সামর্থ্য গড়ে তোলার জন্য সাঁতার ও তীর নিক্ষেপ শিক্ষাকে অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। হালাল ও উত্তম খাবার খাওয়ার সুযোগকে শিশু অধিকারের অন্তর্গত করা হয়েছে। সেই প্রাচীন যুগে যখন কন্যা সন্তানকে উপেক্ষা করা হতো, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছেলে ও মেয়ে সন্তানদের মধ্যে বৈষম্য না দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'তোমরা তোমাদের সন্তানদের কিছু দেওয়ার ক্ষেত্রে সমতা বজায় রেখ। আমি যদি কাউকে কারোর ওপর প্রাধান্য দিতাম তবে মেয়েদেরকে (ছেলের ওপরে) প্রাধান্য দিতাম।' (তবারানি)

বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসেও সন্তানদের সমান চোখে দেখার তাগিদ দিয়ে বলা হয়েছে, 'তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে সমতা বজায় রেখ।' রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের যুগে আরবে কন্যা সন্তানদের জন্মদানকে অনেক ক্ষেত্রে অবমাননার চোখে দেখা হতো এবং জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। ইসলামী দৃষ্টিতে শুধু সন্তান হত্যাই নয়, ভ্রূণ হত্যাকেও মহাপাপ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সূরা বনি ইসরাইলের ৩১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে_ 'আর নিজেদের সন্তানদের দারিদ্র্যের আশঙ্কায় হত্যা কর না। আমি তাদের রিজিক দেই এবং তোমাদেরকেও, বস্তুত তাদের হত্যা করা একটি অতি বড় পাপ।' আল্লাহ শিশুদের প্রতি আমাদের স্নেহশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.