আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির জন্য দুই নেত্রীই দা

সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির জন্য দুই নেত্রীকে দায়ী করে বলেছেন, দেশকে নিয়ে কেউই যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে না। দেশকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ছিনিমিনি খেলা চলবে না। এই দেশটা কারও নিজস্ব সম্পত্তি নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে অক্টোবর-নভেম্বর থেকে দেশব্যাপী নতুন আন্দোলনের ডাকও দেন তিনি।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত 'বর্তমান সংকট নিরসনে করণীয়' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক আইজিপি এ এস এম শাহজাহান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ। ড. কামাল হোসেন বলেন, বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠানে সরকারদলীয় ব্যক্তি নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রকে ধ্বংসের নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী হয়তো '৭৫, '৮৬, '৮৮, '৯৬ ও ২০০৬ সালের নির্বাচনের কথা ভুলে গেছেন। সেজন্য তিনি এ ধরনের নির্বাচনের কথা ভাবছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এর আগেও সংকট দেখা দিয়েছে। তার সমাধানে আমরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো বিদেশি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয়নি। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর এ বিষয়ে বিদেশিদের ঘোরাঘুরি আমাদের জন্য লজ্জাকর। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকট দূর করতে সব শ্রেণী পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারকে বলতে হবে রাষ্ট্রের ভালোর জন্য আমরা তোমাদের ভোট দিয়েছি, ধ্বংস করার জন্য নয়। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে আমরা রাষ্ট্রের মালিক, আমরা আদেশ দিচ্ছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সরকার দেশের মানুষকে বোকা ভাবে তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চান, কিন্তু জনগণ বোকা নয়। তার প্রমাণ জনগণ ফেলানী হত্যার বিচারের রায় প্রত্যাখ্যান করে দেখিয়ে দিয়েছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করলেও নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না।

হাফিজউদ্দিন খান অভিযোগ করেন, যে দল ক্ষমতায় যায় সে দলই প্রশাসনে দলীয়করণ করে। সেনাবাহিনীকে খুশি করে। দুই দলের কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক যে সংকট তৈরি হয়েছে, এটি একটি সাংবিধানিক সংকট। কিন্তু সাংবিধানিক স্ববিরোধিতা নিয়ে এ সংকটের সমাধান হতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রায় কখনো দ্ব্যর্থবোধক হয় না, রায় হতে হবে একাত্দবোধক। তিনি একটা পর্যবেক্ষণ দিলেন, আর সরকার তড়িঘড়ি করে ১৫তম সংশোধনী করল। এতে সংবিধান স্ববিরোধী হয়ে গেছে। একই সঙ্গে এখানে রাষ্ট্রধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। স্ববিরোধী দলিল দিয়ে রাষ্ট্রের জীবনাচরণ চলা কঠিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি নেই, আছে ক্ষমতার নীতি। রাজনীতিবিদদের ওপর আস্থার জায়গা নেই। এ কারণে নির্বাচন কমিশনের ওপরও কারও আস্থা নেই। দুটো হাতি যখন লড়াই করে তখন তাদের লড়াইয়ে পিষ্ট হয় ঘাস। ঠিক তেমনি বাংলাদেশের প্রধান দুই দলের নেত্রীর লড়াইয়ে জনগণ পিষ্ট হচ্ছে।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দুই নেত্রী যা বলেন, দলের নেতাদের কাছে সেটাই সংবিধান হয়ে যায়। সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে, তারা কী চায়। পীর-ফকিরের মাজারের লোকের মতো আধ্যাত্দিক কথা বললে চলবে না। জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি স্থায়ী পদ্ধতি দরকার। সে ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দিয়েই নির্বাচন হওয়া উচিত।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.