চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের পর এবার মহানগর ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরাও রাজপথে নেমেছে। অর্ধ শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেছে। ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল নিজেদের পদের জন্য রাজপথ কিংবা গাড়ি ভাঙচুর নিয়মেই পরিণত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও রাস্তা আটক করে সমাবেশ করেছে পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে জামালখান সড়কে অবরোধ করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান নেন। এতে এমইএস কলেজ, কমার্স কলেজ, সিটি কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীদের এই বিক্ষোভে অংশ নেন। এ জামালখান সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গত ২৪ জুলাই একই ঘটনা ঘটেছে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পরই। জানা যায়, ঘোষিত চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীদের এ ছাড়াও মহানগর ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক, সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিনসহ কয়েকজন অংশ নেন। বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারী এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সৌমেন বড়ুয়া, পাঁচলাইশের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আতিক ও ফয়সাল বাপ্পী বলেন, দীর্ঘদিন রাজপথে থেকে প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছে। এ কমিটি টাকার বিনিময়ে গঠনতন্ত্র না মেনে ঘোষণা করেছে এবং জ্যেষ্ঠতাও রক্ষা করেনি। উল্লেখ্য, প্রায় দশ বছর পর বুধবার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ২৪ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। নব ঘোষিত কমিটির সভাপতি ইমরান উদ্দিন হিমু নগরীর সিটি কলেজ ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি এমইএস কলেজেরে নেতা। এমইএস কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতি কয়েকটি পক্ষে বিভক্ত। এ ছাড়া আ জ ম নাছিরের অনুসারী ছাত্রলীগের কেউ মূলপদে স্থান পাননি।
এদিকে বিভিন্ন ঘটনায় বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে সাংবাদিক নির্যাতনকারী ও বিভিন্ন ঘটনায় বহিষ্কৃতদের স্থান রয়েছে বলে একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ১ বছরের জন্য বহিষ্কৃত আসফিকুর রেজা সাগরকে কার্যকরী সদস্য, মহিতোষ রায় টিটুকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ৬ মাসের বহিষ্কৃত তাইমুর রহমান রাসেলকে মীর মোশারফ হলের সভাপতি করা হয়েছে। এ ছাড়াও অস্ত্র রাখার দায়ে বহিষ্কৃত মো. আবদুল মাজেদ সিমান্তকে বিতর্ক ও নাট্য বিষয়ক সম্পাদকসহ আরও বিভিন্ন ঘটনায় বিতর্কিত প্রায় ২০ জনকে পদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পদ না পেয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। বিবাহিত ও বিতর্কিতদের এ কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, কমিটিতে সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতা-কর্মীদের পদ না দিয়ে বিতর্কিতদের পদ দেওয়া হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও কমিটি ঘোষণা করায় ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল বলেন, আত্দত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিতদের কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাহমুদুর রহমান জনিকে সভাপতি ও রাজিব আহমেদ রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।