তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____
শুক্রবার বিকাল পৌনে ৪টার আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড। সিএনজি অটোরিকশায় অলস ভঙ্গিতে বসে কয়েকজন চালক। আর এক যাত্রী অটোরিকশার জন্য ছুটছেন তাদের কাছে; যাবেন গাবতলী বাসস্ট্যান্ড। কিন্তু তিনশ' টাকার কমে কেউই যেতে রাজি না।
তখন এক ফাঁকে কথা হয় ইফতেখার আহমেদ নামের ওই যাত্রীর সঙ্গে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "কিচ্ছু করার নাই ভাই। দ্বিগুনের বেশি ভাড়া চাইছে। আমাকে যে যেতেই হবে। তাই রাজি হয়ে গেলাম। "
বৃহস্পতি ও শুক্রবার সারাদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে এমন বিড়ম্বনার চিত্র মিলেছে অনেক।
শুধু এ দু'দিন নয় রমজানের শুরু থেকেই সিএনজি অটোরিকশা চালকদের ইচ্ছামতো চলছে তাদের গাড়ির চাকা।
যাত্রীদের অভিযোগ, চালকরা কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে অশালীন কথাও শুনতে হচ্ছে। পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়।
যাত্রীদের ভাষায় এক কথায় 'বেপরোয়া' হয়ে উঠেছে চালকরা।
ভাড়া নিয়ে চালকদের এমন আচরণের কারণ সম্পর্কে বৃহস্পতিবার সকালে কলাবাগান এলাকায় কথা হয় আবুল কাশেম নামের একজন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, রাজধানীতে এবার রমজানের শুরুর দিকে পুরানো গাড়ি আটক করার প্রভাব পড়েছে যাত্রীদের ওপর। তারা বাধ্য হয়ে বিকল্প যান হিসেবে সিএনজি অটোরিকশা বা ট্যাক্সিক্যাবের দিকে ঝুঁকেছেন। আর চাহিদা বেশি হওয়ায় ফায়দা লুটছে চালকরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে প্রায় ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে।
যা রাজধানীর জনসংখ্যার অনুপাতে খুবই কম।
বৃহস্পতিবার রাতে নীলক্ষেত এলাকায় নজরুল আফসার নামের এক যাত্রী অভিযোগ করে জানান, আগের রাত সাড়ে ১১টার দিকে নীলক্ষেত থেকে শনিরআখড়া যেতে কয়েকটি অটোরিকশার চালককে অনুরোধ করলে তারা দ্বিগুণের বেশি ভাড়া দাবি করে। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই তা দিয়ে গন্তব্য যেতে হয় তাকে।
বাড়তি ভাড়া নিয়ে চালকদের কিছু বলতে চাইলে উল্টো নানা ধরনের অশালীন কথা শুনতে হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ নিয়ে শুক্রবার দুপুরে শাহবাগ এলাকার অটোরিকশা চালক মোতালেব মিয়ার সঙ্গে কথা হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকে। এছাড়া যানজটে আটকা পড়লে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়েই যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে হয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অটোরিকশা চালকরা যে শুধু বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন তা নয়। এ নিয়ে প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে তাদের নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে।
কখনো কখনো যাত্রীরা চালককে নাজেহাল করছে। আবার সুযোগ বুঝে চালকরাও যাত্রী নাজেহাল করছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ টি এম নাজমুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভাড়া আদায়ের একটি নীতিমালা অচিরেই পাস হবে। বিআরটিএ এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। নীতিমালাটি পাস হলে এ ধরনের সমস্যা থাকবে না।
মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পূর্ব) এ কে এম আওলাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা হলে সমস্যার সমাধান করা যেত। ভাড়া আদায় নীতিমালাটি হলে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিতে পারতো না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএইচএ/এজে/১১০০ ঘ.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।