মিথ্যার পতন সন্নিকটে..........
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ''তোমরা যদি বড় বড় নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে বিরত থাক তাহলে আমি তোমাদের (অন্যান্য) গুনাহ মাফ করে দেবো এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাবো৷'' (৪/সূরা আন্ নিসাঃ৩১)
তাই, আসুন জেনে নেই বড় বড় পাপ বা গুনাহ কোনগুলো : (১ম কিস্তি)
(মূল: ইমাম আয্ যাহাবী রহ.)
১. আল্লাহর অস্তিত্ব, গুণাবলী, ক্ষমতা ও অধিকারে কাউকে বা কোন কিছুকে শরীক করা
২. (বৈধ কারণ ছাড়া কাউকে) হত্যা বা খুন করা
৩. জাদু করা (বিশ্লেষণ জানা প্রয়োজন)
৪. নামাযে শৈথিল্য প্রদর্শন করা
৫. (সঠিকভাবে হিসেব করে) যাকাত না দেওয়া
৬. বিনা ওযরে রমযানের রোযা ভঙ্গ করা (এবং ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও তার পরের তিনদিন রোযা রাখা)
৭. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্জ না করা
৮. আত্মহত্যা করা
৯. পিতামাতার অবাধ্য হওয়া ও পিতামাতাকে কষ্ট দেওয়া (তবে, পিতামাতা ইসলামবিরোধী তথা অন্যায় কাজ করার নির্দেশ দিলে তা মানা যাবে না৷)
১০. (শরীয়তসম্মত কারণ ছাড়া) রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনকে পরিত্যাগ করা
১১. যিনা, ব্যভিচার বা ধর্ষণ করা
১২. সমকামিতা ও যৌনবিকৃতির অধিকারী হওয়া৷ যৌনবিকৃতির উদাহরণ : পুং মৈথুন বা হস্তমৈথুন, কোন জন্তুর সাথে যৌনাচার, পরনারীর সাথে যৌনাচার, স্বল্পকালীন মেয়াদভিত্তিক (মুতআ) বিয়ে করে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম, পায়ুপথে যৌনাচার ইত্যাদি৷
১৩. সুদের আদান-প্রদান করা (এছাড়া, সুদের বিষয় বা হিসেব লেখা এবং সুদের সাক্ষী হওয়াও কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত)
১৪. ইয়াতীমের সম্পত্তি আত্মসাত্ করা ও তার উপর যুলুম করা
১৫. আল্লাহ ও রাসূলের উপর মিথ্যা আরোপ করা (ও নিজের কথাকে তাঁদের কথা বলে চালিয়ে দেওয়া)
১৬. ইসলামের পথে (হক ও বাতিলের দ্বন্দ্বে) যুদ্ধ-জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা
১৭. শাসক কর্তৃক শাসিতের উপর যুলুম ও প্রতারণা করা এবং এ কাজে তাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করা
১৮. অহংকার করা
১৯. মিথ্যা সাক্ষ্য দান করা ও (সুবিচারের স্বার্থে) সত্য সাক্ষ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানানো
২০. মদপান করা (অনেক আলেমের মতে ধুমপান করায় অপচয়, শরীরের ক্ষতি ইত্যাদি হওয়ায় তাও কবীরা গুনাহ৷ ভিন্নমত হলোঃ ধুমপান হারামের কাছাকাছি৷)
২১. জুয়া খেলা
২২. সৎ পুরুষ ও সতী নারীর বিরুদ্ধে অপবাদ রটানো
২৩. রাষ্ট্রীয় (তথা জনগণের) সম্পদ আত্মসাত্ করা
২৪. চুরি করা
২৫. ডাকাতি করা
২৬. মিথ্যা শপথ করা (ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা)
২৭. যুলুম বা অত্যাচার করা
২৮. জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা
২৯. হারাম খাদ্য (যেমনঃ শুয়োর ও মৃত প্রাণীর গোশত) খাওয়া, হারাম পণ্যের ব্যবসা করা (যেমনঃ শুয়োর, মদ ইত্যাদি) ও যে কোনো হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও ভোগ-দখল করা
৩০. মিথ্যা বলা
৩১. বিচার কাজে অসততা ও দুর্নীতি
৩২. ঘুষ খাওয়া (ও ঘুষ লেন-দেনের মাধ্যম হওয়া)
৩৩. নারীর সাথে পুরুষের এবং পুরুষের সাথে নারীর সাদৃশ্যপূর্ণ বেশভূষা গ্রহণ
৩৪. নিজ পরিবারের মধ্যে অশ্লীলতা ও পাপাচারের প্রশ্রয় দান
৩৫. তালাকপ্রাপ্তা নারীর তাহশীল (অর্থাত্ বিনা সহবাসে তালাক দেওয়ার শর্তে বিয়ে করা, যেন তালাক প্রাপ্তা নারী তার পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হয়)
৩৬. প্রস্রাব ও পায়খানা থেকে যথাযথভাবে পবিত্রতা অর্জন না করা
৩৭. রিয়া অর্থাৎ অন্যকে দেখানোর জন্য সৎ কাজ করা (ও নেক কাজ করে সে কারণে প্রশংসা কামনা করা)
৩৮. নিছক দুনিয়ার উদ্দেশ্যে বা একান্ত পার্থিব স্বার্থে দ্বীনি জ্ঞান বা বিদ্যা অর্জন করা, ইলম গোপন করা এবং ইসলামের জ্ঞান অর্জন করে এর ফরয বিষয়গুলোর আমল না করা
৩৯. খিয়ানাত বা বিশ্বাসঘাতকতা
৪০. নিজের কৃত দানখয়রাত ও অনুগ্রহের দোহাই দেয়া, দান করে খোটা দেয়া ও নিজের দানের কথা প্রচার করে বেড়ানো
৪১. অদৃষ্ট বা তাকদীরকে অস্বীকার করা ও এর উপর অসন্তুষ্ট হওয়া
৪২. মানুষের গোপনীয় দোষ জানার চেষ্টা করা
৪৩. নামীমা বা চোখলখুরি (একের অপরাধ অন্যের কাছে ফাঁস করে পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করা)
৪৪. বিনা অপরাধে কোনো মুসলমানকে অভিশাপ ও গালি দেওয়া
৪৫. ওয়াদা লঙ্ঘন করা
৪৬. ভবিষ্যতবক্তা ও জ্যেতিষীর কথা বিশ্বাস করা, পাখির সাহায্যে শুভ-অশুভ লণ গ্রহণ করা, জাগতিক অবস্থা জানার জন্য নত্রের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা, হস্তরেখার সাহায্যে ভাল-মন্দ জানার চেষ্টা করা, তারকার অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যত বর্ণনাকারীর নিকট গমন করা ইত্যাদি
৪৭. স্বামী স্ত্রীর পরস্পরের অধিকার লংঘন
৪৮. প্রাণীর প্রতিকৃতি বা ছবি আঁকা, ছাপানো, খোদাই করা, টানানো ও সংরক্ষণ করা, প্রাণীর ছবি লাগানো- যদিও ঐ রকম প্রাণীর অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই (যেমন পাখা বিশিষ্ট ঘোড়ার ছবি) (এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন)
৪৯. বিপদে, দুঃখে বা শোকাবহ ঘটনায় উচ্চস্বরে কান্নাকাটি, বুক বা কপাল চাপরানো, পোশাক ছিঁড়ে ফেলা, মাথা কামানো, চুল উপড়ানো এবং নিজের মৃতু্ ও ধ্বংস কামনা করা ইত্যাদি
৫০. বিদ্রোহ, ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিকতা প্রদর্শন, উপযুক্ত কারণ ছাড়া ইমাম, আমীর বা সমকালীন ইসলামী নেতার (যিনি রাষ্ট্রীয়, দলীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান তার) বিরুদ্ধাচরণ করা, পার্থিব স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ায় আমীরুল মু'মিনীন অথবা সমকালীন ইসলামী নেতার সাথে কৃত বাইয়াত বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করা
৫১. দুর্বল শ্রেণী, দাসদাসী, চাকর-চাকরানী ও জীবজন্তুর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা
৫২. মুসলিম বা অমুসলিম প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া, তার গোপনীয়তা ক্ষুন্ন করে ঘরের ভেতর উকি মারা অথবা এমনভাবে গৃহ নির্মাণ করা যেন তার কষ্ট হয়
৫৩. মুসলমানদেরকে উত্যক্ত করা, গালি দেওয়া ও তাদের পরস্পরের মধ্যে গোলযোগ, বিভেদ, ফেরকাবাজি, কাদা ছোঁড়াছুড়ি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি করা
৫৪. সৎ ও আল্লাহভীরু বান্দাদের কষ্ট দেওয়া, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানো, তাদের অপমান করা ও তাদেরকে অপছন্দ করা
৫৫. (পুরুষদের ক্ষেত্রে) দাম্ভিকতা ও আভিজাত্য প্রদর্শনার্থে টাখনুর নিচ পর্যন্ত পোশাক পরা
৫৬. (পুরুষ কর্তৃক) স্বর্ণ ও রেশম ব্যবহার করা
৫৭. (ইসলামের দৃষ্টিতে) বৈধ কর্তৃপক্ষের অবাধ্য হওয়া ও বৈধ আনুগত্যের বন্ধন একতরফাভাবে ছিন্ন করা
৫৮. আল্লাহ ছাড়া আর কারো নামে জন্তু জবাই করা
৫৯. জেনে-শুনে নিজেকে নিজের পিতা-মাতা ছাড়া অন্যে কারোর সন্তান বলে পরিচয় দেওয়া
৬০. জেনেশুনে অন্যায়ের পক্ষে তর্ক ও ঝগড়া করা
৬১. উদ্বৃত্ত পানি অন্যকে না দেওয়া (বিশ্লেষণ জানা প্রয়োজন)
৬২. মাপে ও ওজনে কম দেওয়া (অর্থাৎ ঠকানো)
৬৩. আল্লাহর আযাব ও গযব সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হওয়া
৬৪. আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া
৬৫. বিনা ওযরে জামায়াতে নামায ত্যাগ করা বা একাকী নামায পড়ায় অভ্যস্থ হওয়া (পুরুষদের ক্ষেত্রে) এবং বিনা ওযরে সময় আসার পূর্বে নামায পড়া কিংবা সময় চলে যাওয়ার পর নামাযের কাযা করা (পুরষ-নারী সকলের ক্ষেত্রে)
৬৬. ওসিয়তের মাধ্যমে কোন উত্তরাধিকারীর ক্ষতি সাধন করা বা ভুল অসীয়ত করে কারো হক নষ্ট করা ও এক তৃতীয়াংশ সম্পদের অধিক ওসীয়ত করা
৬৭. ধোঁকাবাজি, ছলচাতুরী ও ষড়যন্ত্র করা
৬৮. কৃপণতা, অপচয় ও অপব্যয় (তথা অবৈধ ও বিশৃংখল ব্যয়) করা
৬৯. মুসলমানদের গোপনীয় বিষয় শত্রুর নিকট ফাঁস করা
৭০. কোনো সাহাবীকে গালি দেওয়া (চলবে- ইনশাআল্লাহ)
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।