ভারতীয় শাসকগোষ্টীর ট্রানজিটের মতো এমন অন্যায় চাওয়া আজ বাস্তবতা এবং দেশের 'সচেতন' অংশ যেন নির্বাক। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কে গালিগালাজ করে কি লাভ। দেশের লোকজন যদি চুপচাপ থাকে, কত টাকা আয় রোজগার হবে তার হিসাব-কিতাব, স্বচ্ছতা, বা নিজের ভাগেরটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তাহলে হাসিনা-খালেদার কি এসে যায়! তাদের ভবিষ্যৎ তো ফকফকা। তাদের বংশধর রাজা-রাণী হতে না পারলে লন্ডন নিউইয়র্কে থাকবে বহাল তবিয়তে। আর আামাদের জন্য আছে বা থাকবে ৩০ লক্ষ অভুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক, ঢাকা শহরের একাংশে ক্রোমিয়াম দূষণের চামড়া কারখানা, পরিবেশের জন্য ভয়াবহ শত শত ওষুধ বা টেক্সটাইল কারখানা, শিপবিল্ডিং বা ব্রেকিং কারখানা।
আরও চটকদার মানবসম্পদ রপ্তানির নামে ‘আধুনিক দাস-দাসী বা গুর্খা’ সরবরাহ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।
আঞ্চলিক সহযোগিতা নাকি এখনকার বাস্তবতা। খুব ভাল কথা। এতো সবসময়ের জন্য দরকারি। আমাদের আশেপাশে যারা থাকে সে সমস্ত মানুষের কথাই নিশ্চয়ই সর্বাগ্রে ভাবা দরকার।
আগরতলায় বসবাসকারী কিছু বাঙগালির কথা বাদ দিলে বাংলার পূর্বে সেভেন সিস্টারের জনগণ কি চায় এই ট্রানজিট? তারা মুক্তি সংগ্রামে লিপ্ত। সেনাবাহিনী দ্বারা পুরো এলাকা দখলে রেখেছে ভারতীয় শাসকরা। এমনই অবস্থা এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যেতে আর্মির এসকর্ট লাগে। কোন উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। ঘন্টার পর ঘন্টা মাথার চুল টানলেও একটা ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মনে পড়ে না।
কেন এই দশা? এ ভারত তাহলে আমরা যে ভারত জুজুর ভয় পাই তা নয়। এখানকার জনগণের সাথে ভাল সম্পর্ক নিশ্চয়ই আমাদের দরকার।
বাংলাদেশের উত্তরে দার্জিলিং তারপর নেপাল, চীন। দার্জিলিংয়ের মানুষ গুর্খাল্যাণ্ড আন্দোলন করছে দীর্ঘদিন ধরে, তাছাড়া নকশালবাড়ির আন্দোলন নিশ্চয়ই মনে করিয়ে দেয় এখানকার মানুষ আমাদেরকে চেপে ধরে নি। আর পশ্চিমের পশ্চিমবঙ্গ ভারতে জোড়েশোড়ে চলা মাওবাদী আন্দোলনের এলাকা।
এরা তো আমাদেরকে আঁকড়ে ধরা ভারত নয়। তাহলে আমরা কাকে ডরাই বা কাকে ডরানোর কথা বলা হয়? সাধারণ চোখে তাকালেও বুঝা যায় আমরা ভারতীয় শাসকদের থাবার ভিতরে না।
ট্রানজিট দেয়ার ফলে এই প্রথমবারের মতো আমরা আমাদের আশেপাশের মুক্তিকামী মানুষের সাথে বেঈমানী করে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী থাবায় ঢুকলাম। সেভেন সিস্টারকে সিকিম বানাতে চায় ভারত, কেউ কিছু জানবে না, সবকিছু চুপচাপ থাকবে, ছড়িয়ে পড়বে জলপাই রংয়ের শান্তি। লক্ষ লক্ষ মুক্তিকামী শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে গড়া বাংলার উপর দিয়ে যাবে ভারতীয় সামরিক-বেসামরিক শাসকগোষ্ঠীর রশদ।
যারা টুঁটি চেপে ধরবে সেভেন সিস্টারের মুক্তিকামী মানুষদের।
আর আমরা জনগণ আ. লী. বা বা. জা. দলের কাছে দেশের মেন্ডেট দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকি কিভাবে!?
লেখা - ১১ আগস্ট ২০১০।
এডিট - ৬ জুলাই ২০১১।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।