আমার কি আছে , অথবা কি ছিল,ফুলের ভিতরে -বীজের ভিতরে যেমন আগুন.....
কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি সামু -তে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে খুব বেশী আক্রমনাত্মক আলোচনা - বিতর্ক হচ্ছে । সুস্থ বিতর্ক একজন মানুষকে সুযোগ করে দেয় নিজের জানা-বোঝাকে অনেকের জানা-বোঝার সাথে মিলিযে নিয়ে -যাচাই করে নিজেকে অনেক বেশী ঋদ্ধ করার । একটি বিতর্ক শুভ হ'তে পারে যদি তা অন্য কাউকে আঘাত বা আহত না করে । কোন জটিলতা সৃস্টি না করে । কিন্তু বিষয়টি তেমন থাকছে না ।
তীব্র বিদ্বেষপূর্ণ শব্দবিতন্ডা চলছে যা পরিবেশ নষ্ট করছে বলে আমার মনে হচ্ছে । অশালীন ভাষা ব্যবহার ,গালাগালি এগুলো কীভাবে এধরনের একটি ব্লগভূক্ত মানুষ করতে পারে ভেবে অবাক হচ্ছি ।
কোন একটি গোষ্ঠীর গভীর বিশ্বাস নিয়ে কোন বিতর্ক না করাই শোভন । ধর্ম এবং ধর্মীয় বিশ্বাস খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এর অস্তিত্ব মানুষের গভীর বিশ্বাসে।
সেখানে কোন জুলুম, কোন জবরদস্তির অবকাশ নেই ।
ধর্ম শব্দটির উৎপত্তি ধৃ ধাতু থেকে । যার অর্থ ধারন করা । মানুষ যে নীতি যে আদর্শ ধারন করে সুন্দর জীবন কাটাবার দিক নির্দেশনা পায় তা-ই ধর্ম । ধর্ম মানুষকে সাহায্য করে সঠিক জীবনাচরনের মাধ্যমে নিজেকে সুন্দর জীবনের অধিকারী হ'তে ।
একটি বিষয় সকলেই একমত হবেন যে ,কোন মানুষই তার নিজের ধর্ম বেছে নেয় না । যে জন্মসূত্রে যে ধর্ম পায় সে সে ধর্মের অনুসারী হ'য়ে জীবন কাটায় । অর্থাৎ যার পিতামাতা যে ধর্মের অনুসারী সে সেধর্মই অনুসরন করে । আজ আপনি যেভাবে বিশ্বাস করছেন সে বিশ্বাসটি আমার হ'ত যদি আমি আপনার জায়গায় জন্মাতাম । কিংবা একইভাবে তার উল্টোটাও ঘটতে পারত ।
অতএব কে কোন ধর্মের অনুসারী হবে তা সৃষ্টিকর্তাই নির্ধারন করছেন । আমরা তার নির্ধারিত পথে চলেছি । এ বিষয়টি নিয়ে জোরজবরদস্তি কি পরোক্ষভাবে সৃষ্টিকর্তার সৃ্ষ্টির উপর জোরজবরদস্তি নয় ?
আরেকটি দৃষ্টিকোন থেকেও বিষয়টি আমাকে ভাবায় আর তা হল- সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই অসীম এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী । তিনি যা চাইবেন তা-ই হবে । তিনি যদি চাইতেন যেকোন সময় পৃথিবীর যেকোন জাতি বা গোস্ঠীকে তিনি নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারতেন ।
কিন্তু তিনি তা করছেন না । বিশ্বাসী মানুষদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হ'বে এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন গূঢ় কারন আছে যা আমাদের অগ্ঞাত । নিশ্চয়ই তিনি কোন গভীর উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের জগতে এত জাতি বৈচিত্র টিকিয়ে রেখেছেন । অবশ্যই আমাদের তাঁর উপর আস্থা রাখতে হবে ।
আমরা সচেতন মানুষেরা জীববৈচিত্র রক্ষায় সোচ্চার জাতিবৈচিত্র রক্ষায় কেন নই?
যে যেখানে যে বিশ্বাস নিয়ে আছে ভাল থাকুক ।
যদি আপনি মনে করেন আপনার ধর্মমত সর্বশ্রেষ্ঠ তা আপনাকে প্রমান করতে হবে কাজে । দেখাতে হ'বে আপনার বিশ্বাসের পথে চলে আপনি ভাল আছেন । আপনার ধর্ম আপনাকে মহান করে তুলছে । অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রচার করুন আপনার মহৎ ধর্মের নীতি আদর্শ । এভাবেই একসময় বহু মানুষ নিজ ধর্ম ত্যাগ করে মহান ধর্ম বিশ্বাসের পথ অনুসরন করেছে ।
এখনও করছে ।
ধর্মের সার্বজনীনতা হ'ল সব ধর্মই প্রথমে মানবকল্যানের কথা বলে । ধর্ম নিয়ে হানাহানি হলে ধর্মের প্রথম উদ্দেশ্যই তো ব্যাহত হয় সবার আগে । একজনকে আঘাত করার সাথে সাথে প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনাও তো তৈরী হয়ে যায় । আর একটি ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, এযাবৎকাল যখনই ধর্ম নিয়ে হানাহানি হয়েছে তার অধিকাংশই ঘটেছে কোন স্বার্থান্বেষী মহলের গূঢ় কোন হীন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ।
তাই যখনই ধর্ম নিয়ে হঠাৎ মাঠ গরম হতে শুরু করে প্রয়োজন পড়ে সতর্ক হবার । সতর্ক থাকার । সাধারন মানুষের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ না করতে পারে ।
তাই ,আসুন ধর্ম নিয়ে মারামারি -হানাহানির অবসান ঘটাই । কোন এক অনির্দিষ্ট জগৎ থেকে কিছু সময়ের জন্য আমরা এখানে আশ্রয় পেয়েছি ।
এখানে অবস্থানকালীন সময়টুকু অন্ততঃ আমরা ভাল থাকি , ভাল রাখি আশেপাশের সবাইকে ।
ভাল থাকুন সবাই ।
--------***--------
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।