পূর্ব সুন্দরবনের বাগেরহাটের চাঁদপাই, শরণখোলা এবং পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১৬টি বনদস্যুবাহিনী। মুক্তিপণ দাবিতে এইসব বাহিনীর সদস্যদের হাতে প্রতিনিয়ত অপহণের শিকার হচ্ছে জেলে-বাওয়ালি। সুন্দরবনের দুবলার ফিসারম্যান গ্রুপের হিসাব মতে প্রতিবছর বনদস্যুরা প্রায় ২ লাখ জেলে ও বাওয়ালির কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করছে ৫০ কোটি টাকা। পণ না পেলে তাদের হাতে প্রাণ হারাতে হচ্ছে অসংখ্য জেলে-বাওয়ালির। ফলে এদের মধ্যে প্রতি মুহূর্তে বিরাজ করে আতঙ্ক। দুবলার ফিসারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সুন্দরবন অঞ্চলের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন জানান, কয়েকটি বনদস্যুবাহিনী মৌলবাদী ও চরমপন্থীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা এসব বাহিনীর গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনা গেলে দস্যুবৃত্তি কখনই বন্ধ হবে না। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগীয় কর্মকর্তা আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, বনরক্ষীদের চেয়ে বনদস্যুদের রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এছাড়া তাদের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় দস্যুদের দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। সুন্দরবন উপকূল মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্র্রিস আলী জানান, এলাকাকেন্দ্রীক দস্যুদের চাঁদা দিয়েই মাছ ধরতে হচ্ছে জেলেদের। চাঁদা দিতে না পরলে তাদের অপহরণ করা হচ্ছে। আর অপহৃতদের বেশির ভাগই মুক্তি পান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। স্থানীয়রা জানান, সুন্দরবনের বাঘ আতঙ্ক উপকূলবাসীর কাছে এখন এখন গৌণ হয়ে পড়েছে। মূর্তমান আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে বনদস্যুবাহিনীগুলো। তাদের হামলা, লুটপাট, অপহরণে অতিষ্ঠ পুরো দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলে-বাওয়ালিদের কাছ থেকে জানা গেছে, সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে ১৬টি বনদস্যুবাহিনী সক্রিয় থাকলেও ছয়টি বাহিনী বেশি শক্তিশালী। এদের মধ্যে চাঁদপাই রেঞ্জ মুর্তজা বাহিনী ও শরণখোলা রেঞ্জ নিয়ন্ত্রণ করছে রেজাউল বাহিনী। সাতক্ষীরা রেঞ্জের উত্তর দিক আমজাদ বাহিনী ও দক্ষিণ দিক রয়েছে জাকির বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আর খুলনা রেঞ্জের উত্তর এবং দক্ষিণ পাশ নিয়ন্ত্রণ করছে মাহবুব ও জাহাঙ্গীর বাহিনী।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।