ভয়াবহ সেশনজটের কবলে ঘুরপাক খাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জীবন। বলি হচ্ছে সাড়ে ১৪ হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ। বয়স হারিয়ে চাকরির বাজারে তাল মেলাতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগেই চলছে এক থেকে চার বছরের সেশনজট। নিয়মানুযায়ী ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে সবচেয়ে সিনিয়র হওয়ার কথা থাকলেও কোনো কোনো বিভাগে ২০০৪-০৫ সেশনের শিক্ষার্থীরাও রয়ে গেছেন ক্যাম্পাসে। ছাত্রজীবন শেষ করার আগেই চাকরির বয়স হারাচ্ছেন অনেকে। খেতাব পাচ্ছেন আদু ভাই হিসেবে। ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এদের সংখ্যা। সেশনজটে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ইবির আইন ও শরিয়াহ অনুষদভুক্ত দুটি বিভাগ। আল-ফিক্হ বিভাগের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের মাস্টার্সের রেজাল্ট এখনো প্রকাশ হয়নি। এ বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স মিলিয়ে পাঁচটি ব্যাচ থাকার কথা থাকলেও আছে ১০টি। এ ছাড়া আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগে জড়ো হয়েছে নয়টি ব্যাচ। ইংরেজি, গণিত, ব্যবস্থাপনা, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ব্যাচ আছে আটটি করে। ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বাংলা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, হিসাব বিজ্ঞান, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্যপ্রযুক্তি, ফলিত পদার্থ ইলেকট্রনিঙ্ অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে রয়েছে সাতটি করে ব্যাচ। এক থেকে দুই বছরের বেশি সেশনজট বিরাজ করছে এসব বিভাগে। সেশনজটের মূল কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদারকির অভাব, শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলা, জবাবদিহিতা না থাকা ও স্বেচ্ছাচারিতাকেই দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। সান্ধ্য কোর্সগুলোয় শিক্ষকদের মাত্রাতিরিক্ত সময় দেওয়াকেও সেশনজটের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন জানান, শিক্ষকদের প্রাইভেট প্রোগ্রাম, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন কর্তৃক ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা ও প্রশাসনের তদারকির জন্যই মূলত সেশনজট বাড়ছে। সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও শিক্ষক নেতারা প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, সেশনজট এক দিনে তৈরি হয়নি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সেশনজট কমিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সেশনজট নিরসনে শিক্ষকদের ভূমিকাই প্রধান।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।