আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলায় নজরুলের দুরন্তপনা; আমার অনুপ্রেরণর উৎস



কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি, আমার প্রিয় কবি । মুসলিম ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক বলিষ্ঠ প্রতিভা, যুগস্রষ্টা, নবজাগরণ বা রেনেসাঁর কবি। বাংলা সাহিত্য তথা বাংলাদেশের জনগণের বিশেষ করে বাঙালী মুসলমানদের জাতিগত আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম হাতিয়ার হলেন নজরুলও তার সৃষ্টিকর্ম। নজরুল বিহীন বাংলা সাহিত্য যেমন খণ্ডিত, ও পতিত, বাঙালি মুসলমানরাও তেমনি একেবারে অচল। সুতরাং সম্পূর্ণ বাংলাকে পেতে হলে নজরুলকে পেতে হবে আবার বাঙালি মুসলমান তথা বাংলাদেশি নাগরিকদের আত্মপরিচয়কে গর্বের সাথে প্রকাশ করতে হলে নজরুলকে জানতে হবে।

আর এই সংগ্রামী কবির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে তার ছোটবেলা থেকেই। ছোটবেলা থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার যে আকুতি, দৈনন্দিন জীবন ও ক্রমাগত বেড়ে ওঠার অভিপ্রায়-তার অনিবার্য, অনস্বীকার্য শিরোনাম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বর্ধমান জেলায় স্পর্ধিত অবয়ব: কাজী নজরুল ইসলাম এমন এক উত্তাল রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে এ ধরাধমে আগমন করেন যে তাকে বুঝতে হলে তৎকালীন সমাজ পরিবেশের দিকে দৃষ্টিপাত অপরিহার্য। কবি নজরুলের পূর্ব পুরুষগণ এক সময় পাটনায় বসবাস করতেন; সম্রাট শাহ আলমের সময় চুরুলিয়ায় এসে বসবাস শুরু করেন, তারা বাদশার দরবারে চাকুরি করতেন। জন্ম ও বংশ পরিচয়: বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসরাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ, মাতা: জাহেদা খাতুন, পিতামহ: কাজী আমানুল্লাহ, মাতামহ: তোফায়েল আলী। ৪ ফকির আহমদের বাড়ির পূর্বদিকে ছিল রাজা নরোত্তম সিংহের গড়। আর দক্ষিণে ছিল পীরপুকুর। এই পুকুরের পূর্বপাড়ে হাজী পাহলোয়ানের মাজার শরীফ এবং পশ্চিমে একটা ছোট্ট মসজিদ। নজরুলের পিতা ও পিতামহ সারা জীবন এই মাজার শরীফ ও মসজিদের সেবা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

বাংলা কাব্য ও ফার্সি ভাষার প্রতি অনুরাগ তিনি পিতা ও পিতৃব্য কাজী বজলে করীমের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। জীবন সংগ্রামে দুখু মিয়া: কাজী নজরুল বাল্যকালেই পিতৃহীন হন। কাজী ফকির আহমদের দুই সংসারে সাত ছেলে ও দুই কন্যা। কাজী নজরুলের ভাইবোনের সংখ্যা ছিল চারজন। অগ্রজ কাজী সাহেব জান, কনিষ্ঠ কাজী আলী হোসেন, ভগ্নী উম্মে কুলসুম এবং কবি স্বয়ং।

ফকির আহমদের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর চারটি পুত্রের অকালমৃতু্যর পর তার জন্ম হয় বলে, তার ডাকনাম রাখা হয় দুখু মিঞাঁ। পিতার মৃতু্যর পর কাজী পরিবার অশেষ দুঃখ-কষ্টের মধ্যে নিপতিত হয়। সুতরাং বাল্যকাল থেকেইকবিকে সংগ্রাম করে বাঁচতে হয়। নিম্ন প্রাইমারি পরীক্ষা উত্তীর্ণ নজরুলকে এ সময় মাজার, মসজিদ দেখাশোনা এবং গ্রামে ধর্মীয় কাজে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। বাল্যে এভাবে তিনি অর্জন করেন ধর্মীয় জ্ঞান ও মুসলিম সমাজ সম্পর্কে ধারণা।

নজরুলের প্রথম বয়সে 'সালেক' গল্পে মুক্তি কবিতায় এবং রোগাক্রান্ত হবার পূর্বে লিখিত কোনো কোনো রচনায় যে অলৌকিকতার সন্ধান পাওয়া যায় তা হয়তো বাল্যের ঐ সংসর্গ ও অভিজ্ঞতার ফল। সন্ন্যাসী জীবন: অত্যন্ত প্রখর মেধা, মসজিদে ইমামতিতে নজরুলকে সংশ্লিষ্ট রাখে। সপ্রতিভ ও চলঞ্চল প্রকৃতির নজরুল পরিবেশ-প্রতিবেশ থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করেন। যাত্রা, পালাগান, কথকতা কিংবা কুরআন পাঠ অথবা লেটো গান যেখানে হতো দুরন্ত নজরুল গভীর আগ্রহ নিয়ে সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতেন। এমনকি তিনি বাউল-সুফী-দরবেশ ও সাধু-সন্ন্যাসীর সাথে বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও অনায়াসে মেলামেশা করতে পারতেন।

তার আচার আচরণে ঔদাসীন্য লক্ষ করে লোকে তাকে 'তারাক্ষেপা' বলেও ডাকতো। কেউ কেউ আদর করে বলতো নজর আলী। বাল্যকালেই নানা ভাষায় সাহিত্য-রস আহরণ: কবি নজরুল চঞ্চলমতি ছিলেন বলে কোথাও থিতু হতে পারেন নি। আজ হেথা কাল হোথা পরশু অন্যকোথা-অন্যকোন্খানে দূরে বেড়িয়েছেন আর মিলেছেন বারো রকম মানুষের সাথে এবং সঞ্চয় করেছেন অদ্ভূত সব বিচিত্র অভিজ্ঞতা। তার পড়ার আকাঙ্ক্ষাও প্রবল ছিল, তাই যেখানে যা পেতেন পড়ে ফেলতেন সাগ্রহে।

আর এভাবেই তিনি বাংলা, ইংরেজি ও ফার্সি সাহিত্য থেকে রস আহরণ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করেন। অর্থোপার্জনের জন্য লেটোর দলে প্রবেশ: নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন প্রাথমিক উত্তীর্ণ হয়ে সেখানেই শিক্ষকতা করেছেন, এবং পাশ্ববর্তী গ্রামে মোল্লাগিরি ও করতেন বলে জানা যায়। দু' মুটো ডাল-ভাতের সংগ্রামে নজরুল দু'বছর (১৯০৯-১৯১০) একাডেমী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থাকেন। এগারো বছর বয়সে কবি রোজগারের জন্য লেটো দলে প্রবেশ করেন এবং লেটোদলে গান ও নাটক রচনা করে সামান্য অর্থোপার্জন করতেন। লেটোদলে গান রচনাকালেই তার প্রতিভার সম্যক পরিচয় পাওয়া যায়।

অর্থাৎ নজরুলের কবি প্রতিভার প্রখরতা অনুমান করে গোদা কবি তাকে 'ব্যাঙাচি' বলে ডাকতেন এবং বলেছিলেন-"আমার ব্যাঙাচি বড় হয়ে সাপ হবে। " তার ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যে হয়নি। জনাব আনওয়ারুল ইসলাম বলেন: এ সময় কালে শকুনীবধ মেঘনাদধ। চাষার সঙ, রাজপুত্র, আকবর বাদশা ইত্যাদি পালাগান রচনা করেন। মাথরুন স্কুলে অধ্যয়ন: কাজী নজরুল বাল্য- কৈশোর কালেই যেমন কবি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তেমনি দুষ্টুমিতেও কম যেতেন না।

তার দুষ্টুমিতে গ্রামবাসী যখন অতিষ্ঠ এমনই এক সময়ে তিনি গ্রাম ত্যাগ করেন। নজরুলের এই সময় কিছুদিন (১৯১১) বর্ধমানের মাথরুন স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে লেখাপড়া করেছিলেন। তখন ঐ স্কুলের শিক্ষক ছিলেন কবি কুমুদরঞ্জন মলি্লক। তিনি নজরুলের সম্পর্কে লিখেছেন, "আমি ২৩ বছর বয়সে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে ঢুকি। তখনকার দিনে ৬ঃয পষধংং-ঋ নজরুল পড়িত।

ছোট সুন্দর ছনছনে ছেলেটি, আমি ক্লাস পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই আসিয়া প্রণাম করিত। '' প্রসাদপুরের বাংলোতে বাবুর্চির কাজ: কাজী নজরুল ইসলাম অত:পর কবিগানের আসরে যোগ দেন এবং পালাগান লিখতে শুরু করেন। গান লিখে সুরারোপ করতেন, এমনকি ঢাকঢোল বাজিয়েও গান গাইতেন। বর্ধমান জেলার অণ্ডালের ব্রাঞ্চলাইনের একজন বাঙালি ক্রিশ্চান গার্ড সাহেব তাকে এক শীতের রাত্রিতে কবিগানের আসরে গান গাইতে শুনে মুগ্ধ হন এবং তার প্রসাদপুরের বাংলোতে বাবুর্চির কাজ দেন। গার্ড সাহেব ছিলেন অত্যন্ত মদ্যপ এবং সে কারণে নজরুলের যে গান শোনার জন্যে তাকে বিশেষভাবে কাজ দিয়েছিলেন তা শোনার অবকাশ ও সুযোগ প্রায়ই তার হতো না।

কিছুদিনের মধ্যেই এক হাঙ্গামার সূত্রপাত হতেই নজরুল গার্ড সাহেবের চাকুরী ছেড়ে দেন। রুটির দোকানে কাজ: এবার তিনি আসানসোল ফিরে এসে আব্দুল ওয়াহেদের রুটির দোকানে কাজ শুরু করেন, খাওয়া-দাওয়া ছাড়া ১ টাকা মাইনে পেতেন। জনাব আজহার উদ্দিন খান বলেন, " নজরুল প্রসাদপুর থেকে আসানসোল ১৯১৩ সালের দিকে ফিরে এলেন। অপরিচিত জায়গায় গ্রামের ছেলে কি আর করেন স্টেশনের কাছেই হুগলী নিবাসী মুহম্মদ বখসের রুটির দোকানে পেটখোরাকী মাসিক এক টাকা বেতনে কাজ পেলেন। " ছোটবেলাতেই যুদ্ধে যোগদান: ১৯১৭ সালে নজরুল দশম শ্রেণীর ছাত্র যোগ দেন যুদ্ধে।

তার কথায়, "আমি জীবনের তরঙ্গে তরঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, ক্লাসে ছিলাম ফাষ্টবয়, হেডমাস্টারের বড় আশা ছিল আমি স্কুলের গৌরব বাড়াব। কিন্তু এই সময় এলো ইউরোপের মুহাযুদ্ধ। একদিন দেখলাম এদেশ থেকে পল্টন যাচ্ছে যুদ্ধে। আমিও যোগ দিলাম সে পল্টনে। " নজরুল ছোটবেলায় অসামপ্রদায়িক মনোভঙ্গি ও জনপ্রিয়তা: ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সাগরে বাতিঘর দর্শনে যাত্রীর মনে ভরসা জাগে, পথের নিশানা স্থির করতে সাহায্য করে।

সেইরূপ সামপ্রদায়িকতার বিদ্বেষ কলুষিত পরিবেশ জাতপাতের ভেদাভেদের বিষাদে তাদের কথা মনে পড়ে যারা সামপ্রদায়িকতার বিরুদ্ধতা করেছেন। এইরূপ নির্ভীক ব্যক্তিদের অন্যতম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আর এই জন্য তিনি জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠেছিলেন। রাশিয়ায় নজরুলের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে ফখরুদ্দিনের মন্তব্য: "ঞযব ঢ়ড়ঢ়ঁষধৎরঃু ড়ভ ঘধুৎঁষরং ঢ়ড়বঃৎু রহ ঃযব ংড়ারবঃ ঁহরড়হ রং মৎধফঁধষষু মৎড়রিহম. ঞড়ধিৎফং ঃযব বহফ ড়ভ ঃযব ংবাবহঃরবং ঝড়ারবঃ সঁংরপরধহং ঞবাংরবা ধহফ ষড়ংড়া ংবঃ ঃঁহব ঃড় ংড়সব ড়ভ যরং ঢ়ড়বসং. ওহ ১৯৮১ সঁংরপরধহ ঞবামবহহর ড়িহ ধহফ ধধিৎফ ভড়ৎ ংবঃযরহম ঃঁহব ঃড় ঘধুৎঁষ্থং ঢ়ড়বস ঃরঃষবফ ্তুঝধহশধষঢ়ধ্থ ( ধসনরঃরড়হ).চ্ আত্ম আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আত্মজাগরণের যে স্পৃহা কবি নজরুলকে প্রাণিত করেছে তা হলো সামপ্রদায়িক বিভেদমুক্ত সমপ্রীতির একটি ভিত্তিমূল। কবি এ ব্যাপারটি তার কৈশোর জীবন ও লেখক জীবনের সূচনালগ্নেই অনুভব করতে পেরেছিলেন।

শিশুকাল থেকেই প্রয়োজনের তাগিদে তিনি মুগ্ধ-মুসলমান উভয় সমপ্রদায়ের মানবতাবাদী অধিকারী মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন। সমপ্রদায়ভেদে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অকুণ্ঠ ভালবাসা তার মনে এ অভিনব বোধের সৃষ্টি করেছে। শৈশবে - খুকি ও কাঠবেড়ালী, লিচুচোর, ভোর হলো দোর খোল.......; কৈশরে কান্ডারী হুশিয়ার, তারুণ্যে বিদ্রোহী ; সবমিলিয়ে নজরুল আমার ভাললাগা এক মানুষ। তাকে ভালবাসি, ভালবাসি তার লেখাকে । তার উদার মন , সৃষ্টিশীলতা , সৌন্দর্যবোধ ও ক্ষিপ্ততা আমাকে অনুপ্রাণিত করে ।

আমি এগিয়ে চলার শক্তি পাই । আমি অবাক হইনা , যখন ছোট্ট ছেলেটি আমার- 'নজরুলকে তুমি কেন ভালবাস?' প্রশ্নের উত্তরে জবাব দেয়, দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি, ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ - এগুলোকে যেমনি ভালবাসি , নজরুলও আমাদের জাতীয় কবি তাই তাকেও ভালবাসি। ছোটদের নজরুল সংক্রান্ত এই ধরনের জ্ঞানে কষ্ট পেলেও অবাক হইনা কারণ আমরা বড়রাও নজরুল চচর্া ছেড়েই দিয়েছি । নজরুল আমাদের জাতীয় কবি এতটুকু জানলেই যেন হল, তার লেখনির সাথে আমাদের পরিচিত হবার প্রয়োজন যেন ফুরিয়ে গেেেছ। আসলে কী তাই ? মোটেই নয় ।

জাতীর উন্নয়ন চাইলে, ঐক্যবদ্ধ করতে চাইলে , দেশপ্রেমিক ও মানবিকতা সম্পন্ন মানুষ চাইলে নজরুলের বিকল্প নেই । পরিশেষে বলা যায়, যতই দিন যাচ্ছে, এ সত্য ততোই দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে যে, আজকের ঝঞ্ঝা ক্ষুব্ধ পৃথিবীকে যদি আবার শান্তি, আনন্দ ও কল্যাণের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে মানব জাতির আত্মার সবচেয়ে বড় আশ্বাস হতে পারে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর অবিনাশী সৃষ্টি সম্ভার। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং কাজী নজরুল ইসলাম এক ও অবিভাজ্য ঘটনা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে সংগ্রামী জাতিগঠনে। জীবনের জন্য বাতাস, পানি ও খাদ্য যেমনি অপরিহার্য, তেমনি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য নজরুল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.