আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অশনি সংকেত পচাত্তরের চেয়ে ভয়ংকর

হট নিউজ

বতর্মানে সরকরীদলের অবস্থা দেখে মনে পড়ে পচাত্তরে ট্রাজেডির কথা। সেসময় শাসক দলের স্ট্রিমরোলারে মানুষ পিষ্ট হয়েছিল যেভাবে এখন হচ্ছে। দেশের আলেম উলামা সহ অনেক রাজনীতিবিদ বন্ধী ছিলেন। তারা জেলখানার প্রকোষ্টে থেকে পনের অগাষ্টের সংবাদ পেয়েছিলেন। সাধারন জনগনও সেই ভয়ংকর পরিনতির আশংকা করছিল।

কিন্তু সরকারের মন্ত্রী যন্ত্রী নাকে তেল দিয়ে দিব্যি ঘুমে ক্ষমতার মসনদে বিভোর ছিলেন। সেই আলামত বর্তমানে দেখা যাচ্ছে। সরকার লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং দিনবদলের কথা ভুলে গেছে বিভিন্ন সময় সরকারের আচরণে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত ২৭ জুনের হরতালের দিনেও আমরা সরকারের আচরণে তেমন দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করেছি। হরতাল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, আদালতের রায়েও আমরা তেমন অভিব্যক্তি লক্ষ্য করেছি।

অথচ বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হরতালের ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন হলেও অন্যকে হরতাল পালনের অধিকার দিতে রাজি নয়। ২৭ তারিখে হরতালের বিরুদ্ধে পুলিশ ও র্যা বকে সরকার যেভাবে ব্যবহার করলো তা এককথায় নির্মম ও নিষ্ঠুর। বিরোধীদলের রাজনীতিবিদদের বাসাবাড়িও ঐদিন নিরাপদ ছিল না। বিষয়টি সরকারদলীয় এমপি ও সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুর বক্তব্যেও উঠে এসেছে। গত সোমবার সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, হরতালের সময় বিএনপি নেতা মির্জা আববাসের বাড়িতে ঢুকে পুলিশ যে অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে তা অন্যায়।

একজন লোক তার বেডরুমে শুয়ে থাকবে আর পুলিশ ঘরে ঢুকে তার ওপর নির্যাতন চালাবে এটা হতে পারে না। টেলিভিশনে এ ঘটনার দৃশ্য দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেছে। মির্জা আববাসের বাসভবনে র্যা বের হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শীর্ষ আইনজীবীরাও। তারা বলেছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। র্যা ব রাষ্ট্রের সুশৃংখল বাহিনী হিসেবে যেখানে নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করবে সেখানে তারাই নাগরিকদের মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে ভূলুণ্ঠিত করছে।

কোন সভ্য দেশে আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড কারো কাম্য নয়। হরতালের দিন পুলিশ-র্যা বের বাড়াবাড়ির পাশাপাশি বাড়াবাড়ি করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর চোখে যেন তা ধরা পড়েনি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের ব্যাপারে তো স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক কৌতুকপ্রদ বক্তব্য রাখলেন সাংবাদিকদের কাছে। তিনি বললেন, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের কেউ নয়, তাদের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না।

একথা বলেই কি আমাদের মন্ত্রীরা দায় এড়াতে পারবেন? ছাত্রলীগ যদি আওয়ামী লীগ বা সরকারের কেউ না হয়ে থাকে, তাহলে হরতালের দিন শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ বিরোধী দলের এমপি শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্যদের ওপর হামলার সুযোগ পেল কেমন করে? দেশের মানুষকে এতটা বোকা মনে করা ঠিক নয়। আসলে চাতুর্য দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার প্রচেষ্টা চালানো যায় কিন্তু তাতে সত্য গোপন করা যায় না। বরং চাতুর্যের চাপ অগ্রাহ্য করে সত্য যখন বেরিয়ে আসে তখন তা তীব্রভাবেই বেরিয়ে আসে। তখন সত্যের মোকাবিলা করার ভাষা খুঁজে পায় না চতুর ব্যক্তিরা। তবে ভুলের পর যারা সত্য স্বীকার করে তাদের চ্যালেঞ্জটা কমে আসে এবং জনমনেও তারা স্থান পেয়ে যায় সহজে।

যেমনটি আমরা লক্ষ্য করেছি এবারও। পুলিশ-নির্যাতনের বাড়াবাড়ির অন্যায়কে অন্যায় বলে নিন্দা করায় সরকারি দলের এমপি হওয়ার পরও আব্দুল মতিন খসরু বিরোধীদলের কাছেও প্রশংসিত হয়েছেন, আর সত্য স্বীকারের বদলে চাতুর্য করায় নিন্দিত হচ্ছেন সরকারের মন্ত্রীবাহাদুররা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।