সূত্রঃ বিডিস্পোর্টসনিউজডটকম
এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটিয়ে ডিফেন্ডিং চাম্পিয়ন ইতালিকে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় করে দিল স্লোভাকিয়া। আগের দুই ম্যাচে ড্র এবং শেষ ম্যাচে হেরে একেবারেই শূন্য হাতেই বিদায় নিতে হলো ইতালিকে।
শুধু পরাজয় হলেও কথা ছিল না। ফুটবল দুনিয়ায় ইতালির পরিচয় রক্ষনাত্বক খেলার জন্য। নিঃসন্দেহে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রক্ষনভাগের অধিকারি ইতালি।
তাদের রক্ষনাত্বক খেলা ফুটবলপ্রেমীদের মন ভরাতে পারুক বা না পারুক তাদের জিতিয়েছে ব্রাজিলের পরই সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপের শিরোপা। অথচ সেই ইতালির জালেই স্লোভাকিয়া জড়াল তিন তিনটি গোল। সেই ১৯৭০ সালে ব্রাজিলের কাছে ৪-১ গোলে হারার পর আর কোনদিনই তিন বা তার বেশি গোল হজম করেনি ইতালি। শুধু প্রথম রাউন্ডে বিদায়ই নয়, ঐতিহ্যবাহী ডিফেন্সের এহেন তথৈবচ অবস্থার জবাবদিহিও তাই করতে হবে ল্যাটিন শিবিরকে দেশে ফিরে।
৩-২ ব্যাবধানে জয়, স্কোর দেখে গোলে ভরপুর ম্যাচ মনে হলেও এই পাঁচ গোলের চারটাই হয়েছে খেলার শেষ ২০ মিনিটে।
শুরুটা অবশ্য করেছিল স্লোভাকিয়াই। খেলার ২৫ মিনিটে রবার্ট ভিটেক গোল করে এগিয়ে দেন স্লোভাকিয়াকে। যে ম্যাচে ড্র করলেও ইতালি উৎরে যায় দ্বিতীয় রাউন্ডে সে ম্যাচেই শুরুতে গোল হজম করে মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। আগের ম্যচেও শুরুতে দুর্বল নিউজিল্যান্ডের কাছে গোল খেয়ে পরে সেই গোল পরিশোধ করে ইতালি। কিন্তু ম্যাচের ৭০ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পরও যখন গোল পাচ্ছিলোনা ইতালি, বিশ্বকাপের বিদায় ঘণ্টা বোধহয় তখনি শুনতে পাচ্ছিলেন ইতালির সমর্থকরা।
সেই সাথে ৭৩ মিনিটের সময় ম্যারেক হামসিকের কর্নারে দ্বিতীয় গোল করে যেনো ইতালির কফিনে পেরেক ঠুকে দেন ভিটেক। কিন্তু কে জানত যে নাটক তখনো শেষ হয় নি। ৮১ তম মিনিটে এন্টোনিয় ডি নাটালে গোল করলে হঠাৎ করেই ম্যাচে ফিরে আসে ইতালি। ব্যবধান তখন ২-১। গোল পেয়ে উজ্জীবিত ইতালি ঝাঁপিয়ে পরে স্লোভাকিয়ার গোলমুখে।
ঠিক ২ মিনিট পরই তারা পেয়ে যায় সমতায় ফেরার সুযোগ, স্লোভাকিয়ার জালে বল ফেলেন ফ্যাবিও কাগলিয়ারেলা, কিন্তু বাধ সাধে অফসাইড। কিন্তু ঠিক ৮৯ মিনিটের মাথায় স্লোভাকিয়ার কামিল কপুনেক গোল করে হতাশায় ডোবান ইতালিয়ানদের। ব্যবধান তখন ৩-১। সবকিছু যখন শেষ বলেই মনে হচ্ছিল, তখন অতিরিক্ত সময়ের খেলায় এবার অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে সফল ভাবেই স্লোভাকিয়ার জালে বল জরান কাগলিয়ারেলা। ব্যবধান তখন ৩-২।
কিন্তু ঐ পর্যন্তই। এর পরপরই বাজে রেফারীর বাঁশি, শেষ হয় ইতালির বিশ্বকাপ স্বপ্ন।
ইতালি বা স্লোভাকিয়া কেউ যেতে পারেনি শেষ ষোলতে। অথচ এই একটা জয়ই স্মরণীয় করে রাখবে তাদের কাছে এবারের বিশ্বকাপ। নিজেদের সফল ভেবেই তাই বিদায় নেবে তারা।
স্লোভাকিয়ার কোচ ভ্লাদিমির ওয়েইসতো বলেই দিয়েছেন যে নিজের ছেলের জন্মের ঘটনার পর এটা তার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। তার বিপক্ষ দলের কোচ মার্সেলো লিপ্পির অবশ্য একেবারেই ভিন্ন অবস্থা। নিঃসন্দেহে চাকরি হারাবেন তিনি। সেই সাথে দেশে অপেক্ষা করছে কঠিন সময়। তবে দায় নিতে কোন কার্পণ্য করেননি তিনি।
ম্যাচ শেষে সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছেন, ব্যর্থতার সব দায় তিনিই নেবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।