আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সম্রাটের অপমৃত্যু.. ঝড়ে গেল আরো একটি ফুল

বাংলার আলো-জলে ধূলো মেখে বেড়ে ওঠা মুক্তি

সম্রাটের অপমৃত্যু.. ঝড়ে গেল আরো একটি ফুল দানব বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে অকালে বিদায় নিল ঝড়ঝড়ে একটি প্রাণ। প্রভাতেই ঝড়ে গেল আরো একটি ফুল। অপমৃত্যুর প্রভাতফেরীতে যোগ হলো আরো একটি নতুন নাম- সম্রাট.... সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে বোনের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল সম্রাটের । বৃহস্পতিবার ক্লাস নেই , শুক্রবার বন্ধ। নিরলস এই যান্ত্রিক জীবনে ক্ষণিক অবসর যাবনের আশায় বুয়েটের হল থেকে বের হয়েছিল সে।

যানজট এড়ানোর জন্যই হয়তোবা তার এই সকাল বেলায় বের হওয়া। কিন্তু কে জানতো ঢাকার রাস্তার যানজট এড়িয়ে ক্ষণিক অবসরের আশায় ছুটে চলা দুরন্ত চোখ দুটি বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে, স্নিগ্ধ রৌদ্রজ্জ্বল সকালে নেমে আসবে কালো মেঘের ঘনঘাটা, পিচ ঢালা কালো রাস্তায় বয়ে যাবে রক্ত বন্যা !! হওয়ার কথা ছিল না কিন্তু হয়ে গেল। কারণ যানবাহনগুলো ক্রমশ দানব হয়ে উঠছে। এখন মানুষের উপরে উঠছে বাস-ট্রাক-মাইক্রো-কার। আকস্মিক এক ধাক্কায় সোজা পরপারে চলে গেল একজন সম্রাট।

চোখ খুলে তাকানোর সময় পর্যন্ত দিল না তাকে ঘাতক বাস। চির অবসরে চলে গেল বুয়েটের মেধাবী মুখ খন্দকার খান জাহান সম্রাট। চার ভাই বোনের মধ্যে সবার আদরের ছোট ভাই সম্রাট। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এবং পরে বুয়েটে ভর্তি হয়ে অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী বাবার স্বপ্নকে আকাশ ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সে। সম্রাট তার আপন সম্রাজ্য বিস্তার করে চলেছিল ক্রমশ।

কিন্তু দূর্বল আইনের এই দেশের হিংস্র এক পরিবহন তাকে আর বাঁচতে দিল না। বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেধার বিচারে ৫ম স্থান দখলকারী সম্রাট মাত্র কয়েকটা দিন ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে । জীবনের সব কঠিন পরীক্ষার বিজয়ী সেনাপতি সম্রাট কোন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পর্যন্ত পেল না দেশের সর্বোচ্চ খ্যাতির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে। পিচঢালা কালো পথে সম্রাটের লাল ছোপ ছোপ রক্ত পানিতে মিশে চলে গেল । হারিয়ে গেল সম্রাটের অন্তর্ধান রহস্য।

বন্ধুরা ঘাতক বাসে আগুন দিয়ে মনের জ্বালা খানিকটা কমালো। মানবাধিকার এসে বিচার চাইবে, সেমিনার করবে, আন্দোলন করবে। কিন্তু সম্রাটের মার চোখের পানি মুছবে কে? সম্রাটের বাবার স্বপ্ন গুলো যে হারিয়ে গেল তা ফিরিয়ে দেবে কে..? মৌণতা ছাড়া এর কোন উত্তর নেই। সম্রাটের ঘনিষ্ট বন্ধু অর্থী বলছিল বাসগুলোর গর্জনের কথা। ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় ধুকে ধুকে চলা এই বাসগুলোই ক্যাম্পাসের নিরাপদ এলাকায় ঢোকার পর হয়ে যায় যেন গতির রাজা।

আর এ কারণেই বারবার মেধাবীরা হয় বলির পাঠা। ক্যাম্পাস এলাকায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের উপর সরকার কিংবা আইন রক্ষাকারী বাহিনী যদি কঠোর নিয়ম জারি করে তা বাস্তবায়ন করতো তাহলে হয়তোবা আর কিছু প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়া হতে রক্ষা পেত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.