"প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, নিঃসন্দেহে সে হল সফল। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। " আল ইমরান,আয়াত ১৮৫
খবরটি পড়ুনঃ
জামালপুরের মেলান্দহের জালাল মিয়া।
বয়স ৭০। পেশা ভিক্ষাবৃত্তি, ৫০ বছর ধরে আছেন এ পেশায়। বসেন হাইকোর্ট মাজার ও গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে। ভিক্ষা করে তার দৈনিক আয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এই টাকা জমিয়ে তিনি ৪টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ২টি মাইক্রোবাস কিনেছেন।
এ সব ভাড়া দিয়ে তার মাসে আয় হয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। তবু ভিক্ষা ছাড়েননি। বড় ছেলে মোকসেদ গাড়ির ব্যবসা দেখভাল করেন। ১৫ বছর আগে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নিজ গ্রামে দোতলা বাড়ি করেন। সেই বাড়ির পরিধি এখন বেড়ে উপরের দিকে আরো একতলা উঠেছে।
বাড়ির নাম 'মুসাফিরখানা'। এলাকাবাসী তাকে ব্যবসায়ী হিসেবে চেনে। দুটি ক্র্যাচ পাশে রেখে এমনভাবে বসেন যেন দেখতে পঙ্গু মনে হয়। দিব্যি হাঁটতে পারেন তিনি। রংপুরের কুড়িগ্রামের মিসির আলী।
৩২ বছর ধরে ভিক্ষা পেশায়। তার এরিয়া ফার্মগেট ওভারব্রিজ, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ও হাইকোর্ট মাজার। দৈনিক আয় ৩৫০-৪০০ টাকা। আয় যা করেন তা দিয়ে তিনি নিজ এলাকায় জমি কেনেন। তিনি এখন ২৫ বিঘা জমির মালিক।
দুই মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে তার সংসার। বড় ছেলে রংপুর ডিগ্রি কলেজে পড়ে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণীতে। এক মেয়ে সপ্তম ও আরেক মেয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ে। তিনি প্রতি ঈদে বাড়িতে যান।
না যেতে পারলে তার পরিবার ও এলাকার গরিবদের জন্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে কাপড় পাঠান। রহিম মোল্লা থাকতেন মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে। ভিক্ষার টাকায় কেরানীগঞ্জে জমি কিনে বাড়ি করেছেন। নিজে এখন আর ভিক্ষা করেন না, অন্যদের দিয়ে ভিক্ষা করান। তার রয়েছে ২টি প্রাইভেট গাড়ি।
একটি নিজে ব্যবহার করেন, আরেকটি ব্যবহার হয় তার অধীনস্থ ভিক্ষুকদের বিভিন্ন স্পটে পেঁৗছে দেওয়ার জন্য। এসব ভিক্ষুক একসময় পেটের দায়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছিলেন। খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে জীবনযাপন করতেন। এরা এখন কোটিপতি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, রাজধানীতে এ ধরনের অসংখ্য ভিক্ষুক আছেন, যারা বাস্তবে লাখপতি ও কোটিপতি।
বাড়ি-গাড়ি ও জায়গা-জমি সবই রয়েছে এদের। অঢেল টাকার মালিক হয়েও এরা রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে ভিক্ষা করছেন। এই পেশাতে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে বলে, তারা এই পেশাও ছাড়তে চান না। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে এমনই জানালেন তারা। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে ঢাকায় ৫০ হাজার ভিক্ষুক রয়েছে।
প্রতিদিন গড়ে ২০০ টাকা করে আয় করে। ৫০ হাজার ভিক্ষুক দৈনিক আয় করে এক কোটি টাকা। ৩০ দিনে আয় করে ৩০ কোটি টাকা। এ হিসাবে বছরে আয় হয় ৩৬০ কোটি টাকা। বিশেষ দিনে ভিক্ষুকদের মাথা পিছু আয় হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এসব ভিক্ষুক নির্দিষ্ট কিছু স্পট ছাড়াও নগরীর ৭৮ ট্রাফিক সিগনাল পয়েন্টে ভিক্ষা করছে। ফার্মগেট ওভারব্রিজে ১০ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন কুড়িগ্রাম উলিপুরের দেলোয়ার হোসেন। অন্ধ দেলোয়ার ভিক্ষার টাকায় নিজ গ্রামে ১৩ কক্ষের বড় বাড়ি তৈরি করেছেন। ২ সন্তানের জনক দেলোয়ারের ক্রয় করা জমি থেকে ১০০ মন ধান পান বছরে। ৩০ বছর ধরে হাইকোর্ট মাজারে ভিক্ষা করছেন মাদারিপুরের পঙ্গু হাবিব মিয়া।
রাখঢাক না রেখেই বললেন, 'ভাই এইটা লাভজনক ব্যবসা। পুঁজি নাই। বাকির কারবার নাই'। তিনি বলেন, জামালপুর ইসলামপুরের সুরুজ আলী এক সময়ে হকারি করত। রেলের নিচে তার এক পা কাটা পড়লে ভিক্ষা করতে শুরু করে।
১৯৮৮ সালে কালা ফকির, ল্যাংড়া মিজান, শাহজাহানকে নিয়ে সমিতি করে। ভিক্ষুকরা সমিতিতে ১০০ টাকা করে জমা রাখত। ১০ হাজারের মতো সদস্য সংখ্যা হয়েছিল সংগঠনে। টাকা রাখত ব্যাংকে। একদিন সুরুজ ও তার লোকজন সমিতির ২০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
তাদের আর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, শেখেরটেকের বাদশা ভিক্ষা করে বেশি লাভ করলেও এখন তিনি জেলে রয়েছেন। গত ৫ বছর ধরে নিজে ভিক্ষা করতেন না। অন্যদের দিয়ে ভিক্ষা করান। ১০ বছর আগে কেরানীগঞ্জের ঘাট এলাকায় পাঁচ কাঠা জমির ওপর ভবন তৈরি করেছেন।
আছে গাড়িও। এ ছাড়াও ভিক্ষার পোশাক ময়লা ছেঁড়া কাপড় ভাড়া দেন। তার পোষা ভিক্ষুকের সংখ্যা ২০০। এই ভিক্ষুকদের দৈনিক খাবার বাবদ ৫০-১০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা তিনি নিজে নিয়ে নিতেন। পুলিশ, মাস্তান ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে তিনি দৈনিক প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় করতেন।
৬ মাস আগে বাদশা পুলিশের কাছে ধরা পড়ে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
হাদিস অনুসারে, যার ঘরে এক বেলার খাবার আছে তার জন্য ভিক্ষা করা হারাম। অথচ এরা কি না করছে !!! আমার মনে হয়, আমাদেরও উচিত এদেরকে অন্ধের মত ভিক্ষা না দিয়ে যদি সুযোগ থাকে, তাহলে এই ব্যাপারটা বলা এবং সচেতন করা। এরা যেটা করছে সেটা স্রেফ ব্যবসা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহি বুঝ দান করুন।
। আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।