আমি তোমাকেই বলে দেব, কি যে একা দীর্ঘ রাত আমি হেটে গেছি বিরান পথে! আমি তোমাকেই বলে দেব, সেই ভুলে ভরা গল্প; কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়!
দিপু নামটা সুনলেই যে কথাটি প্রথম মাথায় আসে তা হচ্ছে দিপু নাম্বার টু। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লিখা একটা জনপ্রিয় কিশোর উপন্যাস, যা আমার ভাল লাগা উপন্যাসগুলোর একটি। যাই হোক আজ যে দিপুর গল্প করব সে নম্বার টু না; নাম্বার ওয়ান!!
গোসল করা নিয়ে আমার একটা থিউরি আছে, ‘গরমের সময় দুপুরে গোসল না করে, সন্ধ্যায় গোসল করা। এতে একটা স্বিগ্ধ ভাব থাকে; লেখাপড়া ভাল হয়। (অবস্য শীতের সময় দুপুরেই গোসল করি ) আমার এই ব্যাপারটার সাথে অয়ত অনেকেই একমত হবেন, কিন্তু কেউ যদি বলে ‘Stable থাকলে গোসলের দরকার কি? তা শীত কাল হোক বা গরম কাল!!’ তবে কি বলবেন? কিন্তু এই কথাটি বলে আমার দেখা most peculiar man, দিপু নাম্বার ওয়ান! এক রকম প্রচন্ড গরমের মাঝেও সে ১২/১৩ দিন গোসল না করে stable থাকে! এই stable থাকার রহস্য অবস্য নাম জানা না জানা কসমেটিক্স।
আমার ধারনা সে যত ধরনের কসমেটিক্স use করে, খুব কমই মেয়ে আছে যে তার সাথে পাল্লা দেবে।
কারো সাথে পরিচিত হবার তার একটা নিজস্ব স্টাইল আছে, ‘’I’m Depu, D for Dhaka.’’ তার বাড়ি যে ঢাকা তা গর্বের গর্বের সাথে ঘোসনা করে। আর আমরা বলি, “He is Depu, D for D-G-Tal & P for pagol!”
দিপু ভায়ের সাথে আমার যে ব্যাপারটি নিয়ে তুলনা হয় তা হচ্ছে স্বাস্থ্য; দুজনাই টিন টিন টাইপের পাতলা। তারপরো তুলনা শুরু হলে আমার একটাই জবাব, “গাধার সাথে আমার তুলনা করছেন! আমি কি এতটাই খারাপ হয়ে গেছি? ” আমার এই মাইনাস ফিগারের রহস্য আমি মেসের খাবার খেতে পারি না; এত পচা লাগে। ভার্সিটতে ভর্তী হবার আগে মা আমাকে খাইয়ে দিত, তক মজা করে খেতাম; আর এখন।
আমি মেসে খেতে পারি না আর দিপু ভাই মেসে (নিয়মিত) খায় না। সকালে ক্যাম্পাসে যাবার সময় একটা টাইগার তার ব্রেকফাস্ট, আর দুপুরে ঠিকমত খায় না কারন ক্যাম্পাসে ভাজা পোড়া খেয়ে আসে। খাওয়ার ব্যাপারে তার থিউরি হচ্ছে, “ দেহে এনার্জি পেলেই হল, তা এনার্জি ড্রিং থেকে হোক বা ভাত থেকে!“
আমাদের দুর্ভাগ্য যে এপ্রিল মাসে মিল ম্যানেজার ছিল দিপু ভাই। সে মাছ খায় না (তার পুরো পরিবার নাকি মাছ খায় না) আর মাংস দিলে মিল রেট বেশি পড়ে যাবে, তাই মিলে ডিম দেয়া শুরু করল (তবু আবার আধা ) সে তো নিজে মেসে ঠিকমত খায় না, তাই তার কোন প্রব্লেম নেই; কিন্তু আমরা যারা মেসে খাই তাদেরতো অবস্থা খারাপ। মাসের মাঝ মাঝি এসে আমাদের কেলটু দা (রুশো ভাই, তাকে নিয়েও একটি পোস্ট দিব ভাবছি ) খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন; বললেন, “সিজান যে হারে দিপু ডিম খাওয়াচ্ছে, শেষে টয়লেটে গিয়ে না আবার ডিম পাড়তে হয়!
এত কিছুর পর ডিম ম্যানেজার উপাধিটা দিপুর জন্য অবধারিত হয়ে গিয়েছিল।
তাই আমরা ডিম ম্যানেজার দিপুর জন্য সংবর্ধনার ব্যাবস্থা করলাম। বেলুন ফুলানো হবে, কিন্তু আমরাতো বড় হয়ে গেছি, তাই বেলুন না ফুলিয়ে কনডম ফুলানো হল। এই মহান দ্বায়িত্ব পালন করলেন সুজন ভাই। দিপু ভাই যখন মেসে ছিল না তখন সেটা তার দরজায় লাগিয়ে দেয়া হল (দিস ক্রেডিট গোজ টু মি), কেলটুদা সেখানে বেশ সংবর্ধনার বাণী লিখে দিলেন। দিপু ভাই রুমে ফিরে এই অবস্থা দেখে প্রথমে একটু লজ্জা পেল, (ছবি উঠানোর সময় মুখ ঢাকার চেস্টা চলছে) কিন্তু প্রোগ্রাম শেষে বলল, “বেশ মজা হল ঘটনাটাতো গার্লফ্রেন্ডকে জানাতে হয়!” এখন বুঝেন, আমরাতো আর এমনি বলি না, “হি ইজ দিপু, নাম্বার ওয়ান ডিজিটাল পাগল!”
দিপু ভায়ের সংগীত প্রেম নিয়ে একটা ঘটনা না শেয়ার করলেই নয়, সে সব সময় কানে হেডফোন লাগিয়ে র্যাপ সংগীত শুনে।
তার কাছে সেটাই সংগীত বাকি সব ভুয়া। ক্ল্যসিক্যাল সং নাকি একচুয়ালি সং না। কিছু বললেই বলে “রেপ সং কে ২০০২ এ সীকৃতি দেয়া হয়েছে, কিন্তু ক্ল্যাসিক্যাল সং, যে সং তার প্রমাণ কি?” বুঝেন এবার! মাঝে মাঝে কেলটুদা এমনিই বলেন না, “দিপুর সাখে কথা বলা আর নিজের সম্মান নিয়ে টানা টানি করা একই কথা। “
(চতুরে প্রকাশিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।