আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসমাপিকা , দ্বিতীয় পর্ব ।

সত্য সুন্দরকে ব্রত করি জীবনে

অসমাপিকা , শুরুর অধ্যায় Click This Link লীনা অনেক দূরে যতটা দূরে দৃষ্টি দেয়া যায় ততটা দূরে তাকিয়ে থাকে , দেখে না কিছু । তার চোখ কিছু দেখতে পায় না , বোধশক্তিহীন হয়ে অসাড় বসে থাকে চেয়ারে । সামনে পড়ে আছে দীপুর কাপ চা ভরা , নিজেরটাও শীতল । সময়ের সাথে সাথে সব কিছু কি শীতল হয় ! হঠাৎ দূরে চোখ পড়ল একটা রিকশার দিকে , একা দীপু যাচ্ছে ! পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রবি , শান্ত , মিজান আছে তাদের টেবিলে । পরের ক্লাস আরো আধ ঘন্টা পর ।

ব্যাগটা টেনে নিয়ে ওদের টেবিলে বসে খালি চেয়ারটা টেনে নিয়ে । টেবিলের ওপর পড়ে আছে দীপুর নোটবুক , ক্লাসে ব্যবহার করে । রবির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় লীনা , ' কি ব্যাপার , দীপুকে মনে হয় দেখলাম রিকশায় যাচ্ছে কোথাও , ক্লাস করবে না ও '? রবিকে দেখে মনে হল কথা বলতে চাইছে না লীনার সাথে । ক্ষুদ্ধস্বরে বলল , ' তোমারই তো জানবার কথা কেন যাচ্ছে কোথায় কি হয়েছে ওর । কিছু বোঝ না তুমি ? ' শ্লেষ ঝরে পড়ে রবির কথায় ।

শান্ত বলে , ' তুমি পার মেয়ে , তোমরা সব পার ; জাহান্নামে যাক দীপু তাতে তোমার কি ; কেন জানতে চাইছো '? লীনার কান্না পেয়ে যায় , পরিস্তিতি ওকে অনুমতি দেয় না কাঁদবার । সুযোগ পেয়েছে ওরা কথা শোনাবার । মিজান চুপ করে ছিল এতক্ষন । নীরিহ শান্ত-শিষ্ট ছেলে মিজান ভার্সিটিতে ঢুকে ফার্স্ট ইয়ারে একটা ডায়রী গিফট করেছিল লীনাকে । সেখানে শুভেচ্ছা বাণী হিসেবে যা লিখেছিল সেটা অন্যরা জানে নাই কোনদিন ।

মিজান যে লীনাকে পছন্দ করতো সেটাই বা কে জানে লীনা ছাড়া । লীনা বরাবর মিজানের সাথে এমন আচরন করেছে যে মিজান নিজেও অবাক হয়েছে । যেন কিছুই হয়নি কোথাও । লীনা মিজানের দিকে তাকিয়ে জানতে চায় দীপু কোথায় গেছে , কি বলেছে । মিজান যা জানায় তার সারমর্ম হল দীপু লীনার ডেকেছে জেনে উচ্ছ্বসিত হয়ে গিয়েছিল ।

সেই দীপু লীনার টেবিল থেকে ওদের কাছে ফিরে মেজাজ দেখাচ্ছিল । তারপর ওদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিল যার যা ছিল কাল কক্সবাজার যাবে বলে হঠাৎ করে । রবি জানতে চেয়েছিল একা যাবে কিনা । উত্তরে বলেছে তার নিজের সাথে বোঝাপড়া আছে , একাই যেতে চায় সে । আরো নাকি বলেছে , ওর যেদিন ইচ্ছা ফিরবে কেউ যেন খোঁজ না করে ।

বন্ধুরা এ সময়ে হঠাৎ ওর ক্লাস ফেলে যাওয়াকে সমর্থন করছিল না দেখে নাকি বলেছে ওর মাথায় কিছু ঢুকছে না । আরো কি যেন বলতে চাইছিল মিজান । হঠাৎ রবি রেগে ওঠে । মিজানকে ধমক দিয়ে বলে , ' তোর এত কথা বলার দরকার কি ? কাকে বলছিস ? বাদ দেয় '। লীনা উঠে দাড়িয়ে মিজানকে ডাকে ।

ক্যান্টিনের দরজার বাইরে গিয়ে দাড়ায় । মিজানকে কিভাবে কি বলবে গুছিয়ে নিতে সময় নেয় । মিজান বলে , ' দীপু তোমাকে অনেক পছন্দ করে , ও খুব ভাল একটা ছেলে তুমিও জান । তোমার কোথায় সমস্যা ? কেন তুমি দীপুর মনটাকে বুঝতে চাইছো না । আমরা বন্ধু হয়ে কতটা ভূমিকা রাখতে পারি ? তবু বলব তুমি দীপুকে ভালবাসলে ঠকবে না ।

বরঞ্চ ফিরিয়ে দিলে সারাজীবন আর নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না । বলে , লীনা আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি তবু বুঝতে পারি দীপুর মত করে না '। লীনার কোন কথা নাই , যা আছে সে সব ধোপে টিকবে না এখন । মিজানকে বলে , ' তুমি আমার হয়ে দীপুকে বলবে এ সময়ে তার কক্সবাজার যাওয়া হবে না আমার বিশেষ অনুরোধ । কাল সকালে নয়টার ক্লাসের পরে যেন আমার সাথে দেখা করে এখানে ।

আজ রাতে আমাকে ফোন করতে বলবে '। মিজানের সেল নম্বর চেয়ে নেয় লীনা । দীপুরটাও । নিজেরটা মিজানকে দিয়ে বলে , ' তুমি কথা বলবার পর বলবে আমাকে যেন একটা ফোন করে সে , আমি অপেক্ষা করবো ওর ফোনের '। মিজান সম্মতি জানায় লীনার কথার , সেই সাথে রবি আর শান্তর হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেয় ।

বলে দীপুকে সবাই এত ভালবাসে , ছেলেটা কষ্ট পাচ্ছে দেখে ওরা অমন করেছে । লীনা কিছু বলে না , কি বলবে ? ও কি কষ্ট পাচ্ছে না ! নিজেকে নিজের কাছে অসহায় লাগে , এক একবার উপদ্রব মনে হয় । কোনভাবে ও চায় না দীপুর কোন কষ্ট হোক , ক্ষতি হোক , অমঙ্গল হোক । কেউ না জানে ওর মন জানে দীপু কে , কতখানি তার কাছে । চলবে.... পরের অধ্যায় Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।