_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________
তোমার সৃষ্টির পথে
আহমদ মিনহাজ
প্রথম অংশ_ Click This Link
একদিকে তিনি বাস্তবের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়েও শেষপর্যন্ত আদর্শমুখীন, অন্যদিকে আদর্শকে ব্যক্ত করতে যেয়ে তিনি বাস্তবমুখীন। এবং এই উভয় পথের সংঘর্ষ আমারা তাঁর জীবনের প্রথম পর্বেই পাই; তবে প্রায় শেষ লগ্নে। যখন আস্তে আস্তে জমিদারির বোঝা তাঁর মাথায় চেপে বসতে যাচ্ছে এবং তিনি বেশ দীর্ঘ সময়ের জন্যে আস্তানা গাড়তে চলেছেন পুর্ববঙ্গে, পদ্মার তীরে। মাটি ও মানুষের ব্যাপক নৈক্যট্যে এ সময়ই তাঁকে আসতে হয়েছিল। পূর্বের মতো ছাড়া-ছাড়া ভাবে নয়, ব্যাপকভাবে এবং ব্যাপক সংযমে।
হৃদয়ের আবেগকে সেখানে খুব বড় করে দেখার সুযোগ ছিল না। তাতে স্থান পাচ্ছিল অভাব-ক্ষুধা-যাতনা সম্পর্কে অভিযোগ অনুযোগ বেদনা সর্বোপরি বিবেচনা। তিনি দেখছিলেন জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনা, এও দেখছিলেন কি নির্মম যাতনা বুকের খাঁচায় পুষে এরা দিন যাপন করে চলেছে। তাঁকে বিচলিত করে তুলেছিল মানুষের ভয়াবহ দারিদ্র্য। সেই দরিদ্র জনসাধারণের দায়ভার বহনের ক্ষমতা ‘ক্রিম অফ ক্যালকাটা’ এই কবির ছিল না।
তবে শোষণের স্বরূপটা ক্রমে পরিষ্কার হয়ে আসছিল তাঁর কাছে; তিনি দাঁড়াতে চাচ্ছিলেন মাটির উপর। যার শুরু জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় (১৮৯১-১৯২১)। এ পর্বে এসে এক বৃহত্তর উপলব্ধিতে আপনাকে বিন্যস্ত করার তাগিদেই রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিন্তা ও কাজের ভেতরে একটা ভারসাম্য আনতে সচেষ্ট হন। আমরা শুনি- “আমাদের ভদ্রসমাজ আরামে আছে কেননা আমাদের লোকসাধারন নিজেকে বোঝে নাই এই জন্যই জমিদার তাহাদিগকে মারিতেছে, মহাজন তাহাদিগকে ধরিতেছে, মনিব তাহাদিগকে গালি দিতেছে, পুলিশ তাহাদিগকে শুষিতেছে, গুরুঠাকুর তাহাদের মাথায় হাত বুলাইতেছে, মোক্তার তাহাদের গাঁট কাটিতেছে আর তাহারা কেবল সেই অদৃষ্টের নামে নালিশ করিতেছে যাহার নামে সময়-জারি করিবার জো নাই। ” ৯ বিপুল এই লোকসাধারণের মুক্তির জন্য প্রয়োজন ছিল যাবতীয় প্রথাচার, রাজশক্তি ও সাম্যাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক চেতনার বিকাশ।
যা আসতে পারে একমাত্র কর্মশক্তির জোরে। কর্মশক্তি বাড়বে কিভাবে? যন্ত্রের প্রায়োগিক উপযোগিতা সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোনো পথ আছে কি? রবীন্দ্রনাথ বুঝতে পারছিলেন কর্ম একমাত্র কর্মই এই বিপুল জনগোষ্ঠীর চোখ খুলে দিতে পারে। সেই প্রেরণা থেকেই পুত্র রথীন্দ্রনাথকে পরে আমেরিকা পাঠিয়েছিলেন কৃষি-বিদ্যায় আধুনিক জ্ঞান লাভ করে আসার জন্য। শান্তিনিকেতনকে ক্রম-প্রসারিত করার পেছনেও কাজ করেছিল স্বদেশের মঙ্গল চিন্তা; যুগপৎ কর্ম ও আত্মশক্তির উদ্বোধনের তাড়না। দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ নিজের প্রয়োজনেই পাশ্চাত্য সভ্যতার দুয়ারে হাত পাতছেন।
প্রাচ্যের দেয়ার ক্ষমতা যে সীমিত হয়ে এসেছে এটা না মেনে উপায় ছিল না তাঁর। আমরা দেখি রবীন্দ্রনাথ জীবনের এই পর্বে একই সাথে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক, বিনয়ী এবং প্রতিবাদী সর্বত রাজনীতিসচেতন হয়ে উঠছিলেন। জেগে উঠছিলেন রাজনীতির নিজস্ব বিশ্বাসের তাপে। তার চাইতেও বড় কথা মানুষ তাঁর সমস্ত মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণতি পাচ্ছিল। বিশেষ করে আর্থ-সামাজিক এবং রাষ্ট্রিক পরিবেশে বিপর্যস্ত মানুষের মনোবিকার তাঁকে আলোড়িত করেছিল।
যার থেকে এ বিশ্বাসে তিনি উপনীত হয়েছিলেন যে, মানুষের কর্মের ও ভাবের নিবিড় ঐক্য-বন্ধন স্থাপিত হয়নি। আর হয়নি বলেই দেশে দেশে, জাতিতে জাতিতে শোষণের পথটা এত সরল এত উন্মুক্ত। আমাদের বাঙালি জীবনে এর আক্রমণ চরম থেকে চরমতর হয়ে পড়ছিল। একে ঠেকানোর ক্ষমতা আমরা রাখি না, যেহেতু “মনোজীবন আমাদের মধ্যে পরিণতি লাভ। করে নাই- আগাগোড়া বাঁধিয়া যায় নাই।
বেদনা ও বেদনার আভাস সে অনুভব করে, কিন্তু তাহার স্থায়িত্ব নাই। অনুভূতি হইতে কার্যসম্পাদন পর্যন্ত অবিচ্ছেদ্য যোগ ও অনিবার্য বেগ থাকে না। কাজের সহিত ভাবের, ভাবের সহিত মনের সচেতন নাড়ীজালের সজীব বন্ধন স্থাপিত হয় নাই। ”১০ আমাদের চিন্তায় ও কর্মে সামঞ্জস্যের অভাব আছে। অভাবটা ব্যথিত করে ছিল রবীন্দ্রনাথকে।
সেই ব্যথাকে তিনি মেলে ধরেছেন তাঁর সৃষ্টি ও কর্মে। তাঁর ব্যক্ত মতানুসারে আমরা বলতে পারি, রবীন্দ্রনাথ চান সংযোগ: দেহ ও মনে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে, অতীত ও বর্তমানে। পাশ্চাত্যের কর্মের দিকটা আমরা নেবো তবে নগদানগদি নয় তাতে প্রাচ্যের নাড়ীর যোগটা সংযোজিত হবে অর্থাৎ “সমস্ত পৃথিবীর সঙ্গে ব্যবহার বন্ধ করিয়া, একঘরে হইয়া দুই বেলা দুই মুঠা ভাত বেশি করিয়া খাইয়া নিদ্রা দিলেই তো আমাদের চলিবে না। সমস্ত পৃথিবীর সঙ্গে দেনা পাওনা করিয়া তবে আমরা মানুষ হইতে পারিব। যে জাতি তাহা না করিবে বর্তমান কালে সে টিকিতে পারিবে না।
”১১ এই বোধ রবীন্দ্রনাথের বাস্তবনিষ্ঠা ও পর্যবেক্ষণ শক্তির প্রকাশ; প্রথমপর্বের আবেগ ও প্রাচ্য-রক্ষণশীলতার বিপরীত উচ্চারণ। কিন্তু তারপরও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের বিরোধ মেটাতে তাঁর ভূমিকা কতখানি কার্যকর হয়েছে তা বিচার সাপেক্ষ, কেননা পশ্চিমাদের সাথে তিনি যে সম্বন্ধ পাততে চেয়েছিলেন তাতে স্থুল রাজনীতির দুর্গন্ধ ছিল না, কিন্তু বৈষয়িকতার আধিপত্য হৃদয়ের যোগকে প্রষ্ফুটিত হতে দেয়নি। পশ্চিমা বিশ্বের কেজো দিকটাকে রবীন্দ্রনাথ যত বৃহৎ আকারে দেখেছিলেন তার মনস্তত্ত্বকে তত ব্যাপক করে দেখেননি। তিনি দেখেছিলেন যন্ত্রের ঘানি টানতে যেয়ে পশ্চিম স্পষ্ট দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে বণিক আধিপত্য আর শ্রম-পীড়নের বাজারী অর্থনীতি।
রবীন্দ্রনাথ পুঁজিবাদের স্বরূপকে চিনতে পেরেছিলেন তবে সে চেনাটা সম্পূর্ণ ছিল না। সম্পূর্ণতা এসেছিল ১৯৩০ এর রাশিয়া ভ্রমণের পর। আপাতত রবীন্দ্রনাথ দেখতে পেয়েছিলেন, “শক্তির ধারাটা এখন ক্ষত্রিয়কে ছাড়িয়া বৈশ্যের কূলে বহিতেছে। লোকসাধারণের কাঁধের উপর তাহারা চাপিয়া বসিয়াছে। মানুষকে লইয়া তাহারা আপনার ব্যবসায়ের যন্ত্র বানাইতেছে।
মানুষের পেটের জ্বালাই তাহাদের কলের স্টীম উৎপন্ন করে। ”৯ অথচ “পূর্বকালের ক্ষত্রিয়নায়কের সঙ্গে মানুষের যে সম্বন্ধ ছিল সেটা ছিল মানবসম্বন্ধ। দুঃখ কষ্ট অত্যাচার যতই থাক, তবু পরস্পরের হৃদয়ের আদান প্রদান ছিল। এখন বৈশ্য মহাজনদের সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধ যান্ত্রিক। কর্মপ্রণালী নামক প্রকাণ্ড একটা জাঁতা মানুষের আর-সমস্তই গুঁড়া করিয়া দিয়া কেবল মজুরটুকুমাত্র বাকি রাখিবার চেষ্টা করিতেছে।
”৯ অথচ তাঁর এই চিন্তাধারা মার্কসীয় তত্ত্বের সাথে মিলে গেলেও শেষপর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ আদর্শ মানবতাবাদী একজন বুর্জোয়া মাত্র। ক্ষত্রিয়ের নিপীড়ন তাঁর কাছে অনেকটা সহনীয় কারণ সেখানে হৃদয় আছে; লোকসাধারণের সাথে যোগাযোগের সরল একটি পথ আছে। কিন্তু ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য কেউই যে লোকসাধারণের মুক্তির উপায় নয় এবং ঐ যন্ত্রকে আশ্রয় করেই পশ্চিমে ব্যাপক-জনসাধারণ শিক্ষিত ও সচেতন হয়ে উঠছে তাকে উপেক্ষা করা রবীন্দ্রনাথের পক্ষেও সম্ভব হয়নি। নিজেই বলেছেন, “য়ুরোপে শ্রমজীবীরা যেমনি বলিষ্ঠ হইয়াছে অমনি সেখানকার বণিকরা জবাবদিহির দায়ে পড়িয়াছে। ”৯ বস্তুত কৌশল এবং বলপ্রয়োগ পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার নিয়ামকশক্তি।
সামষ্টিক লোকসাধারণকে জিম্মি হতে হয় সীমিতসংখ্যক বিত্তবান পুঁজিপতিদের হাতে। পূর্ণাঙ্গ পুজিবাদী সমাজে তাই পরিণত হয়েছে রেওয়াজে। বুর্জোয়া চরিত্রের পালাবদল সেখানে ঘটে কিন্তু শোষণের চেহারা পাল্টায় না। সব কিছু যেন একটি বিশাল বাজার অভিমুখে ছুটে চলে সেখানে। তাই একমাত্র অর্থ এবং কর্মের শক্তিকে মুখ্য মনে হওয়া স্বাভাবিক।
রবীন্দ্রনাথও একটি ক্রমঅবনতিশীল, মন ও মানবতাবিহীন রাষ্ট্রিক কিন্তু শোষক বুর্জোয়া এলিট সমাজকে পাশ্চাত্যে প্রত্যক্ষ করে শিউরে উঠেছিলেন; তাঁর শাণিত চেতনা এর মধ্যে কর্মের বিকাশ দেখেছে; হৃদয় ও মনের ঔজ্জ্বল্য দেখেনি। একটি শুভ্র আবরণ কামনা করেছিলেন তিনি; পাশ্চাত্যের গতির উন্মাদনায় সে আবরণ খুঁজে পাননি। কিন্তু আবরণ আছে, তা আবিষ্কারের পথটা প্যাঁচালো। ঐ সামষ্টিক লোকসাধারণ যাতে মুক্তি পায় অন্তত তাদের বাঁচাবার আকাক্ষা থেকে পশ্চিমা সভ্যতা পৃথক একটি পথ সৃজন করে নিয়েছে। যাঁরা এ পথের যাত্রী তাঁরা কেউই পুঁজিবাদী সমাজ-ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারেননি।
তাঁরা ছিটকে পড়েছেন বারবার। যেহেতু একটু আমূল বুর্জোয়া কাঠামোয় সংহত হয়েও পশ্চিমা লোকসাধারণ এবং বুদ্ধিজীবী মহলের মধ্যে একটি যোগাযোগের সেতু তাঁরাই তৈরি করেছেন। তাঁদের বুর্জোয়া পরিচয় ছাপিয়ে মানুষ পরিচয়টাই দিন দিন মুখ্য হয়ে উঠেছে। তাঁদের কর্মে কেবল কর্মের নয় হৃদয়ের শিক্ষাও ছিল। যে শিক্ষা জন্ম দিয়েছে বিপ্লব, চিরচেনা পথে এঁকে গেছে পরিবর্তনের চিহ্ন।
যে পরিবর্তনের গভীরে পশ্চিমা-সভ্যতার মনপাখিটি বসে আছে। যুদ্ধ শোষণ কিংবা নির্যাতনের মাধ্যমে যারা তাকে বাঁধতে চায় তাঁদেরকে সে ধরা দেয়নি কখনো। তাকে সংগোপনে বয়ে বেড়ান প্রাগ্রসর চিন্তানায়কেরা। বাঁচিয়ে রাখেন লোকসাধারণের খাঁচায়। মনপাখি কথা বলে বলেই ধ্বংস অমানবিকতা-শোষণপীড়নের আবর্জনা থেকে মাথা তুলেছিল ইউরোপ।
সময়ের অনিবার্য সংঘটনকে মেনে নিয়ে, পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের গ্রহদোষটাকে সমালোচনা করে নতুন পথের নিশানা তার চিন্তানায়কেরা বারেবারেই উড়ান। শোষণের যে স্থায়ী-অবসান রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন, যে হৃদয়ের বিকাশ ও পূর্ণতার স্বপ্ন দেখেছিলেন পশ্চিমা সভ্যতার নাগরিক- বৈশিষ্ট্যে তা আজও আকার পায়নি। পাওয়া সম্ভবও না। কেননা পৃথিবীতে প্রত্যেকটি আদর্শই এক ধরনের ইউটোপিয়ার জন্ম দেয়; মানুষের স্বভাবজ সীমাবদ্ধতা ভেঙে অতদূর যাওয়া দুষ্কর। তাই প্লেটোর বক্তব্য অনুসারে বলা উচিত, আমাদের লক্ষ্য আদর্শকে বাস্তকে পরিণত করা নয়।
ঐ বাস্তবকে আদর্শের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া। রুশ বিপ্লব এই পথ ধরে এসেছিল বলেই রাশিয়া চমৎকার একটি আদর্শ গড়ে নিতে পেরেছিল; রবীন্দ্রনাথ আশান্বিত হয়ে উঠেছিলেন তা দেখে। কিন্তু লেনিনের মৃত্যুর পর থেকে রাশিয়া পদ্ধতি পাল্টে ফেলে আদর্শকে বাস্তবে রূপ দিতে চাইল। এবং যে-যন্ত্রকে ভয়ের চোখে দেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ সেই যন্ত্রই-কি দ্বিতীয়-বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রাশিয়াকে গ্রাস করেনি? শ্রমিক শ্রেণীর নিরঙ্কুশ একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি আদর্শ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সাম্য গড়ার জন্য সেভিয়েতের প্রাচীন স্থবির সমাজ ব্যবস্থার সাথে একগুঁয়ে, জেদী এবং অবাধ্য সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার কথা বলেছিলেন লেনিন। “The dictatorship of the proletariat,” “is a stubborn struggle-bloody and bloodless, violent and peaceful, military and economic, educational and adminstrative –against the forces and traditions of the old society” ১২ লেনিনের এ স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে যেয়ে স্টালিন জোর দিলেন কৃষি ও শিল্পের সাম্যের প্রতি কিন্তু শেষপর্যন্ত কৃষিকে ছাপিয়ে উঠলো শিল্প।
তিনি ১৯২৫ সালে-ই ঘোষণা দিয়েছিলেন: : At the present time we have an industrial peoletarial of about 4.000,000. A small number, of course; but it is something to go on with in building socialism and in building up the defence of our country to the te4rror of the enemies of the proletariat”12 wKš‘ “We cannot and must stop there, we need the electrification of the principal regions of our country, the organisation of agricuture on a co-operative line, and a highly developed metal industry”12 হ্যাঁ, স্টালিন সেটা করতে সক্ষম হচ্ছিলেন। কিন্তু যে পথে উন্নয়ন এসেছিল তা রাশিয়ায় অর্থৗনতিক সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা নিয়ে এলেও সংকট কি তৈরি করেনি? করেছে বৈকি। আমলাতন্ত্রের প্রসার বেড়েছে, কৃষকরা উন্নত প্রযুক্তি পেলেও সুষম সমবায় নীতিকে নিজে অঙ্গভূত করতে পারেনি। তার চেয়েও বড় ব্যর্থতা হচ্ছে ক্রমপ্রসারমান যান্ত্রিক শ্রমিক এবং আমলা এ-দুটো স্পষ্ট শ্রেণীর বিকাশ ঘটিয়েছিল; যার অন্তর্মুখী সংঘাতের জের রাশিয়া টেনেছে এই সেদিন তক্। অর্থাৎ সংকটের, সংঘাতের অবসান কখনই এ পৃথিবী থেকে মুছে যাবে কিনা তা আজও তর্কসাপেক্ষ।
এই তর্কের জোয়ারে ভাসমান বিশ্বে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন কিছু সনাতন ধ্রুব বিশ্বাস আঁকড়ে পড়ে থাকা একজন মহৎ মানুষ। তিনি কবির চোখে নিয়ে কল্পনা করতেন উচ্চ আত্মিক-আদর্শের আর বাস্তবের ক্ষত-যন্ত্রণায় বিক্ষত হয়ে খুঁজতেন নিরাময়ের ঔষধ। যা তাঁকে পরিণত করেছিল একজন সংঘাততাড়িত আত্মমগ্ন মানুষে; পাশ্চাত্যবাসীরা যে মানুষকে ভাবতো সন্ত বা ঋষি। আসলে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ভয়াল আগ্রাসন রবীন্দ্রনাথকে এতটাই বিপর্যন্ত করে তুলেছিল যে তিনি মানবসভ্যতার উপর বিশ্বাস হারাতে বসেছিলেন। পাশ্চাত্যের শরীর হাতড়ে একটি মনকে তিনি তাই আবিষ্কার করতে পারেননি; সে ধৈর্য্যও তাঁর ছিল না।
তবে জীবনের তৃতীয়-পর্বে (১৯২১-১৯৪১) এসে ধীরে ধীরে ধীরে একটি অপেক্ষাকৃত স্থির-নিশ্চিত বিশ্বাসে তিনি এগিয়ে চলেছিলেন। স্বীকার করেছিলেন অমানবিকতার মধ্যেও পশ্চিমা সভ্যতার একটি নিজস্ব অবলম্বন আছে। এই নিজস্বতাই হয়তো তার মানবিক মূল্যবোধকে লালন করে তাকে বাড়িয়ে তুলবে। তাই দীনবন্ধু এন্ডুজের প্রসঙ্গ টেনে যা বলেছিলেন তা গোটা পশ্চিমা সভ্যতার মনস্বী মানুষ সম্বন্ধেও বোধ হয় প্রযোজ্য। বলেছিলেন, “এঁদের পরিচয় আমার জীবনে একটি শ্রেষ্ঠ সম্পদরূপে সঞ্চিত হয়ে রইলো।
আমার মনে হয়েছে ইংরেজের মহত্ত্বকে এরা সকলপ্রকার নৌকাডুবি থেকে উদ্ধার করতে পারবেন। এঁদের যদি না দেখতুম এবং না জানতুম তাহলে পাশ্চাত্য জাতি সম্বন্ধে আমার নৈরাশ্য কোথাও প্রতিবাদ পেতনা। ”১৩ জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এ-পর্বে এসে রবীন্দ্রনাথকে মানব সভ্যতার উপর স্থির-নির্দিষ্ট এবং সত্য বিশ্বাসে উপনীত হতে দেখে আমাদের আশা জাগে। এ বিশ্বাস অর্জনে সহায়ক হয়েছিল পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের এবং স্বদেশের খেয়ালি রাজনৈতিক আচার-আচরণের মত্ততা। এ-সবই তাঁকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে বাধ্য করেছিল যে, আগ্রাসন ও নিপীড়ন, কৃত্রিমতা ও স্থবিরতার কোনো জাতি-অঞ্চল ভেদ নেই।
সে সর্বত্র আসন গাড়তে পারে। তাই সর্বত্র একই সাথে তার শোধন-পরিশোধন কাম্য। এ বিশ্বাস তিনি অর্জন করেছিলেন বেশ কয়েকবারের জাপান সফর থেকে। ১৯৩৩ সালে বিষাদাক্রান্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, “নতুন যুগের মানুষের সব জাগ্রত চৈতন্যকে অভ্যর্থনা করবার ইচ্ছায় একদিন পূর্ব এশিয়ায় বেরিয়ে পড়েছিলুম। দেখলুম জাপান য়ুরোপের অস্ত্র আয়ত্ত করে একদিকে নিরাপদ হয়েছে, তেমনি অন্যদিকে গভীরতর আপদের কারণ ঘটলো তার রক্তে প্রবেশ করেছে যুরোপের মারী, যাকে বলে ইম্পীরিয়ালিজম, সে নিজের চারদিকে মথিত করে তুলছে বিষ।
”১৪
“এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে
নখ যাদের তীক্ষ্র তোমার নেকড়ের চেয়ে, এল মানুষ ধরার দল
গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে
সভ্যতার বর্বর লোভ
নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা।
[আফ্রিকা, পত্রপুট]
সাম্রাজ্যবাদের সীমাহীন বর্বরতার বিরুদ্ধে কবির দৃপ্ত উচ্চকিত স্বর তাঁর বিশ্বাস ও মানবতাকে প্রমাণ করলেও প্রশ্ন জাগে তিনি এ থেকে মুক্তির কোনো পথ আমাদের দিয়ে যেতে পেরেছিলেন তিনি না? তাঁর সমগ্র-জীবনে যে বহুবিস্তৃত অধ্যায়সমূহ সেখানে রবীন্দ্রনাথকে, প্রতিবাদী এবং প্রতিরোধীর ভূমিকায় দেখা গেলেও ঠিক বিপ্লবী একটি লক্ষ্য আমরা পাই না। তিনি যেন দূর থেকে সব কিছুর একটা সমাধান বাতলে দিয়ে চেয়েছেন। তাঁকে আমরা মাটি ও মানুষের মধ্যে, সভ্যতা ও সমাজকাঠামোর মধ্যে স্বেচ্ছাবিহারী হিসাবে পাই না। তবে মানবিক চেতনার একটি অবিস্মরণীয় আমেজ পাই যখন তাঁর কণ্ঠে বাজে-
দুঃখ সহার তপস্যাতেই হোক বাঙালির জয়-
ভয়কে যারা মানে তারাই জাগিয়ে রাখে ভয়,
মৃত্যুকে যে এড়িয়ে চলে মৃত্যু তারেই টানে,
মৃত্যু যারা বুক পেতে লয় বাঁচতে তারাই জানে।
একই কণ্ঠ ব্যাপ্ত হয় জীবনের মেষ মুহূর্তগুলোতেও। আত্মবিশ্বাসে অনুরণন ওঠে, “আশা করবো, মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পুর্বাচলের সুর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে আর একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে। ”১৩। তাঁর এ আশাবাদকে স্বাগত জানিয়েও কিছুটা স্পর্ধা রেখে বলতে হয়, রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে আমরা আত্মশক্তিতে উঁচু ও ঋজু হয়ে দাঁড়াবার শিক্ষা পেলেও সময়ের ওলোট-পালোট ঘটনাপ্রবাহকে মানিয়ে নূতন পথসৃজনের দিকনির্দেশনা পাইনি। পেয়েছি স্থির, স্পষ্ট, আবরণহীন, উন্মুক্ত, সরল কিন্তু সুষম রবীন্দ্রনাথকে; পেয়েছি ভাবুক, মরমী, রহস্যময় এক রবীন্দ্রনাথকে।
এই রবীন্দ্রনাথ সংঘাত চান না, দুঃখের স্থূল পীড়ন চান না, আবার অমানুষিক কর্মোদ্দীপনাও তাঁর অপছন্দ। তিনি চান অল্প ব্যথা অল্প আঘাত অল্প পীড়ন এবং এর মধ্য থেকে স্রোতস্বিনী অথচ সহনীয় আনন্দের ফল্গুধারা। রবীন্দ্রনাথ চান, স্নেহ-মায়া-মমতা-প্রেম-ভালবাসা’র একটি উদ্যান। সেখানে সমস্যা হচ্ছে, তাঁকে সমগ্র দিয়ে বুঝতে হয়। গল্প-উপন্যাস-নাটক-কবিতা-গান-প্রবন্ধ-চিত্রকলা এমনি কি ধর্ম-রাষ্ট্র ও বিজ্ঞান চিন্তায় তাঁর বহুমুখী প্রবাহ ভাব এবং কর্মের মধ্যে এমন একটি অন্তর্মুখী সংঘাত তৈরি করেছে যে সমকাল এবং আগামীকালের পক্ষেও তাঁকে নিয়ে প্রগতি ও প্রতিক্রিয়াশীলতার দ্বন্দ্ব-বিরোধ থেকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
একটি জাতির মনোচেতনায় এর প্রভাব, তার ইতি-নেতির প্রশ্নটি এর সঙ্গে জড়িত। জড়িত পশ্চিমা সাহিত্যের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য ও সমকক্ষতার প্রশ্নটিও।
সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি
১। J. Keats, ‘The Terror of Death’, The Golden Treasury, Oxford University Press P. 198.
২। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘অতসীমামী ও অন্যান্য গল্প’, মানিক গ্রন্থাবলী (১) পৃ: ২৫৭।
গ্রন্থালয় প্রাইভেট লিমিটেড।
৩। ২৭ শ খণ্ডে প্রকাশিত কালাম-ইউহোন্না খণ্ডের ২২ অধ্যায়ের ১৭শ আয়াত ইঞ্জিল শরীফ পৃ: ৭১৭। মথি খণ্ডের ৬’ অ্যধায়ে ২২ এবং ২৩শ আয়াত-ঐ পৃ: ১৪।
৪।
মার্কস-ইঙ্গেলস, ‘কমিউনিষ্ট পার্টির ইশতেহার’ পৃ: ৩৮। প্রগতি প্রকাশন, মস্কো।
৫। উইল ডুরান্ট, দর্শনের ইতিকাহিনী, অনু: আবুল ফজল পৃ: ৩০৬। বাংলা একাডেমী ১৯৮০।
৬। ম্যাক্সিমগোর্কি, ভূমিকা, আন্তন চেখভ (গল্প ও ছোট উপন্যাস) পৃ: ১৮। রাদুগা প্রকাশন তাসখন্দ। চেখভের সৃষ্টি কর্মে আমরা একটি নরম কোমল কিন্তু বিষণ্ণ-পরিহাসপ্রিয় অথচ প্রতিবেশতাড়িত মানুষের সাক্ষাৎ পাই। মানুষ যে নীরস-একঘেয়ে ক্লান্তিকর জীবনে নিজেকে ক্ষয় করে চলেছে তা দেখাতে এবং তাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই চেখভ হাতে নেন বিদ্রুপ, পরিহাস আর কৌতুকের কঠিন চাবুক।
তাই জীবনের লক্ষ্য সম্বন্ধে তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণ কঠোর কায়িক শ্রম থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবেই। ওদের বোঝা হালকা করে দিতে হবে, যাতে তারা হাঁফ ফেলবার অবকাশ পায়, যাতে ওদের সমস্ত জীবনটা কেবল চুল্লীর সামনে, ধোবীখানায় কিম্বা মাঠে খাটিতে খাটতে না কেটে যায়, যাতে তারা নিজেদের আত্মার কথা, ঈশ্বরের কথা চিন্তা করারও অবকাশ পায় এবং তাদের আধ্যাত্মিক শক্তিকে বিকশিত করার সুবিধা পায়। ” [দ্র: বনেদী বাড়ি(শিল্পীর গল্প) পৃ: ২৬০-ঐ] যার ফলে “মানুষ যখন অনুভব করবে তার সত্যিকার ব্রত কি, তখন তার তৃপ্তি হতে পারে একমাত্র ধর্ম বিজ্ঞান আর শিল্পে, এসব বাজে জিনিসে নয়। ” [ঐ]
৭। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি, পৃ: ৩৭।
বিশ্বভারতী প্রকাশনা।
দ্বিতীয়বার বিলাত-যাত্রায় রবীন্দ্রনাথ যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন এবং কিছু জিজ্ঞাসা তাঁর মনে এমন গেড়ে বসে যায় প্রভাবে প্রাচ্য পারিবারিক কাঠামো নিয়ে তিনি চিন্তান্বিত হয়ে পড়েন। পাশ্চাত্যের জন ষ্টুয়ার্ট মিলের ও অন্যান্য অনেকের চিন্তাধারার সাথে ঐক্যে আসতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ। তাই একটু ঘুরিয়ে বলেছিলন, “যদিও বিদেশীয় সমাজ সম্বন্ধে কোনো কথা নিঃসংশয়ে বলা ধৃষ্টতা, কিন্তু বাহির হতে যতটা বোঝা যায় তাতে মনে হয় য়ুরোপে সভ্যতা যত অগ্রসর হচ্ছে স্ত্রীলোক ততই অসুখী হচ্ছে। ” [দ্র:-য়ু-যা-ডা পৃ: ৪০] রবীন্দ্রনাথের কাছে নারী কেন্দ্রানুগ শক্তি।
সে পরিবার কাঠামোকে ধরে রাখবে তার স্নেহ মমতা ও ভালবাসা দিয়ে। তার আধুনিকতার পরিমাপ করা হবে পরিবার ও মূল্যবোধের প্রতি তার আকর্ষণ ও দায়বদ্ধতা থেকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফলে পশ্চিমের সভ্যতা নারীকে কেন্দ্রানুগ না রেখে কেন্দ্রাতিগ হতে বাধ্য করছে-“তা আমার মনে হয় আমাদের সামজের যে রকম গঠন তাতে সমাজে ভালোমন্দ যাই হোক আমাদের স্ত্রী লোকেরা বেশ এক রকম সুখেই আছে। ” [য়ু-যা-ডা পৃ: ৪৮]
অথচ পশ্চিমা সমাজে পরিবারে স্বাভাবিকবৃত্তি নষ্ট হয়ে পড়ায় মেয়েদের মৌচাক ভেঙ্গে যাচ্ছে। তবে এ রক্ষণশীল প্রাচ্য মনোভাবের পরও সভ্যতার গতি ও তার দাবি রবীন্দ্রনাথ এড়াতে পারেননি।
তাই বিবিধ সমালোচনার পরও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, মেয়েদের বেরিয়ে আসার এবার সময়, কেবল মাত্র পরিবার-প্রতিপালন আমাদের একমাত্র কাজ বলে ধরে নিলে চলবে না। ” [য়ু-যা-ডা পৃ: ২৮১] সুতরাং “মেয়েদের অবস্থারও পরিবর্তন আবশ্যক। এখন কেবল তাদের গৃহের সামগ্রী করলে জলবে না। তাদেরও জাগ্রত হয়ে আমাদের জাগ্রত করতে হবে। ”[ঐ]
৭।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি, পৃ: ২৩৯/২২২।
৮। উৎস ও ব্যাখ্যান গল্পগুচ্ছের গ্রন্থপরিচয় দ্রষ্টব্য পৃ: ১০০৮। পুস্তকমালা বাংলাবাজার, ঢাকা।
৯।
লোকহিত দীপিকা সংকলন গ্রন্থ পৃ: ৮২৩, বিশ্বভারতী গ্রন্থালয় ১৩৭১।
১০। বিদ্যাসাগর ঠা:, ঐ পৃ: ৩২৪। ঐ।
১১।
ভূমিলক্ষী-ঐ পৃ: ৮২৯/ঐ।
৯। লোকহিত ঐ পৃ: ৪১২/৪২১/৪২৫। ঐ।
১২।
Concerning Questions of Leninism (iv) J. V. Stalin-On the opposition, P. 300, Foreign Languages Press-Peking 1975./Work of xiv Conference of R. C. P (B) (Ma) ঐ ঐ
১৩। রবীন্দ্রনাথ, সভ্যতার সংকট, পৃ: ৬৫-৬৬। প্রবন্ধ সম্ভার, ১৯৮৩।
১৪। আহমদ রফিক, আরেক কালান্তরে- পৃ: ১১৭/ বাংলা একাডেমী ১৯৭৭।
বিখ্যাত ‘আফিকা’ কবিতাটি রচনারও পূর্বে রবীন্দ্রনাথ তাঁর মানবিক বোধের স্বাক্ষর রেখেছেন ‘সংঘাত’ নামক কবিতাটিতেও। কবিতাটি তাঁর ‘নৈবেদ্য’ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে।
শতাব্দীর সূর্য আজি রক্ত মেঘমাঝে।
-হিংসার উৎসবে আজ বাজে
অস্ত্রে অস্ত্রে মরণের উন্মাদ রাগিনী
ভয়ংকরী দয়াহীন সভ্যতা-নাগিনী,
তুলিছে কুটিল ফণা চক্ষের নিমিষে,
গুপ্ত বিষদন্ত তার ভরি তীব্র বিষে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।