আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপাচার্যের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা, কর্মকর্তাকে মারধর



প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গত শনিবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার থেকে ক্লাস শুরু হয়। প্রথম দিনেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ফলে উপাচার্য তাঁর কক্ষে ঢুকতে পারেননি। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মকর্তারা আজ সোমবার ও কাল মঙ্গলবার দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস শুরুর আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের কক্ষে তালা দেন। বিষয়টি জেনে উপাচার্য আর তাঁর কার্যালয়ে আসেননি। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা চমক চন্দ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে মারধর করে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজন পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী। চমক চন্দ অভিযোগ করেন, ‘আমি সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ১০-১২ জন ছাত্র আমার শার্টের কলার ধরে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকে। এদের মধ্যে আমি তিন-চারজনকে চিনেছি। এরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। বিষয়টি আমি অন্যান্য কর্মকর্তাকে জানানোর পর সবাই মিলে বৈঠক করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে দুই দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন।

’ উপাচার্য নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার স্বার্থে ক্লাসে যেতে হবে। তবে চমক চন্দকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমল কান্তি মজুমদার দাবি করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ায় সবাইকে মিষ্টি বিতরণ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় চন্দ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীকে নাজেহাল করে। সেটা আমরা রেজিস্ট্রারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ’ উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা এই উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।

’ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানদণ্ড কমানো, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের নামে ছাত্রাবাসের নামকরণ বাতিলসহ ২১ দফা দাবিতে গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগ। উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ তোলা হয়। পরদিন ১৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা জানান, গতকাল সকালে ছাত্রলীগের ১৪-১৫ জন নেতা-কর্মী শুধু ক্লাস হবে বলে ছাত্রছাত্রীদের ডেকে জানিয়ে দেন। তবে কোনো পরীক্ষা হবে না।

এ অবস্থায় সকালে ক্লাস শুরুর প্রস্তুতিও চলছিল। হঠাৎ করে একজন কর্মকর্তার ওপর হামলা হলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র বলেন, দশম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে না পারলে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। ছাত্রলীগ নামধারী ১৪-১৫ জন ছেলের হাতে ক্যাম্পাস জিম্মি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্যোগ না নিলে দশম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.