সকালে ঘুম ভেঙেছে ফোন পেয়ে। বউ(হবু) ফোন করেছে।
-তুমি এখনো ঘুমে??
-হুমম, এখন টের পেলাম।
-সারারাত কি কর? আমার সথে তো কথা বলনি। এত দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে কেন?
-সিনেমা দেখছি।
তোমার না পড়াশোনা করার কথা, সিনেমা কেন দেখলে?
-ভাল একটা সিনেমা পাইলাম তো...
-অফিসে যাবে না?
-হুমমম, এক্ষুনি রওনা হব।
-আমার পাঁচ মিনিট?
বলে রাখি প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে ওঠার পর পানি খেয়ে প্রথম পাঁচ মিনিট বরাদ্দ তার জন্য। আজ একটু তাড়াতাড়ি বেরুতে হবে, তাকে বল্লাম রেডি হয়ে ফোন দেই।
- তোমার সব জায়গায় সময় হয়। সিনোম দেখ-আড্ডা দাও-চ্যাট কর-ব্যায়াম কর- কিন্তু আমার বেলায় সময় নেই, ব্যস্ত আছি, তাই না?
-না, তা হবে কেন?
-তবে? আমি কখন থেকে বসে আছি ফোনের জন্য।
ও আবারো বলে রাখি, আমাকে ফোন দিয়ে ঘুম ভাঙানো যাবে না। যখন ঘুম ভাঙবে তখন কথা বলব-এরকমই কথা হয়ে আছে।
-এখন আমার সথে কথা বলতে হবে।
-না এখন গোসল করে অফিসে যেতে হবে।
-আমার মেজাজ খারাপ করবে না।
-মানে? তুমি সিচুয়েশন বুঝবে না?
-আমার তো বোঝার দরকার নাই। তুমি কাল রাতে বললে ঘুম পাচ্ছে, কথা বললে না। অথচ সিনেমা দেখলে। এখন বলছ সময় নাই। অফিসে গিয়ে বলবে অফিসের কাজে ব্যস্ত আছি, কথা বলা যাবে না।
আমি সময় পাব কখন?
এবার আমার হঠাৎ করেই মেজাজ খারাপ।
-চুপ কর। একটা কথা বলবে না। বললাম না, তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে হবে।
-এত ধমক দাও কেন?
-আর একটা কথাও না, ফোন রাখ।
বলেই ফোন কেটে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড়।
অফিসে আসার পথে ফোন।
-সরি, ভুল হয়ে গেছে, আর করব না।
-এখন কথা বলতে পারব না। জ্যামের কারণে মেজাজ খারাপ।
রাখো।
-একটু কথা বলি!
-না, একটা কথাও না।
বলেই ধুম করে ফোন কাটলাম।
অফিসে আসার পর গুছিয়ে নিয়ে ফোন করলাম। তখন বারোটা বাজে।
-কি কর?
-বসে আছি।
-নাস্তা করেছিলে?
-তোমাকে ছাড়া কখোনো নাস্তা করেছি?
-মানে? এখনো নাস্তা করোনি?
-না, ক্ষুধা লাগেনি। তোমার জন্য বসে ছিলাম, এখন আর ক্ষুধা নাই।
-আচ্ছা খেয়ে নাও। সরি, ভুল হয়ে হেছে।
আর এরকম হবে না। এখন একটু খাও।
-না, একটু পরে দুপুরের খাবার খাব। তুমি খেয়েছো?
-হ্যা, একটু আগে।
-এত দেরি কেন? শরীরের দিকে তাকিয়েছ?
-তুমি, তুমি কেন খেলে না?
-আমি তো মোটু হয়ে যাচ্ছি।
একদিন নাস্তা না করলে কিছু হবে না। এখন কাজ কর। আমি -গোসলে যাব। গোসল করে খাব। এখন ক্ষুধা লাগছে।
জানুবেবিটার সাথে কথা বললাম তো!
-আচ্ছা(আমি দীর্ঘনিঃম্বাস ফেলে ফোন রাখলাম)।
কেন যে পাগলিটা এমন করে!! আমি ছাড়া তার পড়া হবে না, খাওয়া হবে না, ঘুম হবে না। অথচ আমি একটুতেই রেগে গিয়ে যা ইচ্ছে তাই বলি। আর ও মন খারাপ করে পরবর্তী ফোনের জন্য। দোষ করি আমি, মাফ চায় ও।
আমার এখন মেজাজ খারাপ হচ্ছে নিজের ওপর। এত করে প্রতিজ্ঞা করি, আর একটুও কষ্ট দেব না। পরমুহুর্তেই আবারও কষ্ট দেই।
অথচ বুঝতেই পারি না যে, ও এত ভালবাসে বলেই জীবনের এত চাপের মধ্যেও একটু দম ফেলতে পারি।
এখন বলু তো, আমাকে লাথ্থি মারা দরকার কি-না!!
খবরদার! অন্য কেউ লাথ্থি মারতে চাইলে কিন্তু আমার বউ পা ভেঙ্গে দেবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।