আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্প - যৌনাবেগ - পুলিশ ইন অ্যাকশন

তুমি আমি আমরা ......

লিয়াকত , এইদিকে আসো -- ইয়েস স্যার আমি যা দেখি তুমি কি তাই দেখো ? -- ইয়েস স্যার । স্যার ঘাড় কি ডাইনে নাকি বাইয়ে ঘুরামু ? ডাইনে ঘুরাও কনস্টেবল লিয়াকত মিয়া তার ঘাড় ডানে ঘুরায় । ডানে বিপিন পার্ক । আশে পাশে কেউ নাই । একটা ল্যাম্পপোস্ট জ্বলছে নিভছে ।

কিছু দেখলা ? --ইয়েস স্যার । কি দেখলা ? --ঘুটঘুটা অইন্ধার স্যার । আর কিছু ? --একটা ল্যাম্পপোস্টও দেখছি স্যার । জ্বলতাছে আর নিভতাছে । নষ্ট লাইট ।

কয়েক সেকেন্ডের জন্য যখন জ্বলে তখন পাশে একটা কুত্তা দেখা যায় । কুত্তা লেঞ্জা চক্ষে শুইয়া আছে । লেঞ্জা দিয়া চক্ষু ঢাকা কুত্তা দেখলা আর কুত্তার পাশের বেঞ্চিতে যে একটা নটি বসে আছে , অইটা দেখলা না ? তুমি তো মিয়া দিন দিন বুইড়া ভাম হইয়া যাইতাছো । এই তুমগর লাইজ্ঞাই আজকাল পুলিশ দেখলে মানুষজন টিটকেরি মারে । কনস্টেবল লিয়াকত আলী আবার তাকালো ।

সত্য কথা । একটা মেয়ে বেঞ্চে পা তুইল্লা বইয়া আছে । মাথা নিচু করা । তাই সহজে তাকে নজরে নিয়ে আসা যায় না । সাব ইন্সপেক্টর ইকরাম স্যারের পাক্কা দৃষ্টি ।

স্যার এমনিতে দুই দুইবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক ’ পায় নাই । স্যারের ভিতরে মাল আছে । -- স্যার , আফনের নজর মাশাল্লাহ । দিতাম নাকি নটিরে একটা দৌড়ানী ? লিয়াকত মিয়া তেলতেলে হাসি হাসার চেষ্টা করে । তুমি বড্ড পাষাণের মতো কথা বোলো , লিয়াকত আলী ।

কেন রে নটি মাগী হইছে বলে কি এরা মানুষ না ? -- ইয়েস স্যার । অতি অবশ্যই । নটিরাও মানুষ । তো ! তাদেরও তো পেট আছে । তাদেরও তো ক্ষিদা লাগে ।

একটুখানি ভাত কাপড়ের জন্য শরীরডার উপ্রে তারা কি কষ্টটাই না করে ! ভাবছো কখনো ! --আগে ভাবি নাই স্যার । আজ ভেবে কষ্ট হইতেছে । লিয়াকত দুঃখ দুঃখ মুখ নিয়ে বলল । জানো লিয়ামত , এইসব নটিদের জন্য আমার বড় মায়া হয় । ইচ্ছা হয় তাদের জন্য কিছু একটা করি ।

পঞ্চাশঊর্ধ্বো লিয়াকত আলী ত্রিশ ছুঁইছুঁই ইকরাম স্যারের কথায় বুঝদারের মতো কেবল মাথা নাড়ায় । সাব ইন্সপেক্টর ইকরামুল হক পুলিশ ভ্যানের বনেটে হেলান দিয়ে এখন ভাব জগতের কথা বলছে সাথে ভুড়ভুড় করে টানছে সিগারেট । লিয়াকত আলী চুপচার দাড়িয়ে । তিনি স্যারের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় । ইকরাম স্যার আগ বাড়িয়ে কথা বলা পছন্দ করেন না ।

লিয়াকত আলী – এই নাও সিগারেটের প্যাকেট । ভিতরে দুইটা আছে । তোমার জন্য । তুমি এখন কনস্টেবল হামিদ আর পলাশকে বলবা এক প্যাকেট বেনশন নিয়া আসতে আর ঐ মেয়েটাকে গাড়িতে পাঠাবা । মেয়েটার সাথে প্রাইভেটে একটু সুখ দুক্ষের কথা বলতে ইচ্ছা হইতেছে ।

যাও , কুইক । কনস্টেবল লিয়াকত আলী – ইয়েস স্যার বলে অ্যাকশনে নেমে যায় । হামিদ আর পলাশকে সিগারেট আনতে বলায় তারা একে অন্যের দিকে চোখ টিপি দেয় । বজ্জাত আছে পোলা দুইটা । নতুন পুলিশে ডুকছে ।

তেল এখনো শেষ হয় নাই । তবে লিয়াকত আলী তার দীর্ঘ চব্বিশ বছর চাকুরীর অভিজ্ঞতার জানে এদের তেল শিগ্রী শেষ হবে যাবে । শুধু শেষ হবে না সেইসাথে তেল ধরে রাখার শিশি পর্যন্ত এরা খুঁজে পাবে না । লিয়াকত আলী মেয়েটির কাছে আসলো । বয়স একদম অল্প ।

চৌদ্দ কি পনেরো । লাইনে নতুন । একে আগে দেখেনি । -- তোর নাম কি রে ? মেয়েটি ঘুমাচ্ছিল । ঘুম ভেঙ্গে সামনে পুলিশ দাঁড়ানো দেখে থতমত খেয়ে গেছে ।

তার চোখ ভর্তি ভয় । মুখ হা হয়ে আছে । কেঁদে পা জড়িয়ে না ধরলেই হয় ! এরা কিছু হলেই এমনভাবে পা জড়িয়ে ধরে আর ছাড়ানো যায় না । --তুই কি ইলিয়াসের মেয়ে ? ইলিয়াস কই গেছে ? উনি ঐদিকে গেছেন । আইয়া পড়বো অহনি ।

মেয়েটি হাতের ইশারায় দক্ষিণ দিক দেখালো । ইলিয়াস হালায় নিশ্চিত হাগতে গেছে । এই এলাকায় ইলিয়াস মেয়ে সাপ্লাই দেয় । থানার সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ । সেই সুবাধে প্রায় সব মেয়েকেই লিয়াকতের চেনা ।

মেয়েটার চোখে এখন কিছুটা স্বস্তি । প্রাথমিক ভয় সে কাটিয়ে উঠেছে । এখন সে তার ট্রেনিং প্রাপ্ত আচরন শুরু করেছে । বারবার দুহাত উচিয়ে তার খোঁপা ঠিক করতে চাচ্ছে । অল্প বয়সে মেয়েটার শরীরে ভালো বান ধরেছে ।

লিয়াকত আলী তার দৃষ্টি সরিয়ে নিল । --- তুই ঐ ভ্যানের দিকে যা । আমাদের বড় স্যার আছেন । তিনি তোর সাথে কিছুক্ষন কথা বলবেন । যদি খুশি করতে পারস ভালো বকশিশ পাবি ।

ইলিয়াস ভাইরে কইয়া যাই ? --দরকার নাই । আমি আছি । ইলিয়াস আইলে আমি কথা কমুনি । তুই তাড়াতাড়ি যা । দেরী হইলে স্যার কিন্তু রাগ করবো ।

মেয়েটি চলে যাবার পর লিয়াকত আলী বেঞ্চিতে বসলো । ইকরাম স্যারের দেয়া প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে আয়েশি টান দিল । আজ তার সারারাত ডিউটি । এখনি ঘুম পাচ্ছে । বয়স বাড়লে যা হয় ।

একটু চা পেলে মন্দ হতো না । চায়ের কথা ভাবতে ভাবতেই লিয়াকত আলীর মোবাইল বেজে উঠলো । হ্যালো বাবা , তুমি কি করো ? --ডিউটি দিতাছি মা । আপনি যে এতো রাইত পর্যন্ত জেগে আছেন ? শরীর কি খারাপ করছে ? না বাবা । কাল আমার ফিক্সিজ পরীক্ষা ।

তাই আজ সারারাত পড়বো । পড়তে পড়তে তোমার কথা মনে হলো । তাই ফোন দিলাম । বাবা , তুমি আইজ রাইতে খাইতে আসো নাই কেন ? --একটা কামে আটকা পড়ছিলাম মা । থানাতেই খাইয়া নিছি ।

কি দিয়া ভাত খাইসো বাবা ? --টেংরা মাছের চচ্চড়ি আর মুগের ডাইল । আপনের মা আইজ কি পাক করছিল ? টাকি মাছ ভর্তা আর কচুর লতি দিয়া মাছের মাথা । লিয়াকত আলী চিন্তিত কণ্ঠে বলল -- আপনে তো মা , কচুর লতি পছন্দ করে না । আপনি কি খাইলেন তাইলে ? আমি আজ দুধ ভাত খাইছি । কাইল আমার পরীক্ষা তো তাই মা খাওয়াইয়া দিছে ।

লিয়াকত দেখল ইলিয়াস ফিরে আসচ্ছে । নেশায় সে ঠিকমতো পা ফেলতে পারছে না । --মা , আপনি সারা রাইত জাইজ্ঞেন না । একটু হইলেও ঘুমাইয়েন । আমি সকালে আপনেরে ফোন করে জাগাইয়া দিমুনি ।

এখন রাখি মা ? ঠিক আছে বাবা । আমার জন্য দোয়া করো । আল্লাহ্‌ হাফেয । লিয়াকত ফোন রেখে ইলিয়াসের দিকে তাকালো । সালাম স্যার --হুম ।

ক্যামন আছো ইলিয়াস । আফনেদের দোয়াতে ভ্যালা আছি স্যার । দূর থেইক্কা দেখলাম মাগী ভ্যানের দিকে গেছে । জব্বর মাল পাইছি স্যার । একেবারে টাটকা কচি ।

বড় স্যারের খুব পছন্দ হইবো । ইলিয়াস বিশ্রীভাবে হাসচ্ছে । লিয়াকত আলী জানে ইলিয়াস ঐ অল্প বয়সী পতিতা মেয়েটার কথাই বলছে । অথচ তারপরও তার কেবলই নিজের ১৪ বছরের আদুরে মেয়েটার মুখের মনে পড়ছে । তিনি বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়ালেন ।

তিনি বুকে হটাত করেই চিনচিনে একটা ব্যাথা অনুভব করছেন । কনস্টেবল লিয়াকত আলী ঠোঁটে জ্বলতে থাকা সিগারেট অন্ধকারে ছুড়ে ফেলে দিল । ইকরাম স্যারের সিগারেট টানতে তার খুব ঘেন্না হচ্ছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।