-স্বর্ণা...
-জী মা?
-এতো রাতে জেগে আছিস যে?
-এই একটু পড়ছিলাম মা। একটু পরেই ঘুমিয়ে পরবো।
মাথায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠলো শিরিনের। মেয়েটা তাকে মিথ্যা বলেছে। কারন গত কিছুদিন থেকেই তিনি লক্ষ্য করছেন যে অনেক রাত পর্যন্ত মেয়ে জেগে থাকে যেখানে এসএসসি পরীক্ষার সময়ও সে এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকতো না।
মেয়েকে তিনি অনেক স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং সব বিষয়ে পাশে থেকে সাপোর্ট করেছেন, ভাল-মন্দ পরামর্শ দিয়েছেন। এজন্য মেয়ে কখনো তাকে মিথ্যা বলে নি। তাহলে আজ কেনো বলছে?
-তুই চাইলে আমাকে বলতে পারিস...
-কি বলবো মা?
-সত্যি টা।
স্বর্ণা একটু অবাক হল মনে মনে, কিন্তু মাকে বুঝতে দিতে চাইলো না। প্রানপন চেষ্টা করছে নিজের ভাবভঙ্গি স্বাভাবিক রাখার জন্য।
তবে বুঝতে পারছে মায়ের চোখ ফাকি দেওয়া সম্ভব না। নানার মেয়ে বলে কথা। স্বর্ণার নানা পুলিশে ছিলেন। তার সামনে পনেরজন সন্দেহভাজন ধরে আনলে তিনি তাদেরকে হাসির কৌতুক শোনাতেন। কৌতুক শুনে সবাই হাসত।
কন্তু আসল আসামীর হাসির মধ্যে যে সামান্য আড়ষ্টতা থাকতো সেটা দেখেই তিনি আসামী কে, সেটা বলে দিতে পারতেন।
-কি সত্যি জানতে চাও? আমিতো বুঝতে পারছি না।
-তুই কি প্রেমে পড়েছিস কারো?
স্বর্ণা চোখ নামিয়ে নিলো। মাকে মিথ্যা বলে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে সে। আগেই সত্যি বলা উচিৎ ছিল।
এখন সত্যি স্বীকার করলে মা আরো রেগে যাবেন। আর রেগে গেলে মা কথা বলা বন্ধ করে দেন। স্বর্ণার সবচাইতে কাছের বান্ধবী তার মা। মার সাথে কথা না বলতে পারলে স্বর্ণার অনেক কষ্ট হয়। পার্থর সাথেও কথা না বললে এতো কষ্ট হয় না।
প্রেম করাটা বড় বিষয় নয়। আজকাল সবাই করে। এমন কি বিয়ের পরেও অনেকে প্রেম করে। এইতো কিছুদিন আগেই শুনেছে স্বর্ণার বাবার এক অফিস কলিগ (বিবাহিত মহিলা), অন্য একজন কলিগের প্রেমে পড়েছেন। মহিলা তার হাসবেন্ডকে তালাক দিবেন কিছুদিনের মধ্যেই।
তার কয়েকদিনের মাথায় স্বর্ণাদের বাসায় একটা বিয়ের দাওয়াত আসবে।
শিরিন আর কথা না বলে নিজের ঘরে চলে আসলেন। তিনি জানেন মেয়ে তার কাছে সরি বলতে আসবে। সরি না বলা পর্যন্ত মেয়ের মনে শান্তি আসবে না। নিজেকে অপরাধি ফিল করবে।
এজন্য নিজের মেয়েকে নিয়ে তিনি মনে মনে অনেক গর্ব করেন। কারন এখন অন্যান্য মেয়েরা নির্দ্বিধায় মা বাবার কাছে মিথ্যা বলে। এমন কি অনুতপ্ত ও হয় না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।