পরাজিত হতে হতে আমি উঠে দাড়িয়েছি এবার ফিরে যাবো না খালি হাতে, স্তব্ধতা আর সৌন্দর্যের পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই যে কবি সে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে পারে না ।
সর্বজনাব বদরুদ্দিন উমর আজকের সমকালে "শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র দুর্নীতি ও সন্ত্রাস" শিরোনামে একটি উপসম্পাদকীয় লিখেছেন যেখানে তিনি অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি শিবির নিয়েও আলোচনা করেছেন । এখানে আমি শুধু শিবির নিয়ে উমরের মতামত তুলে ধরছি
১। আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ, বিএনপির ছাত্রদল ও জামায়াতে ইসলামীর ইসলামী ছাত্রশিবির ১৯৮০-এর দশক থেকেই ছাত্ররাজনীতির নামে সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হলো জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির।
আশির দশকের প্রথম থেকে তারাই ছাত্রদের মধ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসের আমদানি করে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, যার পূর্ব দৃষ্টান্ত এ দেশে ছিল না।
২। মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণের নামে পাঠ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন এনে মাদ্রাসা ছাত্রদের সাধারণ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। মাদ্রাসা ছাত্ররা এসব উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হতে থাকার পর জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির গঠিত হয়ে সংগঠিত হতে থাকে। বলা চলে, ইসলামী ছাত্রশিবির হলো মাদ্রাসা শিক্ষার তথাকথিত আধুনিকীকরণের সঙ্গেই সম্পর্কিত।
পাঠ্যতালিকার মধ্যে কিছু পরিবর্তন আনলেই যে মাদ্রাসা ছাত্রদের চিন্তা-চেতনার কাঠামো পরিবর্তন হবে, এমন নয়। সেটি হয়ওনি। কারণ বর্তমানে মাদ্রাসায় যে সাধারণ পাঠ্যতালিকা আছে তার মধ্যে প্রকৃত শিক্ষার উপাদান সামান্য এবং ধর্মীয় কূপমণ্ডূক তৈরির ব্যবস্থাই প্রাধান্যে।
৩। মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে যারা জোরালোভাবে ওকালতি করেন, তারা কেউই নিজেদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়ান না।
তাদের ছেলেমেয়েরা সাধারণ বাংলা মাধ্যম স্কুল-কলেজে ও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। এর কারণ, তারা যতই ধর্মীয় শিক্ষার জিকির তুলে মাদ্রাসার পক্ষে কথা বলুন, তারা জানেন যে, মাদ্রাসা শিক্ষা ছাত্রছাত্রীদের কোনো প্রকৃত শিক্ষা তো দিতেই পারে না, উপরন্তু পরবর্তী জীবনে তাদের অকেজো করে রাখার ব্যবস্থাই তার মধ্যে থাকে। এভাবে শিক্ষাপ্রাপ্ত মাদ্রাসা ছাত্রদের সামনে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার উন্মুক্ত হলেও সংকীর্ণ ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার দ্বারাই তাদের চিত্ত শাসিত হয়। তার মধ্যে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল চিন্তার বিকাশের কোনো প্রকৃত সুযোগই থাকে না।
৪।
সংকীর্ণ চিন্তা-চেতনা ও কূপমণ্ডূকতায় আচ্ছন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশকারী মাদ্রাসা ছাত্ররাই বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাস শুরু করে। তাদের মূল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের খেদমত করতে গিয়ে যে ধর্মীয় সন্ত্রাসের উদ্বোধন করেছিল, তার জের ধরেই শুরু হয়েছিল ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস। পায়ের রগ কাটা, নরহত্যা ইত্যাদি বেশ জোরেশোরে প্রথমে শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস এক ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
৫।
এ কথা বলা বাহুল্য, ছাত্রশিবিরের এ সন্ত্রাসকে বাংলাভাই ও আবদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসের থেকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। এসবের সঙ্গেই বরাবর জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক থেকেছে খুব ঘনিষ্ঠ। শুধু তা-ই নয়, জামায়াতের পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং তাদের থেকে প্রেরণা লাভ করেই ইসলামের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং তার বাইরে এই ক্রিমিনাল ও কলঙ্কজনক তৎপরতার মাধ্যমেই জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে নিজেকে একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
৬। জনগণের মধ্যে যে তাদের কোনো ব্যাপক সমর্থন নেই, এটি নির্বাচনে তাদের ভোটের অবস্থা থেকে বোঝা যায়।
কিন্তু জনসমর্থন না থাকলেও নিজেদের সংগঠিত শক্তি এবং সে শক্তিকে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত করে তারা এখন বাংলাদেশের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
৭ । ইসলামী ছাত্রশিবির উৎসাহিত হয়ে নতুন করে তাদের সন্ত্রাস শুরু করেছে। নৃশংসভাবে তারা আবার রগ কাটা, নরহত্যা ইত্যাদির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে নিযুক্ত হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।