আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিবিরের এ কোন মিশন?

যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় সামনে রেখে জামাত-শিবির দেশে বড় ধরনের নাশকতার ছক এঁকেছে। বিচার বাধাগ্রস্ত ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ক্যাডাররা চোরাগুপ্তা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এতে টার্গেট করা হয়েছে পুলিশ ও র‌্যাবকে। দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামাত-শিবির, ফ্রিডম পার্টি, হিযবুত তাহরীর, বঙ্গবন্ধুর ঘাতক চক্র ও জঙ্গিরা গোপন আঁতাতের চেষ্টা করছে। গত সপ্তাহে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের শক্তি জানান দিয়েছে।

একটি প্রভাবশালী মহলের মদদে ১৫ জেলায় জামাত তা-বলীলা চালালে পুলিশ-র‌্যাব নড়েচড়ে বসে। তা-বের মাধ্যমে ১৮ দলীয় জোটে গুরুত্ব বাড়াতে তারা বিএনপিকে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এদের ধরতে চিরুনি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই সারা দেশে জামাত-শিবিরের প্রায় সহস্রাধিক ক্যাডার আটক হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। গোয়েন্দা সূত্র মতে, জামাতের আমির মওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ কারাবন্দী নেতাদের বিরুদ্ধে সরকার চূড়ান্ত অ্যাকশন নিলে ঢাকাকে অচল করে দেয়ার পাঁয়তারা করছে তারা।

এ নিয়ে জামাতের হাইকমান্ড দফায় দফায় গোপন বৈঠক করেছে। ‘মরলে শহীদ বাঁচলে গাজি’ পুরোনো সেই সেøাগানকে তারা আবার সামনে নিয়ে এসেছে। এসব নিয়ে একটি রিপোর্ট একটি গোয়েন্দা সংস্থা গত মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, জামাত-শিবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা গোপন স্থানে জড়ো হয়ে পুলিশ-র‌্যাবের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

তাদের কোনো ধরনের নাশকতা করতে দেয়া হবে না। সরকার পুরোপুরি হার্ডলাইনে চলে গেছে। যে প্রকারেই হোক তাদের প্রতিরোধ করা হবে। সারা দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে তারা হামলার ঘটনা ঘটচ্ছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।

সূত্র মতে, জামাতে ইসলামীর আট শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বেকায়দায় পড়ে যান নেতাকর্মীরা। চৌকস ও দক্ষ নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক লবিংয়েও তারা হোঁচট খায়। কিভাবে দলকে চাঙ্গা করা যায় এ নিয়ে নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বৈঠক করে আসছেন। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জামাতের কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিচারের রায় ঘোষণা করা হতে পারে।

ওই বিচার বানচাল করতে তারা সারা দেশে তাদের অবস্থান জানান দিতে চায়। এছাড়া পুলিশের হাতে গেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্ত করার অজুহাত তোলে তারা রাজপথ দখলের পাঁয়তারা করছে। জামাতের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ঢাকায় শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যেভাবেই হোক আট নেতাকে মুক্ত করতে হবে। সরকারকে যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন করতে দেয়া হবে না।

চলতি মাসেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বড় ধরনের শোডাউন করা হবে। এতে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়বে। আন্দোলন করতে গিয়ে নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করতেও প্রস্তুত রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, জামাত নেতাকর্মীরা আন্দোলনের নামে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থা এ আশঙ্কা করে মঙ্গলবার রিপোর্ট পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকাররের নানা পদক্ষেপ ভ-ুুল ও তাদের অভিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে জামাত-শিবির, ফ্রিডম পার্টি, হিযবুত তাহরীর, বঙ্গবন্ধুর ঘাতক চক্র ও জঙ্গিরা গোপন আঁতাতের চেষ্টা করছে।

কিভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে বিপদে ফেলা যায় সে লক্ষ্যেই তারা কাজ চালিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবেই তারা দেশজুড়ে নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে পারে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে- নানা ছক নিয়ে জামাত-শিবির অগ্রসর হচ্ছে। তারা গোপনে ঘরোয়া সভা-সমাবেশের মাধ্যমে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যতো কঠিন বাধাই আসুক, সেটাকে অতিক্রম করতে হবে।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতাদের বক্তব্যেও এ ধরনের ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট, ফেইসবুক, টুইটার ও ই-মেইলেও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সূত্র আরো জানায়, গত দুদিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জামাত-শিবিরের নেতাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করছে পুলিশ। নেতারা পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, হাইকমান্ডের নির্দেশে তারা মিছিল-মিটিং করেছেন। নভেম্বর মাস সারা দেশে মিছিল-মিটিংয়ের মাস হিসেবে বলা হয়েছে।

বিশেষ করে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে হঠাৎ করে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে মিছিল করার চেষ্টা করবে। আর পুলিশ বা র‌্যাব বাধা দিলে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ধৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জামাত-শিবিরের হামলার পর পুলিশ ও র‌্যাব সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পুলিশ জানায়, জামাত-শিবির চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে।

এমনকি তারা পুলিশ বা র‌্যাবকে হত্যা করতে পারে। ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে পুলিশের ওপর যেভাবে হামলা করেছে তাতে গোয়েন্দাদের আগাম তথ্য প্রমাণিত হচ্ছে। সরকারের হাইকমান্ডের নির্দেশে সারা দেশে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ র‌্যাব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.