www.runews.weebly.com
2004 সালের 30 অক্টোবর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কলংকিত একটি দিন। ভোরবেলা ঘুমিয়ে ছিলাম। ডিপার্টমেন্টের এক ছোট বোনের ফোনে ঘুম ভাঙলো। কিরে কি খবর? ও বলল, ভাইয়া আমরা একটু আগ থেকেই ভিসির বাসা অবরোধ করে আছি।
বললাম কি জন্য? কয়েকদিন ধরে নিয়োগ নিয়ে গন্ডোগোল চলছিল। ভাবলাম জন্য তো মেয়েদের ভিসির বাসা অবরোধ করার কথা নয়। ওবলল, কাল রাতে তাপসী হলে অস্ত্রধারী কয়েকজন যুবক ঢুকেছিল। তাই নিরাপত্তার দাবিতে ভোর বেলাতেই মেয়েরা ভিসির বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে।
দ্রুত মুখ ধুয়ে বের হলাম।
প্যারিস রোডে গিয়ে দেখি 4 হলের সমস্ত ছাত্রী ভিসির বাসার সামনে। শ্লোগান চলছে, নিরাপত্তা চাই। তারপরের সময়গুলো উত্তেজনা ছিলনা। তবে প্রশাসনের প থেকে কেউই ছাত্রীদের সামনে আসেন নি। বেলা সাড়ে 9টার দিকে ভিসি এলেন।
ততণে চারপাশে ছাত্ররাও এসেছে। সবাই বিুব্ধ। ছাত্রীদের দাবি, প্রক্টর ও ওই হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ। ভিসি বললেন, বিষয়টি আমরা ভেবে দেখব। ছাত্রীরা তাদের দাবিতে অনড়।
শেষ পর্যন্ত কোন সমাধান ছাড়াই ভিসি বিদায় নিলেন ঘড়ির দিকে তাকাতে তাকাতে। তার নাকি ওই দিন ফ্রানস যাবার কথা।
সাড়ে 10টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন বেশ কয়েকজন শিক। এদের মধ্যে বেশিরভাগই জামায়াতপন্থী। ততণে শিবিরের বেশ কয়েকজন ক্যাডার ও কর্মচারী এসে উপস্থিত হয়েছে ঘটনাস্থলে।
ছাত্রীদের বললেন, এখান থেকে যাবি না শিবির ডাকবো। শুরু হলো ধাক্কাধাক্কি। এক শিক ধাক্কা দিলের আমাদের সহকমর্ী কামরুজ্জামান শাহীনকে। পরের এক সপ্তাহ ব্যাথায় ঘুমাতে পারেন নি শাহীন ভাই।
11টার দিকে হঠাৎ দেখলাম জামায়াতের ওই শিকরা ইট ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসছে ছাত্রীদের দিকে।
এক মিনিটের মধ্যে রক্তাক্ত হয়ে উঠলো ভিসির বাসভবনের প্রধান ফটক। সক্রিয় হয়ে উঠলো জামায়াত-শিবিরের ওই শিক-কর্মচারী ক্যাডাররা।
আমি তখনও ঘটনাস্থলে। দেখলাম জামায়াতপন্থী শিক প্রফেসর নজরুল ইসলামের ইটের আঘাতে এক ছাত্রীর নাক ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলো। এরকম অগনিত ইটের আঘাতে রক্তাক্ত হলো ছাত্রীরা।
আস্তে আস্তে পুরো ক্যাম্পাস হয়ে উঠলো রণত্রে। আহত শিাথর্ীদের আর্তনাদ, টিয়ারশেল, পুলিশের বাঁশিতে যেন দোজখে পরিণত হলো গোটা ক্যাম্পাস।
সেদিন প্রশাসনের সহযোগি শক্তি হিসেবে আর্বিভুত হলো শিবির ক্যাডাররা।
বিকেলে আধঘন্টার নোটিশে বন্ধ করে দেয়া হলো ক্যাম্পাস। রাতভর কেউ রেলস্টেশন, কেউ বাসস্ট্যান্ড কেউবা খোলা আকাশের নীচে রাত কাটিয়ে চোখ মুছতে মুছতে সকালে বাড়ি ফিরল।
আর ক্যাম্পাস তখনও শিবির আর পুলিশের দখলে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির কখনও ইসলামের জন্যও নয়, ছাত্রদের জন্যও নয়, কেবল ধর্মের নামে আইওয়াশ করে , পা চাটা কুত্তার মত ওৎ পেতে বসে থাকে লাভের আশায়। ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে সেদিন এমনই ছিল ভাষা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।