www.runews.weebly.com
2004সালের শেষের দিকের ঘটনা। আমি তখন গণযোগাযোগ বিভাগের সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। ফাস্ট হয়ারে থাকতেই আমরা ক্লাশমেটরা মিলে একটা দ্্বিমাসিক পত্রিকা বের করেছিলাম। পত্রিকাটা বেশভালোই চলছিল। 5ম সংখ্যা বের করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম এই সংখ্যঅ বিক্রির টাকা দিয়ে এবার শীতার্থদের জন্য কিছু করবো।
ভাবনা মত কাজ শুরু করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম গরম কাপড় চোপড় বিতরণ করার। কাজ শুরু হলো ক্যাম্পাসে। পরে হলের প্রত্যেক রুমে রুমে গিয়ে কালেকশন করা শুরু করলাম। প্রথম দিন ভালোই হলো কালেকশন।
তবে মাঝরাতে পত্রিকার সম্পাদক আমার বন্ধু ফোন করলো শিবির এসে ওকে এই কাজ বন্ধ করার জন্য থ্রেট করে গেছে। তারপরও কাজ চালাতে লাগলাম। ঢুকলাম হবিবুর রহমান হলে ও জিয়া হলে। আমি ছিলাম জিয়া হলের কালেকশনে। 5 মিনিট পরেই দেখছি হবিবুর থেকে পুরো টিমই মুখ কালো করে বেরিয়ে আসছে।
জিজ্ঞাসা করতেই জানলাম, এটা যেগেতু গণযোগাযোগ বিভাগের সংগঠন, সুতরাং এটা বামদের সংগঠন। তাই বামদের হলে ঢুকতে দেয়া হবে না। একথা বলে শিবিরের এক নেতা পুরো টিমকেই হল থেকে বের করে দিয়েছে। জিয়া হলের কালেকশন শেষ করেই সেদিন বিদায় নিলাম।
পর দিন গেলাম সোহরাওয়াদর্ী ও জোহা হলে।
আমি জোহা হলে গিয়ে কাজ শুরু করলাম। 2/3টা রুমে কালেকশন করার পরেই বাধা এলো। এক শিবির নেতা জানালো তারা যেহেতু কালেকশন করবে তাই আমাদের কাজ বন্ধ করতে হবে। জোহা হল থেকে বের হয়ে আসলাম। পরে শুনি সোহরাওয়াদর্ী হলেও একই অবস্থা।
পরে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বললাম শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সভাপতি রেজাউল করিমের সাথে। উনি বললেন, আপনারা ছোট সংগঠন তাই এ কাজ ভালোভাবে করতে পারবেন না। আমরা করব। ' তাই কাজ বন্ধ করতেই হলো।
শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিলাম সবার পকেটের টাকা দিয়েই শীতবস্ত্র বিতরণ করবো।
শেষপর্যন্ত খাওয়ার টাকা, মেসভাড়ার টাকা দিয়ে শীতবস্ত্রকিনে আনলাম। অনেকে গোপনে ব্যাগে করে কাপড় চোপড় এনে দিয়ে গেল এখবর শোনার পর। পরে লালমনিরাহাটে গিয়ে 2টা গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের কাছে শীতবস্ত্র বিতরণ করলাম।
একটা গরম সোয়েটার পাবার পর মানুষের মুখের হাসিতেই প্রাণ ভরে গেছে। আর শিবির সে বছর রাজশাহী শহরের 5 শ' লোককেও শীতবস্ত্র দেয় নি।
যা দিয়েছিল আমাদের আগেই দিয়েছিল। পরে আর দেয় নি।
এই হলো শিবিরের মানবতার একটা অংশ। বাকি অংশ পরবতর্ীতে আপনাদের জানাবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।