মানুষ হওয়ার চেষ্টায় আছি ।
সাধারণভাবে রাজনীতি হলো একটা জনেগাষ্ঠীর অধিকারের জন্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া। এর সাথে ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত সুবিধা অর্জনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের দেশের জনগণের অসচেতনতা বলি আর দূর্ভাগ্যই বলি যার কারণে দেশের বর্তমানের সংখ্যাগরিষ্ঠতাসম্পন্ন রাজনৈতিক দলসমূহ, বামপন্থি রাজনীতির ভাষায় যাদেরকে বুর্জোয়া দল বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মের নামাবুলি আওড়ে জনগণের পক্ষের প্রকৃত শক্তির অনুপস্থিতিতে ক্ষমতায় গিয়ে ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত সুবিধা হাসিলের জন্য অবাধে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। এই লুটপাট সন্ত্রাস, খুন, রাহাজানিসহ যত ধরনের অন্যায় আছে তার জন্মদাতা।
সাথে সাথে এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত রাজৈনতিক নেতা, ছাত্রসহ তাদের সাথে যুক্ত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও সাধারণ জনগণের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধসহ সমগ্র সংস্কৃতির এক ভয়াবহ ধ্বস নেমে এসেছে। আর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত ও জাতীয় পার্টির মত লুটপাটকারী দলগুলির নেতাদের মত তাদের দলের সাথে যুক্ত ছাত্ররাও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে এটাইতো স্বাভাবিক। নানা আদর্শের কথা বলেলেও তারা যে লুটপাটের রাজনীতি করেন এবং লুটপাট টিকিয়ে রাখতে গেলেই যে সন্ত্রাসের সাহায্য নিতে হয় বা সন্ত্রাসী হতে হয় তা সচেতন মানুষদের না বোঝার কথা নয়। অনেকেই এটা বুঝেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা না বুঝে সরলমনে ছাত্রনেতা নামধারী ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির এর সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে বিচ্ছিন্নভাবে বিচার করছেন এবং এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ছাত্ররাজনীতি আখ্যা দিয়ে একে বন্ধ করার দাবি তুলছেন। একটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ ধরনের দাবি মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
ফলে যারা না বুঝে এ দাবি তুলছেন তাদের বিবেচনার জন্য বলতে চাই, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির এর সন্ত্রাসের জন্মদাতা লুটপাটের রাজনীতির বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে, এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ না করে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর মত করে সমগ্র ছাত্রসমাজের রাজনীতি করার অধিকার এর উপর আঘাত হানবেন না। তাতে বিপদ বাড়বে বৈ কমবে না। কারণ, ছাত্র রাজনীতি নামের সকল সংগঠনই সন্ত্রাস করে না, করে গুটিকয়েক ছাত্র সংগঠন, তা-ও ক্ষমতার জোরে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের কোনো কোনো অংশের সহায়তা নিয়েই করে থাকে। এই সমস্ত সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনের বিপরীতে ছাত্র ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক অধিকার তথা গণমানুষের অধিকার আদায়ের দাবিতে, তেল-গ্যাসসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশে পাচারের বিরুদ্ধে জাতীয় স্বার্থে ব্যবহারের দাবিতে আন্দোলন করছে এমন ছাত্র এবং ছাত্র সংগঠনও দেশে সক্রিয় আছে। তাদের এ অবস্থানও কোনো না কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ বা দল দ্বারা পরিচালিত যে মতাদর্শ বা দল লুটপাট বা সন্ত্রাস করছে না বরং এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে এবং জনগণের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ ও সম্পদ রক্ষার আন্দোলন করছে।
কাজেই সন্ত্রাসের জন্য রাজনীতি নয়, লুটপাটকারী প্রধান দলগুলোই দায়ী। এ অবস্থার উত্তরণ চাইলে সন্ত্রাস প্রতিরোধ, এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সন্ত্রাসের জন্মদাতা রাজনীতি নামধারী লুটপাটকারী দল, মতাদর্শ ও তাদের সাথে ছাত্র সংগঠনকে পরিত্যাগ করে জনগণের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ ও সম্পদ রক্ষার মতাদর্শ গ্রহণ করে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।