ওয়াঁ...ওয়াঁয়াঁ...ওয়াঁয়াঁয়াঁ...!!!
ধর্মীয়, বৈষয়িক এবং সামাজিকতার প্রেক্ষিতে সম্পূর্ন ব্যাক্তিগত উপলব্ধি, কারো সাথে মিল বা অমিলে কিছু আসে যায় না।
প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে। সেই হিসেবে তাদের উপাস্যও অসংখ্য। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঐসব জাতি/গোষ্ঠী’র ভৌগলিক অবস্থান, সংস্কৃতি, ভাষা, প্রধান উৎপন্ন পণ্য, দলনেতার ব্যাক্তিগত (একক/পারিবারিক/প্রিয় ব্যাক্তি’র) ইচ্ছা-অনিচ্ছার কারনে পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম এবং দেব-দেবীর সৃষ্টি। সকল জাতিই তাদের ইচ্ছামত নিজেদের স্বার্থে ধর্ম এবং তাদের উপাস্যকে ব্যাবহার করে।
কিন্তু এতে করে একই এলাকার বিভিন্ন জাতি/গোষ্ঠী’র মধ্যে মিলের চেয়ে দাঙ্গা-ফ্যাসাদ বাড়তে থাকে। সবাই নিজেরদের ধর্মকে এবং ধর্মপালনকারীদের অন্যান্য ধর্মের চেয়ে উচুঁ এবং আলাদা ভেবে নিজেদের নিয়ে গর্ব শুরু করে। অনেকে ঐ একই উপাস্য’র ভাল ক্ষমতার দিক উপাসনা করে জাতিকে ভাল পথে এবং অনেকে খারাপ ক্ষমতার দিক উপাসনা করে জাতিকে অন্ধকার এবং নিষিদ্ধের পথে পরিচালিত করে। অনেক সংখ্যালঘু জাতি রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য পেতে ক্ষমতাধর জাতির উপাস্যের কল্পিত আত্মীয়-স্বজনদের উপাসনা শুরু করে। মূলত এই সব সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং জাতিগত সমস্যা দূর করতেই ধর্মীয় ইতিহাসের কিছু দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যাক্তি ঐতিহাসিক এবং কল্পিত আলৌকিক ঘটনার আলোকে পৃথিবীতে একেশ্বরবাদের প্রচলন শুরু করে।
তবে সকল একেশ্বরবাদী ধর্মেরই উৎকৃষ্ঠতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের লড়াই আজ অব্দি চলছে।
একেশ্বরবাদের স্বার্থকতা অনেকটা এরকমঃ
* এক ঈশ্বর’ই সকল ক্ষমতার উৎস।
* একেশ্বরবাদের উপাস্য সকল ক্ষমতার উৎস, তাই অন্যান্য সকল ধর্মের উপাস্যদের গুন একেশ্বরবাদীদের উপাস্যের আছে প্রচার করে সহজেই অন্য ধর্মপালনকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং দলীয়করন করা।
* একেশ্বরবাদে উপাস্য নিরাকার তাই যেকেউ চাইলেই যেকোন ভাবে তাকে কল্পনা করতে পারে। লৌকিক পৃথিবীর বস্তু দিয়ে অলৌকিক ঈশ্বরের প্রতিকৃতি বানানোর দীর্ঘমেয়াদী রীতি, বয়ে বেড়ানো এবং নির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপন করার ঝামেলা নেই।
* পাপ/ভুল করলে কেউ অন্য ঈশ্বরের কাছে যেতে পারবে না। সেই এক ঈশ্বরের কাছেই ক্ষমার জন্য যেতে হবে।
* একেক কাজের সুবিধা আদায়ের জন্য একেক ঈশ্বরের প্রার্থনা না করে একজনের কাছেই সব প্রার্থনা করা। এতে সময় বাঁচে।
* একেশ্বরবাদে সকল জাতি এক হবে, একতা বৃদ্ধি পাবে, জাতিগত দ্বন্দ কমবে।
।
* যে ধর্ম একেশ্বরবাদ প্রচার করবে তারা নিজেদের দলে অন্য ধর্মপালনকারীদের পাবে। তাদের কাছে নিজেদের উৎকৃষ্ট প্রমান করতে পারবে।
* সেই জাতির সামরিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
* সামাজিক জীবনবিধান এবং রীতি সহজ হবে।
এখন দেখা যাক ইসলাম ধর্মে একেশ্বরবাদের স্বার্থকতা, এটি অনেকটা এরকমঃ
• মুহাম্মদকে যারা মক্কা থেকে বিতাড়িত করেছে তাদের উপর শোধ নেওয়া। (মক্কা শহর এবং কাবা জবর দখল করা)।
• একেশ্বরবাদকে হাতিয়ার বানিয়ে ক্ষমতা এবং এলাকা/দেশ দখল।
• অন্যান্য ধর্মের উপর প্রভাব বিস্তার ও প্রভূত্ব করা। এমনকি নিজেদের উপাস্য’র তৈরী অন্যান্য ধর্মেও হস্থক্ষেপন এবং মৌলিকত্ব নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করা।
• ধর্মকে শুধুমাত্র উপাসনা এবং নির্দিষ্ট এক গোষ্ঠীর পরিচিতির গন্ডি থেকে বের করে ব্যাবসা এবং রাজনীতি’র উপকরন হিসেবে কাজে লাগান।
• একেশ্বরবাদের ধারাবাহিকতায় অন্যান্য আঞ্চলিক এবং পূর্বপুরুষদের ধর্মের প্রায় সকল নিয়মনীতি এবং ঐতিহাসিক/ধর্মীয় ঘটনা প্রায় অবিকৃত রেখে নিজেদের বলে ব্যাবহার করা। একেবারে নতুন করে কোন কিছু চালু করার চেয়ে, পুরনো জিনিস নতুন আঙ্গিকে চালু করা সহজ।
• অন্যান্য একেশ্বরবাদী ধর্মের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের দোষনীয় মানবিক গুনাবলীকে উল্লেখ না করে, তাদের খুবই পবিত্রভাবে আলৌকিক গুনাবলীতে সমৃদ্ধ করে উপস্থাপন করা। এতে ঐসব ধর্মপালনকারীরা নতুন ধর্মে সহজেই আকৃষ্ট হয়।
• পূর্বপুরুষের দোহাই দিয়ে সমগ্র আরব অঞ্চলের প্রায় সকল জাতি এবং একেশ্বরবাদী ধর্মকে নিজেদের বলে দাবী করা। এমনকি সেই রেষ ধরে, ঐতিহাসিক ধর্মীয় চরিত্র আদম-হাওয়াকে পর্যন্ত ইসলাম ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করা।
• খুবই কৌশলে এবং নিজস্বার্থে (ব্যাক্তিগত/সমষ্টিগত) বিভিন্ন বিতর্কিত সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং ব্যাক্তিগত পরিস্থিতি সামাল দিতে কোরানের আয়াতকে সময় এবং সুযোগমত উপস্থাপন করা এবং সেইসব আয়াতকে সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরীত দাবী করে কোন প্রশ্নের সম্মুখীন না হওয়া এবং ঢাল-হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করা।
• ইহকালের জীবনে যে সব ইন্দ্রীয়ভোগ্য উপকরন এবং বিষয় সামাজিক এবং ধর্মীয় কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বা নিষিদ্ধ, পরকালের জীবনে ঠিক ঐ সব নিষিদ্ধ উপকরন এবং বিষয়কেই (মদ্যপান, পুরুষ এবং নারীদের বিবাহবর্জিত সম্পর্ক, বহুগামীতা, সমকামীতা উল্লেখযোগ্য) কয়েকগুন বেশি করে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং প্রলোভন দিয়ে সাধারন মানুষদের দলীয়করন।
• প্রাকৃতিকভাবে ক্ষমতার ভারসাম্যে পুরুষরা নারীদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী।
তাই কৌশলে পুরুষতান্ত্রিক দর্শনে কোরান তৈরী করা এবং পুরুষরা যেন হাতিয়ার হিসেবে যেকোন পরিস্থিতিতে কোরান ব্যাবহার করতে পারে তা নিশ্চিত করা। নতুন ধর্ম হলেও ইসলামের বিশ্বব্যাপী দ্রূত প্রচারের এটি একটি মূল কারন।
• মুহাম্মদ নিজেকে একেশ্বরবাদের শেষ প্রতিনিধি দাবী করে পরবর্তী যেকোন একেশ্বরবাদের পথ বন্ধ করে বা সন্দেহ প্রকাশে সাহায্য করে। এটি একেশ্বরবাদের অন্য কোন প্রতিনিধিই করেনি। বরং তারা মানুষের কল্যানে সৃষ্টিকর্তার প্রেরীত প্রতিনিধিগন যুগে যুগে আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
এটি মুহাম্মদের খুবই কৌশলী একটি দাবী এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম দ্রুত প্রচারের আর একটি অন্যতম কারন।
• একেশ্বরবাদকে রাজনৈতিক এবং ব্যাবসায়ীক কাজে ব্যাবহারের জন্য উপাস্যের দাবীকৃত দলিল কোরান’এ সমগ্র মানবজাতির পরিবর্তে ব্যাক্তি মুহাম্মদ এবং আরবজাতির সুযোগ-সুবিধাই বেশি নিশ্চিত করা হয়েছে। যেমনঃ মুহাম্মদের পরে কোন প্রেরীত পুরুষ নেই, মূল কোরান আরবী ভাষায় লিখিত সহ ইত্যাদি।
চলবে…
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-১
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-২
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-৩
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।