আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থিয়েটার কালচার



"তারা কোনদিনই আমাদের নির্ভরতার সম্পর্কের পরিবর্তন চায়না। এই হাঙ্গরদের দুনিয়ায়, যাদের পরিবর্তনের শুভঙ্করি ঘটক বলে মনে হয়, নাট্যকলা প্রায়শই তাদের স্বার্থ হাসিলেরহাতিয়ার হয়ে উঠে” ("তারা"- বহুজাতিক সংস্থা, আইএমএফ,বিশ্বব্যাংক, জি-৭ এবং অন্যান্য ) সৈয়দ জামিল আহমেদ নানা রকম সমস্যা ও জটিলতা বাহিত এদেশের পাললিক সময়, যখন বাতাশের সুকণাগুলোও ভারি হয়ে উঠেছে রোগ ও শোকে, আইন ও বিচারের মধ্যে টুপিওয়ালা টোকাই ভয়ে জড় সর পড়ে থাকে হাইকোর্টের রাস্তায়, যখন প্রাকৃতিক সখ্যতা ও শব্দগুলো প্লাবনের টঙ্গে বসে দেখছে বায়বীয় কাল, একটা লাগামহীন ঘোড়া দৌড়ায় সবুজ ঘাসের মাঠে, প্রত্যরে সামনে, খোলা আকাশের নিচে বড় বেমানান দেহ বিকোয় কয়েকটা নিসুতি কুমারী, থিয়েটার এই সময়কালের মধ্যে বিচরন করছে। স্বাধিনতার পর মুক্তির পণ হাতে নিয়ে যে থিয়েটার ডাহুক তিতাস করতোয়া পদ্মা মেঘনা কর্ণফুলির তীর ধরে ধরে পায়ে হেটে, সাতরে যাত্রা করেছিল, সেই পদ্মা মেঘনা করোতোযা তিতাশে পানি নেই। অন্য নদী গুলোও জল শুন্য । ব্রস্মপূত্র নদের তীরে যে থিয়েটার বিকশিত হল সেই প্রিয় নদের জল শোধনের অযোগ্য।

যখন সামাজিক আচরন গুলোও বিক্ষিপ্ততায় বিচ্ছিন্ন হয় , যেমন নগরীর এত নং বাড়িটি কোন রোডে জিজ্ঞেস করলে শুনক শুধুই অসহিষ্ণু এবং বিকৃত ভাবে তাকায়, কথা বলেনা, তখন থিয়েটারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গণমানুষের দল থেকে। গুণীজনরা স্বীকার করে। থিয়েটার গুণীজনরা এও বলে থাকেন যে, থিয়েটার এখন নগরীর লকাল বাসে ঝুলন্ত যাত্রীর মতোই্ । থিয়েটার প্রান্তে এখন প্রায়ই শোনা যায় থিয়েটার দর্শক ও কর্মী শুন্য হয়ে পড়েছে। আবার একথাও শোনা যায় যে থিয়েটার প্রোগৃহে কোনদিনই দর্শক ছিলনা।

দর্শক ও কর্মী শুন্যতার কথা আলোচনা হতে হতে সিগারেট শেষ হয়ে যায় তখন আরেকটা বেনসন এন্ড হেজেজ ব্রান্ডের সিগারেট জ্বালিয়ে আলোচনাটা কারন অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হয় এবং সেটি খুব বেশীদুর যেতে পারেনা। থিয়েটার প্রান্তে আলোচিত সেই কারন গুলো হলো- ১. মানুষ অতিমাত্রায় জৈবনিক ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। ২. রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভাল যাচ্ছেনা। ৩. তরুনরা অতিমাত্রায় ডিজুজ হয়ে পড়েছে। ৪. থিয়েটারে আয়ের কোনো উৎস নেই।

৫. সাধারন মানুষের টিকেট কিনে থিয়েটার দেখার পয়সা নেই। ৬. এবং আরও নানা কারন আলোচনা করে করে তারা ফেরার পথ ধরে। তাদের সঙ্গেই দর্শক ও কর্মীরা মানে এই নগরীর কুলি,মুজুর, শাক ব্যবসায়ী, টোকাই, এস্টেট কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসার, বহুজাতিক কোম্পানীর এক্সিকিউটিভ,সরকারী অফিসার, কেরানী ,উকিল বা বিজ্ঞাপনী কোম্পানীর কপি রাইটার,সাংবাদিক, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্র, ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা বা মসজিদের ইমাম সহ নানা পেশার মানুষেরা বাসের জন্য অপেক্ষা করে। তাদের এক্সপ্রেসনে উদ্বিগ্নতা। বাসের জন্য নয় বরং আরও গভীরে প্রত্যক্ষ করলে দেখা যায় "কি যেন নেই" এর একটা স্ফুলিংগ ঘুরছে সারা শরীর জুরে।

কারো মুখে হাসি নেই। নগরীর চারিদিকে ঝলমলে আলোয ট্রাফিক সিগনালের মতোই পণ্যের প্রচার বাহী বিলবোর্ডগুলো বাড়ি ফেরার পথে মস্তিষ্কে সিগনাল দেয়। নারী পুরুষের কৌশলিক লিলা উপস্থাপন সহ উপদেশ, সাবধানতা বাণী, মায়ের চিঠি,মুক্তিযোদ্ধার চিঠি পড়তে ও দেখতে দেখতে তারা বাড়ি পৌছায়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ এলে টেলিভিশনটা চালু হয়ে যায়। তারপর সংবাদে মানে কিছু দুঃসংবাদ শুনে, নৃত্য ও নাটক দেখে না দেখে, সিনেমার কয়েকটি অংশ দেখে না দেখে "কি যেন নেই" এর সাথে তারা ঘুমিয়েপড়ে।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রিয় পত্রিকার পাতায় চোখ পড়ে। সারা পত্রিকা জুরে দুঃসংবাদ। চিৎকার চেচামেচি। গালাগালি আর দোষ পাল্টা দোষের খবরে ঠাসা। অনেক মতবাদ, অনেক দল সবার প্রচারনায় এদেশের মঙ্গল সুচনা ঘোষনার সাথে অপর ঘোষণার বিষোদগার এবং এইসব বিষোদগারের ভাষা ও শব্দগুলো ঘৃণা আর তীব্র ঘৃণার হলাহল মিশ্রিত থুথু।

পত্রিকা শুধুই প্রচারযন্ত্র । পত্রিকার পাতা জুড়ে আরও অনেক খবর ও সিগনাল। সেগুলোয় চোখ পড়ে বেশী। কি সুন্দর মালাখানি পড়িয়াছে শ্যামা। নতুন কি কাজ করছেন শ্যামা ? একটা নতুন কোমল পানিয়ের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি হয়েছে।

কোমল পানিয়র নামটি এখন বলা যাবেনা। সবাই জেনে গেলে অসুবিধা আছে। মঞ্চের খবর কি ? মহরা চলছে। ছোট করে একটি বিজ্ঞাপনও তাদের চোখ এরায়না । আজ পরিক্ষন থিযেটার হলে...................... নাট্যকর্মী সংগ্রহ চলছে।

এই নিয়ত রক্তস্নাত ভূমি ও ঘরে বাহিরে স্নায়ুবিক অস্থিরতার সময়ে বেড়ে ওঠা বা আগমনী শিশুরা অপেক্ষাকৃত ভালই আছে। অন্ততঃ বিজ্ঞাপনের চালাকি ভাষা ও ঘৃণার শব্দগুলো তারা বুঝতে পারেনা। কিন্তু কিশোর ও তরুনেরা ভাল নেই। সিগনালে সিগনালে তারা বেশামাল । কোনদিকে যাবে ? কাজে বেরুনোর সময় রাস্তার দোকানে কোমল পানিয়র বোতল গুলোর দিকে চোখ পড়ে।

দেন তো একটা। ক্যাম্পাসে পানিয়র দোকানে ভীর পড়ে যায়। রাস্তায় দেখা হয় এক সময়ের তুখোর বাম থিয়েটার কর্মী বন্ধু মানব গুহের সাথে। কি রে কি করছিস? (কিছু করাটা দিয়েই শুরু ) । একটা বিজ্ঞাপন বানাচ্ছি।

কিসের ? একটা মোবাইল কোম্পানীর। কথা শেষে পরিক্ষন থিযেটার হলে সে আমন্ত্রন জানায় । পরিক্ষন থিয়েটার হল সহ সারা নগরীতে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই কিন্তু থিয়েটার নিয়ে আয়োজন চলতেই থাকে। থিয়েটার গুণিজনেরা এইসব আয়োজনে তাদের মুল্যবান সময় অতিবাহিত করেন । নাটকের প্রদর্শনী, কর্মশালা, সেমিনার, আলোচনা, আড্ডায় মুখোরিত হয় নাটকপাড়া বা আযোজন স্থল।

আমরা এই আযোজন গুলোকে নিম্নরুপে উপস্থাপন করতে পারি। প্রদর্শনীতে নাট্যকর্মীদের পরিচিত ও পরিচিতদের পরিচিত এবং বিভিন্ন দলের কর্মীরা নাটকটি উপভোগ করছে। কিন্তু দর্শকের উপভোগে যা সে প্রত্যাশা করে শেষ পর্বে এসেও সে বুঝতে পারেনা আসলে নাটকটি কি বলতে চায়। কি রে কেমন লাগল ? দোস্ত, বুঝতেই তো পারলামনা। তুই যেন কি চরিত্রে অভিনয় করলি ? নাট্য কর্মী ঐ শ্রেণীর বন্ধুটিকে মুর্খ ভেবে বসে।

সবাই মঞ্চ নাটক বুঝতে পারেনারে। মঞ্চ নাটক বুঝতে হলে পড়তে হয়। এই কথাটি নাটক শুরুর প্রথমদিকে সেও শুনেছিল। সুতরাং নাটকটি না বোঝার দায় ভার নিযে দর্শককে ফিরতে হয় আর বোঝাতে না পারার দায় নাট্য কর্মীটি এভাবে এড়াতে চায ‘ আমি অভিনয় করি,নির্মান করি, বোঝানোর দায় তো আমার নয়, কেউ বুঝল কি বুঝলনা বা কি বুঝলনা তাতে আমার কি যায় আসে। কর্মশালার প্রথম দিকে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী তারুন্যিক উচ্ছাসে শুরু করে।

তারপর শরীর তৈরীর মহরায় ফাঁকি দিতে দিতে একসময় ফুরুত। যে কয়েকটা থাকে তাদের মাথায় ঘোরে টিভি বাক্সের খেয়াল। নাটক সমাজ পরিবর্তন করতে পারেনা। এটি বিনোদনের ব্যাপার। প্রশিক্ষক এই বলে শুরু করেন।

নাট্য কর্মী সংগ্রহ চলছে....হ্যালো.. জ্বি..বলুন। আমি মুন । আপনাদের বিজ্ঞাপন দেখে ফোন করলাম। জ্বি জ্বি। আচ্ছা আপনাদের দলে কে কে নাটক করেন ? এই তো আমরা।

না না টেলিভিশনের কে কে ? ও না মানে........। আলোচনা, সেমিনার বা আড্ডায় চলে স্মৃতি ও বর্তমান দিক পর্যালোচনা। একদা থিয়েটার তরুনেরা বিপ্লবের তৃষ্ণা, লড়াকু শরীর ও মন সমেত বাংলাদেশের থিয়েটারকে ভিন্নভাবে চর্চা ও বিকাশের ল্েয এবং প্রিয় বাংলাদেশকে শান্তি ও প্রাকৃতিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখার অদম্য ইচ্ছায এবং থিয়েটারের মহরা করে মতোই হোক বাংলাদেশ অথবা গোটা বাংলাদেশ একসময় মহরা করে চিপা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়ত মহরায় ,এরকম ইচ্ছা ও সময়ে থিয়েটার তরুনেরা সারাদিন শুধুই থিয়েটার করতো। তাত্বিক ইস্টাব্লিসমেন্টের আলোচনাও হয় দীর্ঘ সময় নিয়ে। বেশ করে হাতা কাটা জামা আর মেরুন আটশাট শাড়ি পড়ে শ্যামা সারা হল জুড়ে ব্যাস্ত ।

দশর্কের পানিয়র বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে যায়। আমাদের আলোচনাটাও এখানে এসে ছোট করে একটা বাঁক নেবে। কেমন ছিল আমাদের থিয়েটার ? পথিক ুধার্ত। রাস্তার দুপাশে আমগাছে আম, কলা গাছে কলা সহ নানা ধরনের ফলমূল পেকে ঝুলে আছে। পথিক একটা আম, একটা কলা এবং আরও নানা রকম ফলের স্বাদে ুধা মিটিয়ে হাটা শুরু করল।

পথিক পিপাসার্ত। সামনে একটা বাড়ি । বাড়ির আঙ্গিনা ঘিরে বাঁশ ঝাড় । বাশ ঝাড়ের নিচে একটা কলশি পাতানো, পাশেই একটি মাটির মগ। পথিক পানি পান করে হাটা শুরু করল।

আজ মানত মেলায় রাম লনের পালা শুরু হবে। চলবে সাতদিন। পালা শোনার জন্যই সে বাড়ি থেকে বের হয়েছে । এই সাতদিন সে মেলায় কাটাবে। সারারাত পালা চলে।

গায়েনরা সারাদিন ঘুমায় । রাতের বেলা আবার শুরু করে। মেলায় কানায় কানায় মানুষ। গানের প্যান্ডেল ঘিরে ঠেলাঠেলি। আরেকটু সামনে যেতে পারলেই হয়।

ঘাসের উপর খর বিছানো। তাতে বাঁশের বেড়া দিয়ে নারী পুরুষ আলাদা করা হয়েছে। রাম লক্ষনের পালা শুরু হলে সবাই চুপ হয়ে যায়। একের পর এক অভিনিত দৃশ্যের সঙ্গে দর্শক একাকার হয়ে মিলে মিশে কখনো লনের মতো প্রতিবাদি কখনো রামের মতো ধৈর্য্যশীলতার মধ্যে তার স্বপ্ন ও বাস্তবাতার ভ্রমণ চলতে থাকে। সিতার বনবাসে নারীরা ময়লা শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে থাকে।

পুরুষেরা সহানুভূতির দৃষ্টি দিয়ে তা অবলোকন করে। সাতদিন শেষে দর্শক এই ভেবে ভেবে বাড়ি ফেরে যে রামের মতো ধৈর্য্যশীল আর লক্ষনের মতো প্রতিবাদী হতে হবে। উপরোক্ত দৃশ্যটি খুব বেশীদিন আগের নয়। এবার সাময়িক প্রেক্ষাপটটির সাথে বাঁকের বর্তমানটিকে মিলিয়ে নেই। ড. লুৎফর রহমান নাট্য বিষয়ক প্রবন্ধ গ্রন্থে নানা রকম তথ্য প্রমাণাদী হাজির করে প্রমাণ করেছেন যে, বাংলা থিয়েটার যাত্রা মাত্র দুইশত বছর আগে বলে যারা প্রচার করছেন তারা ঠিক বলছেননা ।

কারন বাংলা থিয়েটার বরং নিম্নত একহাজার বছর ধরে বিচরনশীল। চর্যাপদে নাটকের সকল গুণাবলী বর্তমান । ( দেখুন- নাট্য বিষয়ক প্রবন্ধ,লুৎফর রহমান, বাংলা একাডেমী-২০০০) তাহলে চর্যাপদ পাঠে ভক্তি আনন্দের মেরুকরন আর পথিকের সাতদিনের আনন্দ শেষে রাম লক্ষন বেসে ঘরে ফেরার পথে মানুষের বসবাসের রাজনৈতিক ও মানবিক উন্নয়নের যাত্রায় জাতীয় উন্নয়নের যে পরিসুদ্ধ সংশ্লেষন ঘটে, এই সময়ের দর্শকও তো সেরকমই প্রত্যাশা করে। কারন হাজার বছরে বহু জল প্রবাহ জল বিবাদে ধাবিত হলেও এই ভূমি উপত্যকার মানুষ মহৎ ও মুক্ত হবার বাসনায় সর্বগামী । আমরা সৈয়দ জামিল আহমেদের বই থেকে আরেকবার পাঠ নিতে পারি।

তিনি বলছেন "সর্বদাই সংস্কৃতির অর্থ হল উন্নয়ন, তাই নাট্যকলা সেই অর্থে সর্বদাই উন্নয়ন মূলক; সর্বদাই উন্নততর হবার প্রচেষ্টায় শ্রান্তিহীন। ’ (দেখুন- তৃতীয় বিশ্বের বিকল্প নাট্যধারা, উন্নয়ন নাট্যতত্ব ও প্রয়োগ, পাঠক সমাবেশ,২০০১) কিন্তু দুঃক্ষের বিষয বাংলাদেশে থিয়েটার কে জাতীয় উন্নয়নে এখনো সঙ্গী করা হয়নি বা থিয়েটার জাতীয় উন্নয়ন সহযোগী হয়ে উঠতে পারেনি। উন্নয়ন মানে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতে পারেনা। তৃতীয়বিশ্বের দেশগুলি নিজেদের নিরপেক্ষ দাবী করলেও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বৃহৎ শক্তির রাষ্ট্র দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত। বৃহৎ শক্তিগুলি সবসময় প্রত্যাশা এবং চেষ্টা করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে নিজেদের বলয়ের মধ্যে আটকে রাখার।

বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দেশ । বহুজাতিক পুঁজির বাধাহীন অনুপ্রবেশ আর সাম্রাজ্যবাদের অস্রের ঝনঝনানীতে সামাজিক সাংস্কৃতিক অবক্ষয় শুরু হয়েছে এদেশেও। এদেশের অত্যন্ত সুপ্রাচীন ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। সাম্রাজ্যবাদের আগুনের ফুলকীর ঝাক এই তৃনভূমিকেও খন্ডিত করার নতুন এক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যয়মান সু-কৌশল অবলম্বন করেছে। বর্তমান থিযেটার কর্মী আর দর্শকের চোখে মুখে তারই প্রভাব ও প্রতিবাদের ছাপ দেখা যায়।

তাই শ্যামাকে দেখলেই দর্শকের কোমল পানিয়র পিপাসা লাগে, যেহেতু থিয়েটার, দর্শক ও নাট্যকর্মীর বন্ধুত্বময় ভালবাসার সুতোর মাঝখানে অবস্থান করে , সেই মহৎ সম্পর্ক পরস্পরকে না বোঝার দায় প্রক্ষাগৃহের কোন এক কোণে চুপটি করে বসে পড়ে আর মুনের ভাই ভূল করে মুনের মোবাইলটা নিয়ে রাস্তায বের হলে বিব্রত হয়ে চিৎকার করতে থাকে- - কে বলছেন - আমি একটি নাটকের দল থেকে বলছি। - কিসের দোকান থেকে বলছেন। - নাটকের। - নাটকের মানে কি টেলিভিশন নাটকের ( নাটকের ভাইয়া ক্ষেপে যায় )। - জ্বি না, আমি একটি মঞ্চনাটকের দল থেকে বলছি।

- মুন কি ইদানিং নাটক ফাটকও করে নাকি। ( ফোনের এপারে নাট্যকর্মীটি নাটক কে ফাটক বলাতে বেশ রেগে যায় ) দেখুন ভাই আপনি আর ফোন করবেন না। মুন নাটক ফাটক করুক আমরা পরিবারের কেউ চাইনা। ও বাচ্চা মানুষ.............। এবার একটা সুন্দর প্রশ্ন আলোচনায় নিয়ে আসা যেতে পারে এবং প্রশ্নটির উত্তর অনুসন্ধানও করা যেতে পারে।

প্রশ্নটি এরকম, তবে কি এখন আলোচনার প্রেতি কোন নাটকই হযনা? উত্তরটি এক শব্দেই বলা যায় ‘হয়’। মানুষ প্রত্যেকটি আনন্দেই নিজেকে আবিস্কার করে বা নিজেকে আবিস্কার করার জন্যই আনন্দ করে। এই আবিস্কার মানে মুক্তি। সাম্রাজ্যবাদের লাঠি যখন মানুষকে খোয়ারে প্রবেশের পক্রিয়া সম্পন্ন করছে তখন মানুষও বুঝে সেই প্রক্রিয়া আর চিনে গেছে খোয়ার। তাই সাধারন মানুষ যেমন ধান, চাল, বাশ দিয়ে সুপ্রাচীন নাট্য চর্চার উদ্যোগ কে জনাকীর্ণ করেছিল, এখনকার থিয়েটারটি নেটওয়ার্কিং’র চাকা ধরে খোয়ারের দিকেই ধাবমান।

কিন্তু সাধারন মানুষ প্রবাহমান ধারনায় এখনো মেতে উঠতে ভালবাসে। শুধু "কি যেন নেই" এর "নেই-টাকে আবিস্কার আর সেই পথের প্রতিবাদ আনন্দের সূত্রটা আবিস্কার ও প্রয়োগ করতে পারলেই থিয়েটার হবে জনগনের । জনগনের দ্বারা জনগনের থিয়েটার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.