আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসন রাজার বাড়ি থেকে ______সৈয়দা মারহামা

আমার বাংলা বর্ণলিপি পাঠ এভাবেই শুরু। একুশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। সৈয়দা মারহামা

সেদিন সকালে আমি মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছিলাম। তখন বাবা আমায় ডেকে বলেন-তুমি কি আমার সাথে আজ শেকড় সন্ধানী অভিযাত্রায় যাবে? আমি দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম। তারপর অনেক্ষন পরে বলে উঠলাম যাব, কিন্তু আমি চিন্তাতে পড়ে গেলাম যে আমার মাদ্রাসা খোলা, মাদ্রাসা যে বাদ দিতেও পারি না।

আমি তখন বাবাকে বললাম, আমার মাদ্রাসা খোলা, আমি এখন কি করবো? মাদ্রাসায় যাবো কি না? বাবা বললেন-তুমি মাদ্রাসার জন্য তৈরী হয়ে মাদ্রাসায় যাও, আমি তোমাকে সেখান থেকে নিয়ে যাবো। তারপর আমি মাদ্রাসায় গেলাম। তিনটি ক্লাস করলাম। হঠাৎ দেখি বাবা চলে এসেছেন। তিনি আমাকে বললেন-তোমার ব্যাগ নিয়ে এসো।

তখন আমি ব্যাগ নিয়ে চলে গেলাম গাড়িতে। গাড়িতে উঠার পর বাবা আমার হাতে একটি ব্যাগ দিলেন। আমি ব্যাগটি খুলে দেখি ভেতরে আম্মার দেওয়া অনেকগুলো চুড়ি। আমি চুড়িগুলো পড়লাম। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ড দিলেন।

তখন ঘড়ি দশটা যখন আমরা পৌছলাম দরগা গেটস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে। সেখানে প্রবেশ করে আমি অনেক লোক বসা দেখতে পেলাম। তাদের সবার নাম জানিনা। কিন্তু অনেকের নাম জানি। যেমন- সংসদের সেক্রেটারী হারুনুজ্জামান চৌধুরী, বাবার প্রিয় বন্ধু গল্পকার সেলিম আউয়াল, কবি আব্দুল বাসিত মোহাম্মদ, কবি সুফিয়া যেইমিন ডেইযি, সেলিম আংকেলের স্ত্রী এবং তাঁর মেয়ে।

বাবা এই সময় আমাকে একটি মেয়ের সাথে পরিচিত করে দিলেন, সে একজন শিল্পী, তার নাম-পপি কর। সেও আমাদের সাথে ছিলো। এরপর আমি আর সে বসে বসে গল্প করি। তারপর হঠাৎ বাবা এসে বলেন-তুমি উঠে এসো, আমাদের গাড়ি চলে এসেছে। এরপর আমি পপিকর কে নিয়ে গাড়িতে উঠলাম।

গাড়ি চলতে থাকে। আমরা প্রথমে গিয়ে আম্বরখানা থামি। সেখান থেকে একটি মাইক নেই। এরপর আমরা আখালিয়া গিয়ে থামি। এরপর কুমারগাঁও, টুকের বাজার, লামাকাজি, গোবিন্দগঞ্জ, ছাতক রোড ছাড়িয়ে জালাল পুর, জাউয়া বাজার, বীরগঞ্জ, তারপর আমরা সুনামগঞ্জ গিয়ে থামি।

ওহ! একটি কথা বলতে ভুলে গেছি। আমাদের সাথে একজন নতুন কনে গিয়ে ছিলেন। এই কনের পড়নে ছিলো একটি লাল শাড়ি। ঙশ তারপর আমরা গিয়ে বসি বাসের সামনের সিটে। আর আমার সাথে বসে পপি কর।

একটার পর আমরা হাসন রাজার বাড়িতে গিয়ে পৌছি। পৌছার পর একজন লোক, হাসন রাজার সম্পর্কে আত্মীয়, আমাদেরকে বাড়ির ভিতর এক রোমে নিয়ে বসান। যে ঘরে আমরা বসলাম সেখানে অনেকের ছবি দেখতে পাই। বাবা আমাকে এবং পপি কর কে একটা করে জুস দিলেন। জুসটা আমরা আমাদের ব্যাগে রেখে দেই।

এরপর পপি করের ভাই অলক এসে পপি করকে বললেন-চলো বোনের বাসা থেকে ঘুরে আসি। পপি করের সাথে আমিও বেরিয়ে আসি। বাবা আমাকে বললেন-চলো পপি করের বোনের বাসা থেকে ঘুরে আসি। এরপর আমরা রিক্সা নিয়ে পপি করের বোনের বাসায় যাই। সেখানে বাবা দই, মিষ্টি নিয়ে গেলেন।

আমরা সেখানে গিয়ে হাত-মুখ পরিস্কার করলাম। এরপর পপি করের বোনের ঘরে আমাদেরকে দই, নিমকি, মিষ্টি দেওয়া হলো। পপি কর দই খায়, আর আমি শুধু নিমকি খেয়েছি। এরপর আমরা তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার হাসন রাজার বাড়ি ফিরলাম। সেখানে এসে দুপুরের খাওয়ার পর তার মিউজিয়ামে ডুকে হাসন রাজা এবং তাঁর দুই পুত্রের ছবি দেখলাম।

তাঁর খরম এবং তাঁর স্ত্রীর খরম দেখলাম। তাঁর পানদানি দেখলাম। তিনি যে কাপড় পড়তেন তাও দেখলাম। আরো অনেক কিছু দেখলাম। তারপর আমরা গিয়ে অনুষ্ঠানে আসরে বসলাম।

তখন সেলিম আংকেল এসে মঞ্চে উঠে অনেকের নাম প্রকাশ করলেন। যাদের নামা প্রকাশ করলেন তারা একেএকে গিয়ে মঞ্চে বসলেন। তারপর সেলিম আংকেল আরো অনেকের নাম প্রকাশ করতে লাগলেন। এই নামগুলো হলো যারা তার সামনে সদস্য বসা ছিলো তাদের নাম। তারপর আমাদের অনুষ্ঠান আরম্ভ হলো।

আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলো বক্তব্য, গান। অভিনয় করে গান গাওয়া হয়েছিল। তারপর অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। সাথে সাথে মাগরিবেরও আজান হয়ে যায়। নামাজের পর আমরা আবার সিলেটের দিকে রওয়ানা দেই।

সিলেট এসে আমরা দরগাগেটস্থ বাটার সামনে থামি। সেখানে ছিলো তখন অনেক পুলিশ। পুলিশ এসে বাবাকে বললো-আপনারা বাসটা যলদি বিদায় করে দেন। এখানে মারামারি হয়েছে, অনেক লোক এসে বাসটা ভেঙ্গে দেবে। তখন বাবা বললেন আমরা বাসটা সরিয়ে দিচ্ছি।

তারপর পুলিশ চলে যায়। তখন আমরা পপি করকে বিদায় দেই। আমি এবং বাবা মুসলিম সাহিত্য সংসদে ডুকি। আমরা ভিতরে চেয়ারে বসলে বাবা চা খান, আর আমি বিস্কিট খাই। তারপর সেলিম আংকেল এসে ডুকেন।

তিনি তার আসনে বসেন। তারপর সেখান থেকে আমি, বাবা এবং কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সেক্রেটারী এক গাড়িতে বাড়ির দিকে পথ দেই। এখানেই আমাদের ভ্রমণ শেষ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.