আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিবিরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলছি ...

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি (আমার ফেইস বুকের লেখা) আমি জানি আমার ফ্রেন্ড লিস্টে প্রচুর শিবির সদস্য আছে। আমি তাদের ব্লক করিনা যদি না গালিগালাজ করে। আমি বাস্তবতা মেনেই চলতে চাই - শুধুমাত্র একটা নৈতিক পার্থক্য ছাড়া আমিও তাদের মতোই মানুষ। শিবিরে কর্মীরা ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় - সেইটা তারা চাইতে পারে। গনতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে যেমন বামরা কমিউনিজমের মাধ্যমে ডিক্টেটরশীপ অব পলিতারিয়েত কায়েম করতে চায় - শিবির ইসলামী খেলাফল চাইলে আসমান ভেংগে পড়ার মতো কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।

যদি বাংলাদেশের মানুষ ইসলামী শাসন চায় - গনতান্ত্রিক ভাবে তারা তা চাওয়ার মতো সাংবিধানিক অধিকার রাখে - তেমনি ডিক্টোটরশীপ অব পলিতারিয়েতও চাইতে পারে। এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার - পরাজিত শক্তি আর বিজয়ী শক্তি সমানভাবে টিকে থাকা মানেই যুদ্ধ - আর বাংলাদেশ থেকে জামাতের একাত্তরে বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থান এবং গনহত্যার সম্পৃত্ততার কারনে তাদের অস্তিত্ব মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। তাই জামাত এবং তার অনুসারী শিবিরকে বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতেই হবে। গনতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে যে কোন মতবাদের রাজনীতি করার যে অধিকার - ধর্মের রাজনীতিও সেই অধিকার পাবে - এই বিষয়ে বিপ্লবী হওয়ার সুযোগ নাই। কিন্তু শিবিরকে নিয়ে সমস্যা হলো একটাই - এরা ইসলামের নামে আল্লাহর আনুগত্যের পাশাপাশি তাদের নেতাদের আনুগত্য করার শুরু করে - কিন্তু নেতাদের প্রতি তাদের অন্ধ আনুগত্য তারা বুঝতে অক্ষম অথবা তাদের বিবেক যেন সেই ভাবে প্রশ্ন না উঠাতে পারে সেই ভাবেই তাদের কে ট্রেইন আপ করা হয়।

কথাটা শিবিরের কর্মীরাই ভাল জানে - কি কঠিন প্রশিক্ষনের মধ্য দিয়ে তাদের ধীরে ধীরে সামনে দিকে যেতে হয় - একই বাম কর্মীদেরও ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শিবির কর্মী যারা আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছে - তাদের কিছু প্রশ্ন করতে চাই - কোন তাত্ত্বিক আলোচনা নয় - নিজের বিবেককে প্রশ্ন করে উত্তরগুলো দিতে চেষ্টা করুন। শুরুটা করি আজকের টিভিতে দেখা একটা দৃশ্য দিয়ে - একটা মিনিবাস - যাত্রী বোঝাই - দ্রুতগতিতে যাচ্ছে - হয়তো ড্রাইভার ভয় পেয়েছে রাস্তার পাশে জামাত-শিবির কর্মীদের দেখে। সেই বাসের দিকে মিসাইলের মতো ছোড়া হলো শিবিরের জটলা থেকে - মিশাইল বলছি কারন যারা গতিসূত্র বুঝেন তারা বুঝবেন উল্টো দিকে থেকে একটা ১০০ কিলোমিটার/ঘন্টা বেগে আসা ঢিল ৮০ কিলোমিটার বেগে আসা বাসে আঘাত করলে তার ইমপেক্টটা কত গভীর হতে পারে। বাসের ড্রাইভার নিয়ণ্ত্রন হারালো - বাস কাত হয়ে পড়ে গেলো - একজন যাত্রী (নাম জানা হয়নি) চাপা পড়ে মারা গেলো।

দৃশ্যত শিবিরের কয়েকজন সমর্থক একজন নিরাপরাধ খেটে খাওয়া মানুষকে খুন করলো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে - যখন শিবির কর্মীরা বাসটাতে ঢিল ছুড়ছিলো তারা কি ভাবেনি সেই বাসে কিছু মানুষ আছে যারা মারা যেতে বা আহত হতে পারে? কোন অপরাধে বাসের ভিতরের যাত্রীদের উপর এই জুলুম করা হচ্ছে? জানি উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন। কারন যে বা যারা ঢিল ছুড়েছে - তারা শুধু নেতার নির্দেশ পালন করেছে - যদিও ফৌজদারী আই্নে এইটা একটা অপরাধ কিন্তু রাজনৈতিক খুন হিসাবে এই খুনের বিচার বাংলাদেশে হবে না নিশ্চিত। আর এই ধরনের আমজনতার মৃত্যুতে সমস্যা ছিলো না যদি শিবির কোরানে কথা না বলতো - যদি হাদিসের কথা না বলতো। কোরআন কি বলে এই ধরনের কর্মকান্ডের বিষয়ে - (2:11) আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি।

(2:205) যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না। (5:32) এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন।

বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে। এতো কিছু জানার পরও কিভাবে শিবিরের কর্মীরা নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার জন্যে বাসে আগুন দিচ্ছে - চলন্ত বাসে ঢিল ছুড়ছে? এম্বুলেন্স আটকে রেখে রোগী মৃত্যুর কারন হচ্ছে? কার জন্যে তারা মানুষের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে? কার আনুগত্য করছে শিবির? ইসলাম কি কোন একজন মানুষের জন্যে নির্ধারিত - একজন নেতাকে রক্ষা না করলে ইসলাম থাকবে না এই ধারনা শিবির কোথায় পেলো? বিচারপ্রার্থী মানুষের বিচারের দাবীকে বন্ধ করা জন্যে শিবির যে নেতাদের আনুগত্য করছে তারা কি জানে ১৯৭১ সালে তাদের নেতাদের ভূমিকা কি ছিলো? তারপরও দেখি ইসলাম কি বলে - (6:164) আপনি বলুনঃ আমি কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য প্রতিপালক খোঁজব, অথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালক? যে ব্যক্তি কোন গোনাহ করে, তা তারই দায়িত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদেরকে সবাইকে প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অনন্তর তিনি তোমাদেরকে বলে দিবেন, যেসব বিষয়ে তোমরা বিরোধ করতে।

আজ যারা গোলাম আযম সাঈদীকে রক্ষার জন্যে দাঙ্গা হাংগামা করছেন - তাদের দায় তাদের নিজেদেরকেই নিতে হবে - তাদের ৭১ এর ঘৃন্যকাজের সাথে জড়িত মুখোশধারী নেতারা তাদের দায় নিতে পারবে না - এই কথাটা কি শিবির কর্মীরা জানে না? তাদের বোঝা নেতারা বহন করবে না। একজন নিরপরাধ মানুষকে পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য পাপ করার দায় কিন্তু নিজেকেই নিতে হবে। যারা হরতালের নামে রাস্তায় গিয়ে সন্ত্রাস করে ভয় দেখিয়ে মানুষকে ঘরে রেখে দিতে চায় - তারা কি জানে না যে - (2:191)বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। (আংশিক) শিবিরের কর্মীদের প্রতি অনুরোধ করছি - কোন ধরনের সন্ত্রাস আর হাঙ্গামা ৭১ এর অপরাধ থেকে তোমাদের নেতাদের রক্ষা করতে পারবে না। ভুল করে নিজেদের জন্যে কঠিন শাস্তি টেনে না আনাই ভাল।

বাংলাদেশে জামাতে ধর্মের নামে কৌশলের রাজনীতি আর সমযোতার দিন শেষ। জামাত নিষিদ্ধ হচ্ছে নিশ্চিত। অর্থ বা দুনিয়ার সুবিধার জন্যে একটা নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্যে হয়তো কাজ করার জন্যে শিবির কর্মীদের মধ্যে অন্ধ আনুগত্যের অভাব হবে না। তাদের সবাইকে ভেবে দেখতে অনুরোধ করবো - শেষ বিচারে সবাইকে নিজের হিসাব নিজেকেই দিতে হবে - ধর্মের নামে যে ফেতনা তৈরী করছে জামাতের রাজাকার আলবদর নেতারা - তার থেকে নিজেকে রক্ষা দায় কিন্তু নিজের, সুতরাং সময় থাকতেই সবার তওবা করে নেতাদের আনুগত্য ত্যাগ করে রসুল (সঃ) এর পথে গিয়ে আল্লাহ আনুগত্যের ফিরে যান, আল্লাহ নিশ্চয় ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.