আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোরবানীর মানবিকতা

এডিট করুন

হ্যা মানবিক দিক থেকে দেখলে কোরবানী বিষয়টা কেমন যেন লাগে, যদিও আমরা প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণীর দেহ ভক্ষন করি নিঃসংকোচে, যেহেতু তাদের হত্যাযজ্ঞ আমাদের চোখের অগোচরে হয়ে থাকে, আর তাই তা আমাদের মনে কোন প্রভাব বিস্তার করে না। কথায় আছে, চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। হত্যা দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত নন আপনি। কিন্তু দেখুন এই দৃশ্য আপনার মত অনেকের মনে লুকিয়ে থাকা মানবিকতাকে বের করে আনছে। একটা মমত্ববোধ জন্ম দিচ্ছে মনে।

তর্ক হতে পারে, তাই বলে একটা প্রাণের বিনিময়ে এই মানবিকতার জন্মদানে কি লাভ? হ্যা কিছু প্রাণ এখানে উৎসর্গ করা হচ্ছে। কিন্তু সেটা কিন্তু একদিনের জন্যই। একদিনের জন্য এই উৎসর্গ কিন্তু আপনার মনে চিরদিনের একটা মমত্ববোধ এনে দিচ্ছে, বছর বছর যেটা শুধু ঝালিয়ে নেয়া হচ্ছে যাতে মরচে না পড়ে। কোন কিছু পেতে হলে সংগ্রাম করতে হয়। তাতে কিছু ক্ষয় ক্ষতি হয় এবং কাউকে সেই ক্ষয় ক্ষতির কাজটা করতে হয়।

যোদ্ধা নিজের দলের জন্য, নিজের দলের ভালর জন্য অন্য দলের কিছু ক্ষয় ক্ষতি করে। তাই বলে সবাই কিন্তু যোদ্ধা নয়। সে এই নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে বাকী সবার মানবিকতাকেই রক্ষা করে। এটাও এক ধরণের ত্যাগ বা উৎসর্গ। অন্যের ভালর জন্য নিজের মনের মমত্ববোধকে বিসর্জন দেওয়া।

এই যে আপনার মনে মন খারাপের জন্ম নিচ্ছে, আপনি কিছুদিন বিষন্ন হয়ে থাকছেন এটা কিন্তু আপনার উপকারই করছে। যারা জবাই করে তারা যোদ্ধা হয়ে আমাদের বাকী সমাজের জন্য এই উপকারটুকু বয়ে আনে। আপনাকে যতই নীতিকথা শোনানো হোক না কেন আপনার চোখে কিন্তু জল আনা সম্ভব না। অথচ এই কোরবানী হয়তো আপনার জন্য কয়েকদিনের মন খারাপ এনেছে, আপনার চোখে জল এনেছে। আপনার মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলেছে।

এমনকি যে জবাই করে বা যে জবাইয়ের সময় পা ধরে রাখে তারো কিন্তু খারাপ লাগে, আপনি জানেন কিনা জানিনা। আমি নিজেই এইরকম খারাপ লাগাদের একটা উদাহরণ। ঐযে একটা কথা আছেনা, আমার যত অহংকার ডুবাও চোখের জলে। তেমনি কোরবানীর এই রক্তে আমাদের ভেতরের কাঠিন্যটা ডুবে যায়। আর কোরবানীর উদ্দেশ্যই কিন্তু নিজের মনের পশুত্বকে ( কাঠিন্যকে ) হত্যা করা।

আপনারা হয়তো এর ফলে সৃষ্ট বিকৃতির কথাও আনতে পারেন। যেমন বেশ কিছুদিন আগে এক হুজুর তার নিজের সন্তানকে জবাই করেছে। এক্ষেত্রে বলব, কোন কিছুই শতভাগ শুদ্ধ নয়। সব কিছুরই ব্যাতিক্রম হিসেবে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকে। কিন্তু এর ফলে সমাজের বিরাট অংশের মূল ঘটনাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না।

আর গরীবের জন্য বরাদ্দকৃত মাংশের বহুল চর্বিত চর্বন কথাগুলো বলার দরকার নাই। সবাই আমরা এটা বেশ ভালই বুঝি। আর যারা ডিপ ফ্রীজ পার্টি আছেন তারা নিতান্তই দারিদ্রসীমার নীচের দারিদ্রসীমায় অবস্থানকারী। তারা এতই গরীব যে গরীবের মাংশটুকুও তাদের লাগে। সোজা বাংলায় অভাবের তাড়নায় তারা গরীবের মাংশটুকু চুরি করতেও পিছপা হন না।

উনাদের অর্থনৈতিক ও মানসিক উন্নতি কামনা করছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।