আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোটবেলার কথা মনে পড়ে

অতি চালাক কিংবা অতি বোকা ।

ছোটবেলায় সাধারণত সবাই অন্যের মনোযোগ আকর্ষনের চেস্টা করে বেশী। আমার ক্ষেত্রে মাত্রাটা একটু বেশীই ছিল মনে হয় । আমার সমবয়সী বোন আমার থেকে প্রতিযোগীতায় পিছিয়েই থাকত। অতিরিক্ত যত্ন আত্তি আদায়ে কায়দা করতে পারত না ...ত আমি ত সেয়ানা কম ছিলাম না মা সারাদিন পর যখন আসত বাসায়, শুরু হয়ে যেত সবার প্রতি আমার অভিযোগ।

এরপর যখন আমার ছোট বোন আমার প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ালো তখন বেশ কিছুদিন আমি আমার জায়গা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই কি আর করা কিন্তু কিছুদিন পরই আমি আবার নতুনভাবে শুরু করে দিই। যদিও ছোটটাকে আমি খুব ভালো পেতাম কিন্তু আমি চাইতাম না আমার জায়গায় সে রাজত্ব করুক তখন ওকে আমি আমার দলে টানার চেস্টা করি এবং সে অনায়াসেই আমার দলে চলে আসে শুরু হয় আমাদের দুজনে মিলে বান্দরামি। বড় আপু যখন আমার বিরুদ্ধে নালিশ করার চেস্টা করত শুরু হত আমার অভিনয়। আর এদিকে ত ছোটটা আমার দলেই আর একটা ট্রিক্স কাজে লাগাতাম তা হল আমাদের কাজের মেয়েকে আমার দলে রাখার কায়দা করতাম। সারাদিন এদের সাথে মজা করতে করতে বেশ ভালো ভাবেই দিন কাটত বলতে গেলে।

স্কুলে যাওয়ার চাইতে তাই বাসায় থাকাতেই আমার আগ্রহ ছিল প্রবল স্কুলের মেয়েদেরকে কেন জানি ভয় করতাম(আমিই ত ছিলাম এদের মধ্যে নেতৃস্থানীয়)কারন ওরা ত আমার নেতৃত্ত্ব মেনে নিবে না। পড়াশুনার অভিনয় চলত । কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন বিকালে আমার লাগত চরম ভয় ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দিতাম। টানা ৭/৮টা পর্যন্ত কান্নাকাটির পর যখন সবাই বিরক্ত তখন আব্বার বকাবকিতে আম্মা সব কাজ ফেলে আমায় নিয়ে বসে পড়ত। সে আমার সবকিছু এমনভাবে রেডি করে দিত যে ভয়টা তখন আর থাকত না।

আমার পড়া শুরু হত। আর তখন আম্মাকে আমার পাশে ঠায় বসে থাকতে হত। উঠে গেলেই আমি পড়া বাদ দিয়ে ক্যানক্যান শুরু করতাম অনেক সময় দেখা যেত আমার পড়া শেষ হতে হতে রাত ১/২ টা বেজে গেছে। এই সময় পর্যন্ত আমার মা আমার সাথে জেগেই থাকত। আর পরীক্ষার সময় আম্মা ছাড়া কেউ সাথে গেলে আমি গো ধরে থাকতাম।

কাজেই আম্মাকেই যেতে হত আমার সাথে । এমনকি হল থেকে বের হয়েও আম্মা না থাকলে আমি ভয়াবহ কান্ড করে ফেলার হুমকি দিতাম। তাতে আমাকে হল থেকে নিয়েও আসতে হত তাকেই। আমার দাবিটা ছিল আম্মা আমার পরীক্ষা উপলক্ষ্যে অফিস ছুটি নিক। নিতেও হত তাকে অফিস ছুটি (নাছোড়বান্দা আমি) এখন আর আম্মা আমার সাথে যেতে পারেনা দূরে চলে আসার কারনে।

কিন্তু সে এখনো আমায় নিয়ে চিন্তা করে আর আমার বড় আপুকে বলে দেয় আমাকে যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে দিয়ে আসে আর এখন আমিই আমার আপুকে আসতে মানা করে দিই......কিন্তু প্রতিটা পরীক্ষায় আমি এখনও আমার মাকে অনুভব করি...আর ভাবি তাকে যদি আগের মতই সবসময় কাছে পেতাম আমার ছোটবেলার মত আটকে রাখতে পারতাম ফন্দি করে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।