আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোটবেলার গান



ব্লগার লাল দরজা ভাইয়ার একটি পোস্টে (ওরা আমাদের সন্তান, উটের জকি নয়! ) হঠাৎ চোখ আটকে গেলো একদিন। এতবেশী আটকালো যে সেই পোস্ট টা আমি বারবার ঘুরে ঘুরে পড়তে গেলাম। পড়তে যাবার কারন ছিলো শুধু পোস্টটি ই নয়। পোস্টে করা অনেকের মন্তব্য। বিশেষ করে মানবী আপুর।

মন্তব্যের লোভেই গেছিলাম সে কথাটি পুরোপুরি ১০০% সত্যি না। মন্তব্যের ঘরের অনেকের তুলে আনা ছোটোবেলার গান গুলো আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো আমার অতীতে । যে অতীত শত অপ্রাপ্তির মাঝেও আমার বড় প্রিয়। আমার ছেলেবেলা আর সাথে জড়িয়ে থাকা ছেলেবেলার গান গুলো। মনে পড়ে ছোট্ট বেলায় প্রথম শেখা ছড়াগানটির কথা, ইষ্টিকুটুম মিষ্টি কুটুম কুটুম পাখীর ছা খোকন শোনা গান ধরেছে তাইরে নাইরে না।

পাশের বাড়ীর মেয়েটির হারমোনিয়ান বাজিয়ে এই গান গাওয়া দেখে ও শুনে মুগ্ধতায় আমার মাথা খারাপ হয়ে গেলো। ওকে বললাম কি করে রিড টিপে বাজাতে হয় শিখিয়ে দাওনা। ও দিলোনা। অগত্যা আর কি করা, আপ্রান চেষ্টা শুরু হলো। চেষ্টায় কি না হয়, আমি সারাদিনের প্রচেষ্টায় সন্ধ্যার দিকে ঠিকঠাক গানটা নির্ভুল তুলে ফেললাম।

তার কিছু দিন পর গানের টিচার শেখালো টাট্টু ঘোড়া পাড়লো ডিম শেয়াল দিলো তা দুদিন পরে বের হলো এক কানা বগীর ছা বাহ বাহ বাহ। বাহ বাহ বাহ বাহবা দিতে দিতে আমি আশেপাশে পাড়াপড়শী আত্নীয় স্বজন সকলের কানের পর্দা নষ্ট করে দিলাম কদিনের ভেতরেই। কত গানই না শিখেছিলাম সে সময়, কালের স্রোতে ভুলে যেতে বসেছিলাম সেসব। মানবী আপু , লাল দরজা ভাইয়া আমাকে আমার স্মৃতির মনিকোঠায় ফিরিয়ে নিয়ে গেলো সেদিন। আজকে দেখলাম লালদরজা ভাইয়া আবার বাচ্চাদের গানের প্রতিযোগীতা মূলক অনুষ্ঠানে একটা বাচ্চাকে ইঁচড়ে পাকা গান গাইতে দেখে ক্ষেপে আগুন হয়ে একটা পোষ্ট দিলো।

হাসি পাচ্ছে সে গানের বর্ণনা শুনে, মনে পড়ছে নিজের ছেলেবেলা। আমি একবার ক্লাস থ্রীতে পড়তে একটা গান শিখে আসলাম এক বান্ধবী হতে। গান টা ছিলো বাংলা ছায়াছবির একটি গান। শিখে এসে বিকেল বেলা যেইনা হারমোনিয়াম নিয়ে গাইতে শুরু করলাম। " তুমি চোখের আড়াল হও কাছে কিবা দূরে রও মনে রেখো আমি ছিলাম, এই মন তোমাকে দিলাম।

" মা এসে সামনে দাড়ালেন। দেখলাম রাগে অগ্নিমুর্তী ধারন করেছেন। জিগগাসা করলেন এই গান কোথা থেকে শিখে এসেছি?? উত্তর দিলাম রুমার থেকে। মা বলল তোমার এখনও এই গান গাওয়ার বয়স হয়নি। পৃথিবীতে অনেক অনেক গান আছে, সব সময় খেয়াল রাখবে কোনটা তুমি গাইতে পারো আর কোনটা না।

কোনটা তোমার বয়স রুচি ও শিক্ষাদীক্ষার পরিপন্থি না। তখন এত শক্ত কথা বুঝিনি, কিন্তু সাবধান হয়ে গিয়েছিলাম। আজ ভাবি, বানিজ্য নাহয় কিছু স্বার্থাণ্বেষী মানুষ নিজ স্বার্থে করে থাকে। কিন্তু বাবা মায়েরা কি করেন??? তারা কি চোখ বুঝে কানে তুলো গুজে বাচ্চাদেরকে গান গাইতে শেখান??????? যেসব অনুষ্ঠানে এমন গান বাচ্চাদেরকে দিয়ে গাওয়ানো হয় সেসব অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের কে গান গাইতে পাঠিয়ে দিয়ে কি নিজেরদের কাছে নিজেরাই ছোটো হননা? জানিনা কার কাছে এই প্রশ্ন করবো?কোনো ব্লগার ভাই বোনেরা তাদের বাচ্চাদেরকে এইধরনের অনুষ্ঠানে পাঠিয়েছেন কিনা জানা নেই। জানা থাকলে তাদেরকে জিগগাসা করতাম।

বাবা মায়েদের কাছে আমার একটা অনুরোধ, বাচ্চাদের কে বাচ্চাদের মত থাকতে দিন, শিশুতোষ গান গুলো ওদের মনের বিকাশ ঘটায়। অনেক কিছু শিখতে সহায়তা করে। ছোটবেলায় স্বাধীনতা দিবস,বিজয় দিবস,একুশে ফেব্রুয়ারী, মে ডে, এসব অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে, নাচ করতে গিয়ে জেনে গিয়েছিলাম এসব দিনের তাৎপর্য। ইতিহাস গুলো খুব স হজেই জানা হয়ে গিয়েছিলো। শিশুদের নাচ গান অভিনয় শুধু সাময়িক বিনোদনের জন্যই নয়।

এসব তাদের পরবর্তী জীবনের চলার পথের পাথেয়ও। ছোটোদের জন্যও যে অনেক গান আছে যা ওরা গাইতে পারে তা যে সব বাবা মায়েরা জানেন না। তাদের জন্য যার জানা যত ছোটোদের গান আছে সবাইকে একলাইন করে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। বাকী টা আমি ট্রাই করবো মানে পুরো গানটা জানাতে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।