এটি কোনো কম্পিউটর এনিমেশন নয়। এটি হাবল টেলিস্কোপের ধারণকৃত ছবি। যতবার আমি ছবিগুলো দেখি, ততবারই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যাই। কত ক্ষুদ্র আমরা! আমাদের জ্ঞান কত সীমিত! কিন্তু আমি ভেবে অবাক হই, বেশিরভাগ মানুষই এই বিশালতা কে কিভাবে উপেক্ষা করে চলে। স্বল্প শিক্ষিতদের কথা বাদ দেই।
উচ্চ শিক্ষিতরাও এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায় না। ফুটবল, ক্রিকেট, শপিং, হিন্দী সিরিয়াল ও পলিটিক্স নিয়েই যেন আমাদের জীবন।
বিশাল মহাবিশ্বের একটি ক্ষুদ্রতম সৌরজতের, ক্ষুদ্রতম গ্রহের খুবই ক্ষুদ্রতম প্রাণী আমরা। এরপরও আমাদের কাছে আমাদের নিজদের গুরুত্ব অপার। নিজেদের প্রতি আমাদের ভালবাসাও অসীম।
কিন্তু এই প্রজাতির ভবিষ্যতের ভাবনা কেউ কি ভাবতে চাই? আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রায় সময়ই হতাশাই ভুগি। আমরা জীবনর উদ্দেশ্য খুঁজে পাই না। আমরা কি চাই জীবনে জানি না। আমরা স্বরনাপন্ন হই কবি, লেখকদের কাছে। অলিক, অবাস্তব ও কল্পনার মাঝে সুখ খোঁজার চেষ্টা করি।
কিন্তু সেসব দিয়ে আসলে কি আমরা নিজেদের পরিতৃপ্ত করতে পারি?
ছোট বেলাই আমাদের একটা খুবই ভালো গুন ছিল, সময়ের সাথে যেটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তা হলো, প্রশ্ন করার ক্ষমতা ও প্রবণতা। বড়দের প্রশ্নবানে জর্জরিত করাই ছিল যেনো আমাদের জন্য মজার খেলা। বড়দের থেকে পাওয়া কোনো উত্তরেই যেনো আমাদের মন ভরতো না। মনের ভেতর খেলা করতো হাজার হাজার প্রশ্ন।
কিন্তু নিজেরা বড় হবার সাথে সাথে সেই গুণের কথা ভুলে গেছি। নিজেকে নিজেরা বুঝিয়েছি, অহেতুক প্রশ্ন করা ঠিক না, সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না। এ যেন নতুন জীবন শুরু করার আগেই, হার মেনে নেয়া। নিজকে করে ফেলেছি আমরা ভীরু। কোন প্রশ্নের উত্তর আমাদের নাগালে, আর কোনটার উত্তর দুর্লোব্ভ্য তার পার্থক্যও এখন আর করতে পারি না।
অবাস্তব কল্পনার মাধ্যমে হয়তো আমরা সাময়িক শান্তি পেতে পারি। কিন্তু পরিপূর্ণতা কখনই পাবো না। ভেতর হতে আসা প্রশ্নগুলোকে চিৎকার করে আমরা দমিয়ে রাখতে পারি। কিন্তু আমৃত্যু সেই প্রশ্নগুলো আমাদের তাড়া করে ফিরবে। আমাদের জ্বিবস্মত্যিকে ধ্বংশ করবে তিলে তিলে।
একারনে আমার মনে হয়, এ সব প্রশ্নথেকে মুক্তির একটাই উপায় এগুলোর মুখমুখী হওয়া। প্রশ্ন-উত্তরের এই যুদ্ধে আমরা সবাই মিলে যদি অন্তত একটা প্রশ্ন সৈনিকেও দমন করতে পারি, তবে তা হবে আমাদের জন্য স্বার্থকতা, যা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের উপর সামান্য হলেও ভার লাঘব করবে। আর এভাবেই তো আমাদের এগুতে হবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপে।
কিন্তু ছোটবেলার সেই দুঃস্বাহসিক গুণকি আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবো? নাকি এই মহাবিশ্বের বিশালতার কাছে মাথা নত করে আমরা দিন শেষ হবার প্রতিক্ষায় থাকবো?
ছবিগুলো সংগ্রহিত নাসা ওয়েব সাইট হতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।