"প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, নিঃসন্দেহে সে হল সফল। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। " আল ইমরান,আয়াত ১৮৫ *** মডারেটরের প্রতি অনুরোধ রইল, আমার এই পোস্টটিকে সরিয়ে না ফেলার।
এই পোস্টে কাউকে কটাক্ষ করা হচ্ছে না, বরং মুসলমানদের জন্য কিছু ফিকহি মাসয়ালা শেখার সুযোগ রয়েছে।
প্রথমেই গতকালকের ঘটে যাওয়া ব্লগার থাবা বাবা হত্যা কান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করছি। কোন যৌক্তিক দাবীতে আন্দোলন করলে এবং তার সাথে মতে মিল না থাকলে তাকে মেরে ফেলতে হবে, সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় !! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী আস্তিক, নাস্তিক সকলেরই দাবী। আমিতো বলি, শুধু এই পাচ-ছয়জন কেন? একাত্তরের সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে হবে। শুধু পাচ-ছয় জনের ফাসী দিয়ে এই বিচার সমাপ্ত হলে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রইবে।
এখন প্রসংগ হল, ব্লগার থাবা বাবা একজন আত্মস্বীকৃত নাস্তিক ছিলেন। আল্লাহ এবং তার প্রেরিত রাসূল (সঃ) কে নিয়ে তার বেশ কিছু কুরুচীপূর্ণ লেখা তার মৃত্যুর পরে সামনে চলে এসেছে। এর আগে আমি ওনাকে চিনতামই না। যাহোক, ব্লগে বিভিন্ন ধরণের আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। তার নামাযে জানাযা নিয়েও কথা হচ্ছে।
আমাদের জানা প্রয়োজন, এ ব্যাপারে আল্লাহ এবং রাসূল(সঃ) এর সুন্নাহ কি।
যারা মুসলমান এবং আল্লাহর হুকুম এবং রাসূল(সঃ) এর সুন্নাহ মোতাবেক নিজের জীবনকে পরিচালনা করেন, তাদের একজন অবিশ্বাসী'র ব্যাপারে আল্লাহ এবং তার রাসূল(সঃ) নির্দেশনা মেনে চলতেই হবে, এখানে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই। নইলে আল্লাহর মনোনীত দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে। যেসব নাস্তিক ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন তাদের জন্য তো আর কিছু করার নেই, তবে যারা বেচে আছেন, তাদের হেদায়েতের জন্য আমরা সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
নাস্তিক ব্যক্তির জন্য দোয়া করা বা জানাযা নামাজ পড়ার ব্যাপারে islamqa সাইটে শাইখ মুহাম্মদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ এর দেয়া ফতোয়াটি আমি এখানে বংগানুবাদ করে তুলে দিচ্ছি আপনাদের সেবায়।
আশা করি এ ব্যাপারে মুসলমানগণ ভালভাবে অবগত হবেন এবং অনুধাবণ করবেন।
আলহামদুলিল্লাহ !
যদি কোন ব্যক্তি মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করে এবং পরে সে নাস্তিক হয়ে যায়, ইসলাম ধর্মে আর বিশ্বাস না করে এবং সে অবস্থায় তার মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে যে ব্যক্তি তার এই অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞাত, তার জন্য সেই নাস্তিক ব্যক্তির জানাযার নামাজে অংশগ্রহণ করা বা তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা বা তাকে গোসল দেয়া, কাফনের কাপড় পড়ানো এবং মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা জায়েজ নয়।
কারণ আল্লাহ বলেছেনঃ
مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُواْ أَن يَسْتَغْفِرُواْ لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُواْ أُوْلِي قُرْبَى مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী।
(সূরা তওবা, আয়াত ১১৩)
وَلاَ تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِّنْهُم مَّاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَىَ قَبْرِهِ إِنَّهُمْ كَفَرُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُواْ وَهُمْ فَاسِقُونَ
আর তাদের মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও নামায পড়বেন না এবং তার কবরে দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও।
বস্তুতঃ তারা না ফরমান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে।
(সূরা তওবা, আয়াত ৮৪)
মুসলিম শরীফের ৯৭৬ নাম্বার হাদীসে বর্ণিত আছে, হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন, "“আমি আল্লাহর কাছে আমার মায়ের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করার অনুমতি চেয়েছি কিন্তু তিনি তা দেননি। এবং আমি তার কাছে আমার মায়ের কবরের কাছে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছি, তিনি তা দিয়েছেন। “"
সুতরাং, এটা স্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি “শিরক” অথবা “কুফর” অবস্থায় মারা গেল, তার জন্য দোয়া করা কোন মুসলমানের জন্য জায়েজ হবে না।
এবং আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
=============================================
শেষ কথাঃ
একজন মৃত নাস্তিক বা অবিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে তার বিশ্বাসের প্রতিই কিন্তু অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হচ্ছে যেটা বেচে থাকলে তিনি নিজেই পছন্দ করতেন না। তাকে তার বিশ্বাস নিয়েই শান্তিতে থাকতে দিন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।