রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র
গডফাদার এর ছায়ায় নির্মিত ভারতীয় পলিটিক্যাল থ্রিলার সরকার এবং সরকার রাজ ছবিটা। সরকার ইংরেজি গডফাদার ছবির কনভার্সন হলেও সরকার রাজ এর নিজস্ব মৌলিক কাহিনী রয়েছে বৈকি! তারপরও এই ছবিদুটো নির্মাণে আমি অসাধারণ কিছু শৈল্পিক কারুকার্য, অভিনয় পারদর্শীতা, রাজনৈতিক ঘৃণ্য চক্রান্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লক্ষ্য করেছি এবং বলতে বাধ্য হচ্ছি- রামগোপাল ভার্মা একজন গুণী ভারতীয় চলচ্চিত্রনির্মাতা। খুন-খারাবি, ভয়ানক ঈর্ষা, ক্ষমতার লোভ, মস্তান ভাড়াটে গুণ্ডা পাণ্ডা, অবৈধ অস্ত্র, মাদকব্যবসা এ সবকিছু নিয়েই তথাকথিত 'গণতান্ত্রিক' রাজনীতি! আর সেই রাজনৈতিক খুন-খারাবি কী কারণে এবং কেন ঘটে সেটা সবারই জানা - ক্ষমতা দখলের লোভে। একজনকে খুন করে আরেকজন ক্ষমতা দখল করে। এভাবে পালাক্রমে চলতে থাকে মাতৃভূমি ধর্ষণ।
ঠিকই ধরেছেন, আমি বাংলাদেশ নিয়েই বলছি। বাংলাদেশের ধর্ষিত রাজনীতি নিয়েই বলছি।
আমরা, যারা কিশোর, একেবারেই নতুন প্রজন্ম, মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। তবে বংশে একজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন বলেই কিছুটা হলেও আগ্রহ বোধ করি। আজকাল প্রায়ই বলতে শোনা যায়, বিশেষত গতকাল ছিলো ১৫ আগস্ট, নতুন প্রজন্ম নাকি ৭ মার্চ এর ভাষণ বলতে জানে না, জানে না অনেক কিছু।
আমরা নাকি এক প্রকার অন্ধ! বক্তার কথা (সরকারী আমলা) শুনে মনে হলো, পালাক্রমে ইতিহাস ধর্ষণের ফলে তার ক্ষত-বিক্ষত শ্রোণিদেশে যেটুকু অবশিষ্ট থাকে, তাও যদি বদলে যেতে থাকে, তাহলে নতুন প্রজন্মের দোষ কী? দোষ তো আপনাদেরই! আপনারাই তো এক সরকার আসলে তার আন্ডারে চাকরি করেন, তাদের নিয়েই শুধু বলেন, আবার সরকার বদল হলে... একই কথা! পুরনো সব কথা উগড়ে দেন... আপনারা বয়সে বড় কিন্তু আচরণ শিশুদের চেয়ে কম নয়। আজ বিরোধীদলকে তিরস্কার করছেন কাল অথবা পরশু যখন সেই দল ক্ষমতায় আসবে তখন কী হবে? তখন তো দাবার ছক উল্টে যাবে। নতুন আরেক ইতিহাস রচিত হবে না?
আমার মনে হয়, একটা রাজনৈতিক দলের প্রকৃত আচরণ বোঝা যায় ক্ষমতায় আসার আগে, বিরোধী দলে থেকে যখন তারা ক্ষমতালাভের জন্য একের পর এক হরতাল, অবরোধ কর্মসূচী পালন করেন এবং সাধারণ জনগণের চরম দুর্গতি ডেকে আনেন। সেটাই তাদের আসল রূপ। এইদেশে সব রাজনৈতিক দলের চরিত্রই এক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগে বর্তমান সরকার তো তাই করেছিলো! তাহলে কী সবার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই এক?
বঙ্গবন্ধু মানেই আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি নয়, বঙ্গবন্ধু হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রদূত। আমরা, নতুন প্রজন্ম তাই মনে করি। আমাদের ঘৃণাবোধ সবার প্রতি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাকে এবং তাঁর পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তারপর অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেনি কেউই! ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও বিচারকার্য আলোর মুখ দেখেনি।
আর বিএনপি-জামাত জোট সরকার তো পুরনো ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ইতিহাসের চাকাই ঘুরিয়ে দিলেন! বঙ্গবন্ধুর চাইতে জিয়াউর রহমানকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে নিজেরা আরো একবার ইতিহাস বিকৃত করলেন। প্রয়াত জিয়াউর রহমানেরও অবদান রয়েছে বাংলার মুক্তিযুদ্ধে। তিনি যুদ্ধ করেছেন, জেড ফোর্সের প্রধান ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন... আজ মৃত দুই ব্যক্তিকে নিয়ে এই যে এত রশি টানাটানি, ব্যবসা প্রবৃত্তি... এগুলোই তো রাজনীতিবিমুখ করছে নতুন প্রজন্মকে! আমরা ইতিহাস কম জানি না কিন্তু বর্তমান অরাজনৈতিক, নামেমাত্র গণতান্ত্রিক কোন দলই পুরোপুরি শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুধু মুখে বললেই হবে না.... যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুধু মুখে বললেই হবে না.... করে দেখাতে হবে!
এ রাজনীতি প্রতিহিংসার... আগুন জ্বলে ওঠা ক্ষোভের!
শোক দিবসে এক দল শোকে মুহ্যমান... তারা টিভি চ্যানেলে ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন না... আরেক দল ৬৫ পাউন্ড ওজনের কেক কাটছেন! নেত্রীর জন্মদিন বলে কথা। একদল উকিল নোটিশ পাঠালেন ক্রোধে অন্ধ হয়ে... আরেকদল এর আইনজীবী গর্বের সাথে বললেন... আগেও এরকম করা হয়েছে।
আমরা এবারো নির্দোষ প্রমাণিত হবো!রাজনীতির নামে পরিবারতন্ত্র, নিজেদের পকেটে পয়সা ঢুকিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা... ধর্মের উল্টো ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করা... এসবই তো চলে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সমালোচনা করতে পছন্দ করেন না...একদল আরেকদলকে দায়ী করেন... অথচ আত্মসমালোচনাই কিন্তু শুদ্ধ করে মানুষকে! যতদিন পর্যন্ত দুই প্রধান রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবেন না, ততদিন এই ক্ষোভের রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি ধ্বংস করবে আমাদের। যদিও এটা হয়তো তাদের পক্ষে অসম্ভব!
MIRACLES
Which is a greater miracle?
Walking on water, or a drunkard sobering up?
Spontaneous remission of cancer, or a closed heart opening?
Living for a thousand years, or loving those that hurt you?
Turning lead into gold, or ordinary people becoming bodhisattvas?
The world as it could be, or this world as it is, as it was, as it shall be,
world without end
Amen
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।