আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বংগবন্ধু, তৎকালীন নেতৃত্ব ও আমাদের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি।

শরীরে শরীর নয়, ঠোঁটে ঠোঁট রাখাও নয়, মূহুর্তের ছোঁয়াও নয়, একটু দেখাতেই লিটার খানেক অগ্নিজলের ঘোর।

আজ তাকে নির্মমভাবে হত্যা ও নির্বংশ করার দিন। আজকে মনে পড়ছে তাঁকে। আমার কিশোর ও নবীন যৌবনে ৩ বার তাকে দেখার ও ১বার তাঁর সাথে পনেরো মিনিট একান্তে কাটানোর বিরল সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। ফেব্রুয়ারী'৭২ মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পথে কিছু সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি করেছিলেন তিনি দিল্লীতে।

ইন্দিরার সাথে সৌজন্যমুলক আলাপচারিতার মাঝেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভারতীয় সৈন্যেরা কবে বাংলাদেশের মাটি ছাড়বে। ফলশ্রুতিতে নজীরবিহীন কম সময়ের মধ্যে ভারতীয় সৈন্যেরা বাংলাদেশ ত্যাগ করে (২য় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত অক্ষ শক্তির কিছু দেশে মিত্র বাহিনীর সৈন্যেরা এখনো রয়ে গেছে)। আমার স্বল্প বুদ্ধিতে এটাই সফল নেতৃত্ব, সবল ব্যত্ত্বিত্ব আর প্রবল দেশপ্রেম। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী তাজুদ্দিন আহমদ যখন ভারতীয় সরকারের সাহায্য চাইতেন, কখনো তিনি টাকা পয়সা চাইতেননা। চাইতেন অস্ত্র, গোলাবারুদ, প্রশিক্ষন।

তাজুদ্দিন আহমদ ভারতের মাটিতে পা ফেলার আগেই জানতে চেয়েছিলেন যে তাকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ভারত গ্রহন করবে কি না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন তিনি অর্থমন্ত্রী তখন বিশ্ব ব্যাংকের বিধাতা রবার্ট ম্যাকনামারা (সদ্য প্রয়াত, ভিয়েতনাম যুদ্ধের গণহত্যার পেছনে যার অবদান সর্বজন বিদিত)বাংলাদেশ সফরে আসেন । মুক্তিযুদ্ধে ম্যাকনামারার নেতিবাচক ভুমিকার জন্যে তাজুদ্দিন তাকে বিমান বন্দর থেকে আনার জন্য escort দিতে অস্বীকার করেন। ______________________________________ এশিয়ান হাইওয়ে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে যাবার তিনটা প্রস্তাবিত পথ(route) আছে, যে দুটি ভারত থেকে ঢুকে ভারতেই আবার চলে গেছে সে দুটিকেই আমাদের সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করেছে। এশিয়ান হাইওয়ের মাধ্যমে নানা দেশের সাথে আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধিই যদি উদ্দ্যেশ্য হয়ে থাকে তাহলে ৩য় পথ যেটা ভারত থেকে ঢুকে মিয়ানমারে বেরিয়ে গেছে সেটাই কি আমাদের স্বার্থের অনুকূল হ'তনা? পলিমাটি কৃষি জমির উর্বরতা এবং হাওরের জলজ প্রাণীর খাদ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

টিপাইমুখ বাঁধ দিলে উজানের এই পলিমাটি যে বাঁধ উৎরাতে পারবেনা এবং তার জন্যে বাংলাদেশের বিশাল এলাকার ফসল ও মৎস সম্পদ প্রচন্দভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে তা বুঝতে কোন প্রখর বুদ্ধি বা বিশেষ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার কোন প্রয়োজন পারেনা। ভারত এখন যা যা বলছে তার ১০০%ও যদি সত্যি হ্য়, যদি প্রতিটি আশ্বাসও তারা রক্ষা করে তবুও আমাদের দেশের বিশাল একটা অংশের খাদ্য উৎপাদন প্রচন্ডভাবে ব্যাহত হবে। আমাদের সংসদীয় প্রতিনিধিরা ভারত সফর করে এসে তা ঠিক বুঝতে পারছেন না কেমন যেন জড়বুদ্ধি হয়ে পড়েছেন। বিডিআর হত্যাকান্ডের পর সংগঠনটি স্বভাবতই দূবর্ল হয়ে পড়েছে। আর সেই সুযোগে পাখীর মত আমাদের নিরীহ জনগনকে বিএস এফ হত্যা করে চলেছে।

আমার ধারনা যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে তারা মানবেতর কোন প্রানী তাই আজ পর্যন্ত সরকারীভাবে কোন প্রতিবাদ করা হয়নি এর। ভারতীয় রাস্ট্রদূত পিনাক সম্ভবত বাংলাদেশকে ভারতের করদ রাজ্য বলে মনে করে। তার ক্রমাগত ঔদ্ধত্তপুর্ণ আচরনের কোন নজীর আমাদের দেশে নেই। আর তাই সারমেয় সুলভ আচরনের জন্য আজ পর্যন্ত তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে ডেকে পাঠানো হয়নি। দীপুমনি একবার শুধু বলেছিলেন যে পিনাক সম্ভবত: কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন করেছেন।

পরদিনই আরেক মন্ত্রী মহোদয় (২য় প্রজন্ম) বিবৃতি দিলেন পিনাক শিষ্টাচার লংঘন করেনি। দীপুমনি চেপে গেলেন। ফলশ্রুতিতে পুরষ্কৃত হলেন দুজনই। এই যদি হয় আমাদের পররাষ্ট্র নীতি তা হ'লে স্বভাবত:ই প্রশ্ন আসে এদেশের আধিকাংশ মানুষ ভালোবেসে, ভরসা করে এ সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে। এদেশের স্বার্থ দেখার কথা এ সরকারের ছাড়া আর কার ?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.