আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত ও মিয়ানমারের দাবি স্বীকৃত হলে বিরাট সমুদ্রসীমা হারাবে বাংলাদেশ

ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই তোমার সীমানায়

প্রতিবেশী দেশগুলো তৎপর হলেও সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় সমুদ্রসীমার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে বসেছে বাংলাদেশ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট নাগরিক এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 'বাংলাদেশের সামুদ্রিক অঞ্চল ও সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি' আয়োজিত ওই সম্মেলনে বক্তারা বলেন, খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য বঙ্গোপসাগরের মোটামুটি সব ব্লকই ভারত ও মিয়ানমারের 'দখলে' চলে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের দাবি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নির্ধারিত ২৮টি ব্লকের অধিকাংশই বাংলাদেশকে হারাতে হবে। জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী মিয়ানমার ও ভারতের দাবি ঠিক নয় মন্তব্য করে এতে বলা হয়, সমুদ্রসীমার ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারকেও আরো উদ্যোগী হতে হবে।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "আমরা গভীর বিপদে আছি। তেল-গ্যাস, সমুদ্রবন্দর ও টিপাইমুখ নিয়ে সমস্যা আছে। আবার সমুদ্রসীমার ওপরও অধিকার হারাচ্ছি। " তিনি বলেন, " ভারত ও মিয়ানমার তাদের সমুদ্রসীমানা তৈরি করেছে, অথচ আমাদের সরকার আসে আর যায়। " এক্ষেত্রে বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে 'উদাসীন' আখ্যায়িত করে তারও সমালোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ অধ্যাপক।

এ নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে জনমত তৈরি করার তাগিদ দেন তিনি। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, "স্বাধীনতার পর আমাদের সরকারগুলো সার্বভৌমত্ব ও সমুদ্রসীমা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেনি। এ সুযোগে ভারত আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। "২০০১ সালের পর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়ে কোনও উদ্যোগ দেখিনি। এ জন্য একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হলেও এ যাবত তাদের কোনও বৈঠক হয়নি।

সমুদ্রসীমার বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও কোনও নজর ছিল না। " অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পানি বিশেষজ্ঞ ড. ইনামুল হক, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান প্রমুখ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এ অধ্যাপক বলেন, "ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে মিয়ানমার তাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করছে। আর ভারত তাদের নিজেদের কাজ তো করছেই। উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশের আয়তনের চেয়ে তিনগুণ এলাকা ভারত ও মিয়ানমারের কর্তৃত্বে চলে যাবে।

" সমুদ্রসীমা রক্ষায় তৎপর হওয়ার জন্য আনু মুহাম্মদ সরকারের প্রতি তাগিদ দেন। এক্ষেত্রে আইন সংশোধনের পরামর্শ দেন বিচাপরতি গোলাম রব্বানী। তিনি বলেন, "সমুদ্রসীমা নির্ধারণে ১৯৭৪ সালে যে আইন করা হয়েছিল তা ত্র"টিযুক্ত। এটি সংশোধন করতে হবে। " 'বাংলাদেশের সামুদ্রিক অঞ্চল ও সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি'র আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ বলেন, "ভারত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিরাট অংশ এবং মহীসোপানের পুরোটাই তাদের সমুদ্রসীমা বলে দাবি করেছে।

আমরা এর প্রতিবাদ করছি। " ভারতের এই দাবির সঙ্গে পাল্লা দিতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে নূর মোহাম্মদ বলেন, "বিষয়টি সহজসাধ্য নয়। আর আমাদের এ সংক্রান্ত কোনও প্রতিষ্ঠানও নেই। সমুদ্র নিয়ে একটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তৈরি করা দরকার। তা না হলে কমপক্ষে একটি অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।

" তিনি বলেন, "ভারত ও মিয়ানমার যেভাবে দাবি করেছে, তাতে বাংলাদেশে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য যে ২৮টি ব্লক নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করেছিল, মোটামুটিভাবে তার একটিও পাবে না। খুব বেশি হলে ২/৩ টি পেতে পারে। আর গভীর সমুদ্রে কোনও কর্তৃত্বই থাকবে না। " তথ্যসূত্রঃ bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.