জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখতে চাই। গতানুগতিকতার গন্ডি থেকে মুক্তি চাই। এতে হয়তো শুনতে হবে অনেক অপমানের বাণী। ভয় করি না।
পা ঘামা নিয়ে অনেকেই নানা রকম সমস্যায় পড়ে থাকেন, অনেকে এটাকেই রোগ ভেবে ভুলও করে থাকেন।
ভুলটা ভাঙালেন হলিফ্যামিলি হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম।
তিনি জানান, পা ঘামা কোনো রোগ নয় বরং এ থেকে নানা ধরনের রোগের উদ্ভব ঘটে থাকে। অনেকের শুষ্ক আবহাওয়ায় পা ঘামে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে বছরজুড়ে। এ কারণেই পায়ে দুর্গন্ধ হয়। তার মুখ থেকেই জেনে নেওযা যাক পা ঘামার প্রধান কারণগুলো।
পায়ে যখন দুর্গন্ধ
ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম জানান, পায়ের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ ভেজা পা। জুতা পায়ে পরার সময় অনেকের পা অনেক সময়ই ভেজা থাকে।
যার কারণে এতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর যে কারণে পা থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জুতার ভেতর থেকে পায়ের ঘাম বেরোতে পারে না।
অনেকক্ষণ এমন অবস্থায় থাকার ফলে পা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। পা থেকে অতিরিক্ত ঘাম বেরোয় এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
পানির নানা ধরনের সমস্যা বা শারীরিক নানা সমস্যায় পায়ে চর্মরোগ দেখা যায়। এবং এসব রোগের চিকিৎসা না করায় পায়ের চামড়ার ওপরের স্তর থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
আবার কখনো এমনও হয়, গন্ধ হওয়ার ভয়ে অনেকে জুতাই পরেন না।
তবুও গন্ধ ছড়ায় পা দিয়ে। এর প্রধান কারণ, পা দিয়ে ভালোভাবে ঘাম বেরোতে পারে না। আবার ঘাম বেরোতে পারলেও জুতা বা স্যান্ডেলের শোষণ করে নেওয়ার মতা কম।
জুতাটা যেমন...
জুতায় দুর্গন্ধ হওয়ার নানা কারণ রয়েছে। এর পুরো ব্যাপারটি অনেকটাই নির্ভর করে জুতো তৈরির ওপর।
এ বিষয়টির কথা বললেন বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজির ফোরম্যান আবদুল্লাহ আর মাহমুদ। তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে যেসব জুতা খেলাধুলা আর সারা দিনের প্রয়োজনে ব্যবহার হয়, সেসবই দুর্গন্ধ হয় বেশি।
এসব জুতার বেশির ভাগ কাপড় এবং এমন কোনো উপাদান দিয়ে তৈরি, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে না। কাপড়ের জুতা সেলুলোজ ফাইবার দিয়ে তৈরি হয়। এর সোলও হয় অনেকটা অনুন্নত ধরনের।
ফলে পা থেকে যে ঘাম বেরোয় তা শোষণ হতে পারে না। অন্যদিকে চামড়ার তৈরি জুতা প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি, এর ভেতর দিয়ে খুব সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে দুর্গন্ধ হয় না। আবার জুতা না পরার পরও যাদের দুর্গন্ধ হয়, তাদের ক্ষেত্রে হালকা স্যান্ডেল ব্যবহার করাই ভালো।
কী করব
পা ঘামার সমস্যা নিয়ে জানান রূপসজ্জাকর শিব্বির হক।
তিনি জানান, পা সব সময় পরিষ্কার রাখা উচিত। বাইরে থেকে ফিরে হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রেখে যেকোনো ধরনের শ্যাম্পু ৫ মিলিগ্রাম গুলে ফেনা তুলে ঘষে ঘষে পা পরিষ্কার করুন। এরপর তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে পা মুছতে হবে।
চামড়ার জুতায় গন্ধ ছড়ায় না। জুতা কেনার আগে এর শুকতলাটা দেখে নেবেন যেন তা ভালো হয়।
জুতার এই অংশই ঘাম টেনে নেয়। অনেকটা সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাপড়ের জুতা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। মোজা কেনার ক্ষেত্রে দেখে নিন যেন তা সুতির তৈরি হয়, প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য কয়েক জোড়া মোজা রাখুন। একদিন ব্যবহারের পর তা ধুয়ে ফেলুন।
অতিরিক্ত ঘামে...
যাদের পা ঘামে মাত্রাতিরিক্ত এবং গন্ধও ছড়ায় তারা পায়ের জন্য ফ্রেড লোশন লাগাতে পারেন।
জুতা পরার এক ঘন্টা আগে এটি পায়ে মাখতে হবে। এরপর জুতা পরুন।
একটুখানি...
১. পা সব সময় শুকনো রাখার চেষ্টা করুন।
২. জুতা এবং মোজা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
৩. চর্মরোগে অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুন।
৪. ভালো মানের জুতা ব্যবহার করুন।
৫. ঘাম রোধে ওষুধ ও ফুটবাথ নিন।
৬. জুতায় দুর্গন্ধ রোধে ইনসোলের নিচে দুটি করে ইউক্যালিপটাস পাতা বা দুই টুকরো মেনথলও রাখতে পারেন। এতে দুর্গন্ধ কমে যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।