আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভীমরতি : মহাভারতের গল্প -যা মহাভারতে নাই (অকস্মাৎ প্রাপ্ত)



লোকে স্বপ্নে পায় । আমি পাইলাম অকস্মাৎ । তাও আবার যেনতেন বিষয় নয় । মহাভারতের মহাপ্রস্থানের পঞ্চ নায়কদের একজন সম্পর্কে অতীব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য । হাজার হাজার বছর ধরে লোকক্ষুর অন্তরালে থেকে যাওয়া বিষয়টি কিভাবে আমার দৃষ্টিতে এল সে এক গবেষণার বিষয় ।

আমি যেভাবে বিষয়টি প্রাপ্ত হলাম তাতে আমার দিব্যচক্ষু সম্পর্কে লোকে সন্দেহ করতে পারে । ভাবতে পারে আমার নিশ্চয়ই দিব্যচক্ষু আছে । আমি নিশ্চয়ই অদৃশ্যের ভেদ সম্পর্কে জানি । তা নাহলে এত প্রাচীন একটা বিষয় এত রথী-মহারথী থাকতে আমার কাছেই ধরা দেবে কেন ? ব্লগে যারা মোল্লা আছেন- তারা কাশফ বলে একটা জিনিসের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানেন । ভাবতে পারেন আমার কাশফ খুলে গেছে ।

অথবা এমনও ভাবতে পারেন যে, নিশ্চয়ই বিষয়টা আমি এলহামের মাধ্যমে জানতে পেরেছি । তা নাহলে আমি কেন ? পঞ্চ পান্ডবের একজন সম্পর্কে এত স্পর্শকাতর একটা তথ্য শুধু আমার অন্তরেই কেন উদয় হল ? বিষয়টা একটু খোলাসা করি । আপনারা নিশ্চয়ই কুন্তীর (পঞ্চপান্ডবের মা) প্রথম সন্তান অর্থাৎ প্রথম পার্থ অর্থাৎ কর্ণ সম্পর্কে জানেন ! না আমি কর্ণ সম্পর্কে কিছু প্রাপ্ত হইনি । আমি প্রথম পান্ডব অর্থাৎ যুধিষ্ঠির সম্পর্কেও কিছু জানতে পারিনি । আমি জানতে পেরেছি দ্বিতীয় পান্ডব অর্থাৎ ভীম সম্পর্কে ।

কী জানতে পেরেছি ? আসুন এবার তা-ই আলোচনা করি ... আজ আমি আমার এক কলিগকে বললাম আপনাকে কেমন চেনা চেনা লাগছে । ব্যাপার কি ? আপনি কি আমার পরিচিত ? তিনি হাসলেন । আমি আবারও বললাম, আমাদের অফিসে এক কলিগ আছে । তাকে আমরা বাশার ভাই বলে জানি । আপনাকে হুবহু তার মতই লাগছে ।

আপনি কি তার আত্মীয় ? (বলাবাহুল্য, এ কথা আমি বাশারকেই বলছিলাম) তিনি আমাকে বললেন, ভীমরতি হইলেই কি এমন হয় ? আমি ততোধিক অবাক হয়ে বললাম, ভীমরতি হলে কি দুইজনের চেহারা একই রকম হয় ? এবারও তিনি হাসলেন । এমনই এক পরিস্থিতিতে, বিশ্বাস করুন, ঠিক এমনই এক সময়ে হাজার বছরের অধরা জ্ঞানটি আমার কাছে ধরা দিল । আমি ততোধিক অবাক হয়ে তাকে প্রশ্ন করলাম আপনি কি ভীমের রতি শক্তির কথা বলছেন ? মাই গড ! ভীমের এই শক্তি সম্পর্কে তো মহাভারতে কিছুই বলা হয় নাই ! যতটুকু বলা আছে তাতে এতটুকু বুঝা যায় তার মাত্র তিনজন স্ত্রী ছিল (একজন আবার পাঁচজনের) । এবং দ্রৌপদীর গর্ভে তার সুতসোম আর হিড়িম্বার গর্ভে ঘটোৎকচ নামে দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয় । অথচ আপনারা জানেন, ছোটবেলায় একা ভীম কিভাবে দুর্যোধনের একশত ভাইকে একাই নাজেহাল করে ছাড়ত ! ভীম না থাকলে পান্ডবরা ছোটবেলায়ই কৌরবদের মার খেয়ে মরে ভুত হয়ে যেত ।

অথচ মহাভারতে বীর বানানো হয়েছে অর্জুনকে । এটা কি ভীমের প্রতি অন্যায় ? নাকি মহাভারতে বলা হয়নাই এমন কোন কারণে ভীমকে আসল বীর বলা হয় নাই ? একটি সাম্প্রতিক চরিত্রের সাথে ভীম চরিত্রের মিলঃ- মারিয়ো পুজোর গডফাদারের কথা মনে আছে ? বড় ছেলে সনি কর্লিয়নি শুধুমাত্র সেক্সুয়াল বিহেভিয়ারের কারণে বীর হতে পারেনি । বীর হয়েছে এই ব্যাপারে রণশীল গডফাদার স্বয়ং এবং ছোট ছেলে মাইকেল । মেজ ছেলে ফ্রেডিও একই কারণে বীর হতে পারেনি । অর্থাৎ- গ্রন্থকারদের প্রবণতা হলো এই শক্তিতে শক্তিবানদেরকে কেন্দ্রীয় বীরের অভিধায় আনা যাবেনা ।

যদিনা তা এই শক্তির কোন গ্রন্থ হয় । এই একই প্রবণতার কারণেই কি ভীম বীর হিসেবে অর্জুন এবং কর্ণ থেকেও নিম্নস্তরের ? তাহলে ভীম কি এ জাতীয় শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে এমন কিছু করেছিল যার কারণে ভীমরতি শব্দটি আজো মাথানষ্ট বা মনোবৈকল্যের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ? আমার ধারনা ভীমের ওই শক্তির সাথে এই শব্দটির সম্পর্ক না থেকে যায়ই না । যদিও ফরহাদ খান সাহেব তার বাংলা শব্দের উৎস অভিধান বইতে বলেছেন এই শব্দের সাথে মহাভারতের ভীমের কোন সম্পর্ক নেই । তবু আমি নিশ্চিত- সম্পর্ক আছে , নইলে মহাভারতের মহাবীর একমাত্র ভীমকেই মানাতো ।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৪ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.