রাজধানীর বকশিবাজার এলাকায় সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা এ মমালার কার্যক্রম চলছে।
সোমবার সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শুরু করেন এ মামলার আসামি বিএনপির নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর আইনজীবীরা।
প্রথমে খন্দকার মাহাবুব হোসেন তদন্ত কর্মকর্তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পরে তাকে জেরা করেন অপর দুই আইনজীবী মো. শাজাহান ও আমিনুল ইসলাম।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া ও মওদুদ আহমদ এবং অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীনও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের হাতে বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় বিদ্রোহের বিচার বিডিআর আদালতে হলেও হত্যা-লুণ্ঠনের বিচার চলছে প্রচলিত আইনে।
হত্যা-লুণ্ঠনের মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৮২৪ জন। এর মধ্যে নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুসহ ২৩ জন বেসামরিক ব্যক্তিও রয়েছেন। বিশাল এ সংখ্যার আসামিদের একত্রে বিচারের জন্যই আলিয়া মাদ্রাসা ও কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে বসানো হয়েছে অস্থায়ী এ আদালত।
পিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনিসুল হক এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে বলেছিলেন, “আসামি পিন্টু বিদ্রোহের ঘটনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি আসামিদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন। ”
সোমবার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষে পিন্টুর আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই পিন্টুকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
“সরকার ইচ্ছা করলে পিলখানায় অ্যাকশনে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারত, তাতে এতো হতাহতেরর ঘটনা ঘটতো না। সরকার কেন সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেনি তা রহস্যজনক।
”
এর আগে গত ২২ এপ্রিল এ মামলায় নিজের জবানবন্দি উপস্থাপন করেন আবদুল কাহহার আকন্দ।
তিনি সেদিন বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ৬২ স্থানে হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন চালিয়েছিল বিদ্রোহী জওয়ানরা।
এসব স্থানে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা, গণকবর, লাশ গুম, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ঘটানো হয় বলেও বিচারক জহুরুল হককে জানান কাহহার আকন্দ।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১ হাজার ৩৪৫ জনকে সাক্ষী করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৬৫৪ জনের সাক্ষ্য ও জেরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।
এরপর নিয়ম অনুযায়ী আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য ও অভিযোগগুলো পড়ে শুনিয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে- তারা দোষী না নির্দেষ। কেউ কোনো সাফাই সাক্ষীর কথা বললে আদালত তার বক্তব্য শুনবে এবং রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ পাবে।
পিলখানায় রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুনর্গঠন করা হয়েছে। এ বাহিনীর নাম বদলে করা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।