পিলখানায় ইতিহাসের নিন্দিততম হত্যাকান্ডের পর সেনাবাহিনী এদেশের আপামর জনগণের সমবেদনা ও সহানুভূতি পেয়েছে। আমরা দেখেছি কি গভীর মমতা নিয়ে মানুষ স্বউদ্যোগে কালোব্যাজ পরে, পিলখানায় নিহতদের স্বরণে ফুল দিয়ে, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে পালন করেছে রাষ্ট্রীয় শোক।
সাধারণ জনগণ সবসময়ই চারিত্রিকভাবে নির্যাতিত মানুষের সপক্ষে। তাইতো বিডিআর বিদ্রোহের প্রাথমিক পর্যায়ে যখন তাদের বঞ্চনা আর ন্যায্য দাবীর কথা শোনা যাচ্ছিল তখন তাদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষেরও সগর্ব উচ্চারণ শোনা যাচ্ছিল আশেপাশে, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে বদলে যায় সকল নৃশংসতা সামনে আসার পর।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শোনা যাচ্ছে পিলখানায় স্ক্রিনিং এর সময় জওয়ানদের অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া কিংবা আত্মহত্যার খবর।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নানাবিধ গৌরবের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারের বিচ্ছিন্নভাবে তাদের সশস্ত্র শক্তির কাছে নিরস্ত্র বহু মানুষের অমানবিকভাবে অত্যাচারিত হবার বা ক্যাম্পে হার্ট এ্যাটাকের কাহিনী আমাদের অজানা নয়। সেনাবাহিনীর ভাষায় অনেকের ব্লাডি সিভিলিয়ন হওয়ার অপরাধের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তাছাড়া সহকর্মীর মৃত্যুর প্রতিশোধ স্পৃহাও অমূলক নয়। তাই বিডিআর জওয়ানদের এহেন মৃত্যু আমাদের দু:শ্চিন্তাগ্রস্থ করে। অপরাধীদের সমুচিত শাস্তি সবারই কাম্য কিন্তু অবশ্যই তা যথাযথ বিচার আর নিয়মের মধ্য দিয়ে এবং সভ্য হিসাবে অবশ্যই প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে নয়।
বহুপ্রাচীনকাল থেকেই স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের তত্ত্ব হিসাবে বলা হয়, শত অপরাধী পেরিয়ে যাক কিন্তু একজনও নিরপরাধী যেন শাস্তি না পায়। পিলখানার অভ্যন্তরে তথাকথিত অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া বা আত্মহত্যার ঘটনাবৃদ্ধি নিরপরাধীর শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনাকে অনেক বেশি জাগিয়ে দেয়। আমাদের মনে রাখা দরকার নিহত নিরপরাধ সেনাকর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তানের কষ্টের চেয়ে নিহত নিরপরাধ বিডিআর জওয়ানদের স্ত্রী-সন্তানের কষ্ট কোন অংশে কম নয়। তাই সেনাবাহিনীর অনেক অগ্রহনযোগ্য কার্যকলাপ ভুলে বতর্মান সময়ে আপামর জনগণ তাদের প্রতি যে সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছে তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ও বিদ্রোহের ঘটনার দিন সেনাবাহিনীর প্রদর্শিত প্রশংসনীয় সংযমের ধারাবহিকতায় নূন্যতম মানবাধিকার রক্ষা করে ও নিয়মসিদ্ধ উপায়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরকে নিরপরাধীর শাস্তি এড়িয়ে তদন্তসহ যাবতীয় কাজ পরিচালনার আহ্বান জানাচ্ছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।