আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজের হাতে নিজেই বাঁধা, ঘরে আঁধার বাইরে আঁধার - [কথোপকথন- ৪]

মুক্ত কর ভয়/ আপনা মাঝে শক্তি ধর/ নিজেরে কর জয়।

ঠাসসস!! - কি হল এটা?? তুমি ওরে মারলা কেন? : বেশ করেছি, মেরেছি। এমন করে ক্যান? - কি করেছে? : কি করেছে দেখো না? এতক্ষণ টেম্পু ছাড়েনাই। এতক্ষণ কোন কথা নাই। এখন ছাড়তেছে, এখন ডেকে ডেকে এত কথা ক্যান? = থাক দিদি।

ঠিকই করছে বাবন। আপনি ওরে বইকেন না। - না বকবো না। এত বড় একটা মেয়ের গায়ে এখন হাত তুলবে? (আমার দিকে ফিরে..) - বেশি বড় হয়ে গেছো? ৭ দিনের ছোট হওয়ার পরও তোমারে দাদা দাদা বলে, তাই বেশি বড় হয়ে গেছো? : তো?? আরেকটা মারা উচিত ছিল। - দেব তোমাকে একটা চড়!! : এ্যাহ!! (মার খেয়ে বোনটি আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে।

তার মাঝে চলতে থাকে আমাদের বাকবিতন্ডা। আমি- মা- বোনের মা) - শোন। এখন তুমি ওরে মারলা না?? একদিন তুমিই সবচেয়ে বেশি কাঁদবা ওর জন্য। : উহু!! জীবনেও না। - হ্যাঁ।

ওর যেদিন বিয়ে হবে, সেদিন আর সবার চেয়ে তুমিই বেশি কাঁদবা। (আমি চুপ হয়ে যাই। সারা রাস্তা আর একটা কথাও মুখ থেকে বের হয়না। ) পাঁচ বছর পরের কথা। শীতকাল।

আমার ক্লাস শেষ। ২ সপ্তাহের মাথায় পরীক্ষা। পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দিয়েছে। আমার সেই বোনটির বিয়ে। যাওয়া অবশ্য কর্তব্য্।

গায়ে হলুদের রাতে আর সবার মত আমিও মজা করলাম। সারারাত জেগে গান হল। একজনের গায়ে আরেকজনের হলুদ মাখামাখি। পরদিন গিয়ে বোনের বরের বাড়ি গিয়ে বরকে নিয়ে আসলাম। এরপর, গেইট ধরা, বরের সাথে ফাইজলামি।

সবই হল। রাত প্রায় ১টার দিকে বর পক্ষের কয়েকজন শহরে চলে আসবে। আমিও তাদের সাথে চলে যাব, আমার আর থাকা সম্ভব না। রওয়ানা হব। হঠাৎ বিয়ের আসরে চোখ পরল।

বোনটি অপলক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কাছে গিয়ে বল্লাম, "যাই। " বলতে বলতে বেকুবের মত কেঁদে ফেল্লাম। বোনকে জড়িয়ে ধরে ভাই-বোন মিলে ভেউ-ভেউ কান্না। হুট করে উঠে এক দৌড়ে গাড়িতে।

এরপর, মা এসে ব্যাগ তুলে দিল। আমি বরপক্ষদের সাথে চলে এলাম। সারাপথ একটা কথাও না। পরদিন সকালে বাস। ঢাকায় আসব।

সারারাত জেগে থাকলাম। ঘুমই আসল না। কত চিন্তা, কত স্মৃতি। পিঠাপিঠি ভাইবোন। আমি গ্রামে গেলেই আমাদের কতদিন মারামারি।

আমাদের বোন নেই। তবু, কেউ জানতে চাইলেই বলি, দুই ভাই, তিন বোন। মায়ের কথাটাই বারবার ঘুরে-ফিরে আসছিল.. "তুমিই ওর জন্য সবচেয়ে বেশি কাঁদবা। ' পরিশিষ্ট: ১. সেই বোনটি এখন মা। আমার ভাগিনা অর্ঘ্য।

২.নীল দর্পনের সাথে একটা বেশ ভাল সম্পর্ক আছে ব্লগে। সে তার একটা পোস্টে লিখেছিল, আমাদের মিস করে। তখন বলেছিলাম, তোমার তো ভাই আছে। তাই, ভাই-বোন নিয়ে একটা গল্প-কথন লিখে দেব। আমার অন্যান্য গল্পকথনের মত সত্য ঘটনার সাথে একটু এদিক-ওদিক করে লিখতে গিয়ে মনে হল, হচ্ছে না।

তারচেয়ে চরিত্রগুলোর নাম বদল না করে নিজের কথাই বলি। তাই এই লেখা। এই লেখাটা নীল-দর্পনকে উৎসর্গ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.